প্রকৃতিপ্রেমী সৌরভের প্রথম নজরে পড়েছিল ওদের। নেই কোনও বাঁধন, নেই লেখাপড়ার বালাই। সৌরভ উপলব্ধি করেন, এভাবে চলতে থাকলে এদের জীবন হয়ে উঠবে অন্ধকারাচ্ছন্ন। সে সময় কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
ওই সমস্ত শিশুর পরিবার ভিন রাজ্য থেকে কাজের তাগিদে এ রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিল প্রায় দেড় দশক আগে। ওদের কারও বাবা আবার কারও মা ও বাবা উভয়ে রাস্তার কাজের শ্রমিক। সকালের আলো ফুটলেই কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে বাবা-মা। ওই সমস্ত পরিবারের শিশুরা আধবেলা আধ খেয়েই সারাদিন খেলে বেড়ায়। লেখাপড়া বলতে কিছুই ছিল না। অবশেষে এরা মূল স্রোতে ফিরছে।
advertisement
মুক্ত শিক্ষাঙ্গনে শুরুতে ছিল, সপ্তাহে একদিন লেখাপড়া নাচ গান ছবি আঁকার মতো বিষয় নিয়ে চর্চা। একটু একটু করে মিশতে শেখা এভাবেই কয়েক বছরে অনেকটা শিক্ষার আলোয় ওরা। কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু ছেলে মেয়ে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হতে পেরেছে। এবছর প্রাথমিক স্কুলে ৯ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়। সব মিলিয়ে খুশি ওই সমস্ত পরিবারের অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যায় চাঁদে অবতরণ চন্দ্রযান ৩-র, ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকবে ভারত তথা গোটা বিশ্ব
উদ্যোক্তা সৌরভ মণ্ডল জানান, শুরুতে সপ্তাহে একদিন ১-২ ঘণ্টা খোলা আকাশের নীচেই ক্লাস শুরু হয়। এভাবেই চলতে থাকে দীর্ঘদিন। তারপর ধীরে ধীরে একটু সময় বাড়ানো। সপ্তাহে দু’দিন থেকে তিন দিন ক্লাস চলছে বর্তমানে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য অবসর শিক্ষক দেবাশিস দীর্ঘাঙ্গী, শশাঙ্ক সাউ, শিল্পী গুলজার হোসেনের মতো কিছু মানুষ শিক্ষাদানে এগিয়ে আসেন। ওদের মধ্যে লেখাপড়ার পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞান, অঙ্কন, নৃত্য আবৃত্তির মতো বিভিন্ন বিষয়ে চর্চা করানো হয়।
রাকেশ মাইতি