মন্ডপের বাহিরে মায়ের অজস্র আঁচল, যে আঁচলের ছায়ায় থেকে একজন শিশুর বেড়ে ওঠা। মন্দিরের অন্দর কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে এই মন্ডপে, প্রথমেই প্রবেশ করলে দেখা মিলবে এক গর্ভধারনী মা বসে রয়েছে ঠিক তার উপরে একটি শিশু সেই শিশু মাতৃ দুধ এবং ফিডারে মুখ দিয়ে বেড়ে ওঠা তারপর শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে ছেলের কর্মজীবনে প্রবেশ করা। কর্মজীবনকে যাঁতা কলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, বিভিন্ন প্রফেশনে যুক্ত হওয়া দেওয়ালে তাক দেয়া রয়েছে বিভিন্ন ইউনিফর্ম। তারপর কর্মজীবনে প্রবেশ, সেই কর্মজীবনে ছেলের মনোনিবেশের পর একটু একটু করে মাকে ভুলে যাওয়া।
advertisement
সেই চিত্রই ফুঁটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে, মন্ডপের দ্বিতীয় পার্ট-এ চোখে পড়বে অজস্র ঘড়ি যেখানে ছেলের মায়ের খোঁজ নেওয়া মায়ের দেখাশোনা বা মায়ের প্রতি কর্তব্য থেকে সরে দাঁড়ানো, সেটা কি বোঝানোর জন্য অসংখ্য ঘড়ি যে একটু একটু করে সময় পার হতে হতে জীবনের শেষ সময়, দেখা যায় ছেলের বিশাল অট্টালিকা থেকে মাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। কখনো বৃদ্ধাশ্রম কখনো, ফুটপাত বা রাস্তায়।
আরও পড়ুনঃ এবার শুধু সেরা নয়, হাওড়ার ডোমজুড়ে সবার বড়!
একজন বৃদ্ধ মায়ের তার সন্তানের ফ্ল্যাট বা বাড়িতে ঠাই হয় না তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে রাস্তায় বা বৃদ্ধাবাসে, তা বোঝাতে মন্ডপের মাঝখানেই রয়েছে একজন বৃদ্ধা মা তাকে ফেলে দেয়া হচ্ছে জেসিবি মেশিন এর দ্বারা। ঠিক তার উপরে অর্থাৎ মণ্ডপের সিলিংয়ে অজস্র জানালা দরজা, কোন দরজা খোলা কোন দরজা বন্ধ এর মূল বিষয় একজন মায়ের কাছে তার সন্তানের জন্য আজীবন দরজা খোলা তবে একজন সন্তান তার বাড়ি বা ফ্ল্যাটের দরজা মায়ের জন্য বন্ধ করে দেয় কখনও।
আরও পড়ুনঃ ফুটপাথ দখল করেছে দোকান, ঝুঁকি নিয়ে মানুষ হাঁটছেন রাস্তা দিয়ে!
একজন মা যেকোন পরিস্থিতিতে আজীবন ছেলের মঙ্গল কামনায় ব্রতী! তবুও শেষ সময় গর্ভধারিণী মায়ের পরিণতি দেখানো হয়েছে, মা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন সেই মুহূর্তেও সন্তান অর্থ উপার্জনেই মত্ত। একজন মায়ের ঋণ যে কখনো শোধ করা সম্ভব না, যে মা সন্তানের মঙ্গল কামনা ছাড়া আর কোন কিছু ভাবে না সেই মা লাঞ্ছিত। এই সমাজকে সচেতন করতে, বিপন্ন পাড়া 'আনন্দ আশ্রম' এর অভিনব ভাবনায় গড়া পুজো মন্ডপ।
Rakesh Maity