অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ সোমবার নিশ্চিত করেছে, সিডনির বন্ডি বিচে ১০ মিনিটের সেই সন্ত্রাসী হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বন্দুকবাজ দু’জন সম্পর্কে পিতা ও পুত্র। সিবিএস নিউজের একটি প্রতিবেদনে মার্কিন গোয়েন্দা আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত হামলাকারীদের মধ্যে একজন পাকিস্তানের নাগরিক। নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার ম্যাল ল্যানিয়ন জানান, রাতারাতি তদন্তে দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত যে এই হামলায় কেবল দু’জন হামলাকারীই জড়িত ছিল। তিনি বলেন, “ সোমবারের ঘটনায় দু’জন অপরাধীই জড়িত ছিল বলে আমরা নিশ্চিত।”
advertisement
পুলিশের মতে, অভিযুক্ত হামলাকারীদের একজনকে ঘটনাস্থলেই পুলিশ গুলি করে হত্যা করে, দ্বিতীয় অভিযুক্ত সন্দেহভাজন আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলেও স্থিতিশীল। নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার ম্যাল ল্যানিয়ন জানান, বন্দুকবাজ বাবা সাজিদ আক্রম (৫০)। তার নামে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। তার সঙ্গে ছিল ২৪ বছরের ছেলে নবিদ। সৈকতেই পুলিশের গুলিতে সাজিদের মৃত্যু হয়েছে। নবিদ গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় সিডনির বন্ডি বিচে অনুষ্ঠিত “চানুকাহ বাই দ্য সি” নামে ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানে এলোপাথারি গুলি চলে, ঘটনায় অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হনুক্কা উৎসবের সূচনা উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল।
কর্মকর্তাদের মতে, এই হামলায় ৪০ জন জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে দু’জন পুলিশ আধিকারিকও রয়েছেন। চোট গুরুতর হলেও তাঁদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। বন্ডি সৈকতের ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলার তকমা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বন্ডি সৈকতের উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। সৈকতের একটি অংশে উৎসব চলছিল। আচমকা সেখানে বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়ে দু’জন আততায়ী। চলতে থাকে এলোপাথাড়ি গুলি। লুটিয়ে পড়েন মহিলা, শিশু থেকে বয়স্করা। নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১০ থেকে ৮৭ বছর বয়সিরা রয়েছেন।
কী কারণে হামলা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা রাতারাতি সিডনির বনিরিগ ও ক্যাম্পসি উপশহরের দুটি ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান চালায়। ল্যানিয়ন জানান, প্রৌঢ় সন্দেহভাজন সাজিদ আক্রমের বন্দুকের লাইসেন্স ছিল। আইনগতভাবেই তার কাছে একাধিক অস্ত্র ছিল। ল্যানিয়ন আরও বলেন, হামলার পর এবং পরবর্তী পুলিশ অভিযানে মোট ছ’টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “গতকাল ঘটনাস্থল থেকে আমরা ছ’টি আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছি। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলির লাইসেন্স মৃত সন্দেহভাজনের নামে ছিল কি না, এবং সেগুলিই বন্ডি বিচের হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত করতে ফরেনসিক ও ব্যালিস্টিক পরীক্ষা চলছে।
