এছাড়াও যদি রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স যাতে সুষ্ঠভাবে যাতায়াত করতে পারে তাঁর জন্য প্রয়োজন হলে বড় পণ্যবাহী ট্রলারগুলোকে কোনা হাইওয়ে দিয়ে নিবেদিতা সেতু মারফৎ টালা ব্রিজ দিয়ে কলকাতায় প্রবেশ করানো হতে পারে। সাধারণ মানুষ ও গাড়ি চালকদের রাস্তা বোঝার সুবিধার জন্য রাস্তায় রাস্তায় বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা বিশেষ বোর্ড ও সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে। এছাড়াও হাওড়া শহরের মধ্যে দিয়ে যে ভারী পণ্যবাহিত ট্রলার যাতায়াত করে তাঁর জন্য বিশেষ নির্দেশিকা শুক্রবার জারি করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি আন্দুল রোডের ক্ষেত্রে রাত্রি ১০ টা থেকে ভোর ৬ টা অব্ধি টোটো ও অটো চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কথাও জানান হয়।
advertisement
সাঁতরাগাছি ব্রিজের যে অংশটি খোলা থাকবে সেখানে গাড়ির চাপ বুঝে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রিত করা হবে। যানজট যাতে না হয় তাঁর জন্যই বহুদিন আগে থেকে হুগলি, ব্যারাকপুর, সল্টলেক, কলকাতা ও হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা বারংবার আলোচনাতে বসেছেন। প্রশাসনের উচ্চ স্তরের কর্তাদের নিয়ে আলোচনাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে পুলিশ ও বিভিন্ন এজেন্সির মধ্যে যোগাযোগ সূত্র ভালোভাবে কাজ করে বলে জানান। এই কাজের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী নামানো হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে দ্রুততার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করা যায় তাঁর জন্য সমস্ত দফতর কাজ করবে একসাথে। সেতু বন্ধের দু-তিনদিন নজর রাখা হবে কোন কোন রাস্তায় কতটা গাড়ির চাপ থাকছে। সেভাবেই সম্ভাব্য সমস্ত রাস্তাগুলোকেই ব্যবহার করা হবে।
প্রসঙ্গত রাজ্য পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে ১৯ তারিখ শনিবার রাত ১১ থেকে ভোর ৫ টা অবধি সম্পূর্ণ বন্ধ। এছাড়াও ওই দিন ভোর ৫ থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত কলকাতাগামী একমুখী লেন খোলা রাখা হবে। নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে এই কাজ চলবে গোটা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস। যাত্রীদের ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। গত ১২ নভেম্বর শুক্রবার হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রভীন ত্রিপাঠি সহ ট্রাফিক বিভাগের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা বৈঠক করেন। এছাড়াও তাতে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের লালবাজার ট্রাফিক কন্ট্রোলের আধিকারিকরা ও রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুনঃ অসচেতন পর্যটকরা, দেউলটি জুড়ে প্লাস্টিক আর আবর্জনার পাহাড়
যে কদিন ব্রীজ মেরামতির কাজ চলবে সে কদিন কোনো পণ্যবাহী ট্রাক চলতে দেওয়া হবেনা সেতুর উপর দিয়ে। সেক্ষেত্রে পণ্যবাহী ট্রাক রাত্রি দশটার পর কোলকাতার দিক থেকে চলাচল করতে পারবে। দ্বিতীয় সেতুর টোল প্লাজা পেরিয়ে আন্দুল রোড হয়ে জাতীয় সড়কের উদ্দেশ্যে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। অপরদিকে পণ্যবাহী ট্রাক কলকাতায় প্রবেশ করবে রাত্রি দশটার পর নিবেদিতা সেতু হয়ে। যদিও ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে ১৯ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নিয়ম মেনে ট্রাফিক মুভমেন্ট করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, সাঁতরাগাছি সেতুর কলকাতা অভিমুখে ২১ টি একপ্যানশন জয়েন্ট খারাপ হয়েছে সেগুলি ঠিক করা হবে।
যদিও এর আগে ২০১৬ সালে সেতুতে সাঁতরাগাছি অভিমুখী লেনের এক্সপ্যানশন জয়েন্ট সারানো হলেও কলকাতা অভিমুখী লেনের কাজ হয়নি। এই সেতু হয়ে প্রতিদিন প্রায় সত্তর হাজারের বেশি যান চলাচল করে। যার দরুন সেতুর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পরীক্ষা করা হয়। খারাপ হওয়া একপ্যানশন জয়েন্ট ঠিক না করলে বড়সড় দুর্ঘটনা সম্ভবনা রয়েছে। হাওড়া ও কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে প্রতিদিন গড়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে প্রায় ৭০ হাজার যান চলাচল করে। আর এই তথ্য সামনে আসার পরই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবন নবান্নে।
সেতু বন্ধের খবর প্রকাশ্যে আসতেই এখন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। এই দেড় মাস ধরে চলবে সেতুর মেরামতি কাজ। ইতিমধ্যেই ওই রাস্তা ব্যবহারকারি গাড়ির উপরে সমীক্ষা করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সমীক্ষায় প্রকাশ কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দৈনিক ৭০ হাজার গাড়ি চলে। যদিও গোটা প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৮০০ পুলিশকর্মী মোতায়েত করা হবে বলেই ট্রাফিক সূত্রের খবর। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গার্ডরেল ও ভ্যান রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ।
আরও পড়ুনঃ বাগনানের গ্রামে পুকুর কাটতে গিয়ে উদ্ধার বিষ্ণুমূর্তি! নিয়ে যাওয়া হল মিউজিয়ামে
যে কোনও সমস্যা হলে এবং যানজট হলে সহজেই তাঁর মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। সাঁতারাগাছি সেতুকে চার লেনের সেতুতে পরিণত করার পরিকল্পনা, সেক্ষেত্রে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জায়গাতে অদূর ভবিষ্যতে যদি ওই চার লেনের সেতু নির্মাণের কাজ রাজ্য সরকার শুরু করতে পারে সেক্ষেত্রে নিত্যযাত্রী সহ ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের কষ্ট অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Rakesh Maity