রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের প্রচারের হাতিয়ার পতাকার উৎস সন্ধানে আমরা পৌঁছে গেলাম হাওড়ার রাজু হালদারের কাছে। তিনি দীর্ঘদিন রাজনৈতিক দলের পতাকা উৎপাদন ও বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর থেকেই জানতে পারা গেল, এবার পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে পতাকার চাহিদা ব্যাপক। এবং এখানে এসে আরেকটি মজার বিষয় দেখা গেল। পঞ্চায়েতের মনোনয়ন জমার পর্বে যা অবস্থা তাতে শাসক-বিরোধী কেউ কারোর নামে জল খাচ্ছে না বলতে গেলে! অথচ এখানে একই ছাদের তলায় তৃণমূলের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে সিপিএম ও বিজেপির পতাকা!
advertisement
আরও পড়ুন: মূক ও বধির’কে পঞ্চায়েতে প্রার্থী করল সিপিএম! প্রতিবন্ধী অধিকার রক্ষায় বড় চমক
রাজু হালদারের পারিবারিক ব্যবসাই হল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা তৈরি করা। কিন্তু কীভাবে হয় সেই কাজ? পতাকার সাইজ অনুযায়ী বড় থান কাপড় কাটিং করার পর সেলাই করা হয়। সবশেষে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতীক বা কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতাদের মুখের ছবি প্রিন্ট করা হয়। পতাকার পাশাপাশি এখানে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহৃত দল ও প্রার্থীর নাম লেখা গেঞ্জি, টুপিও তৈরি হয়।
তবে জানা গেল অন্য সময় এখানে মূলত নানান মাপের জাতীয় পতাকা তৈরি হয়। কিন্তু ভোট এলে পুরো মনোযোগ চলে যায় রাজনৈতিক দলগুলির পতাকা তৈরির দিকে। তবে এবার নির্বাচন কমিশন হঠাৎ ভোটের কথা ঘোষণা করায় যোগান সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন রাজু হালদাররা। দিনরাত খেটেও সামলে উঠতে পারছেন না কারিগররা। তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস সকলের পতাকার ভালো চাহিদা আছে বলে তিনি জানান। এমনকি আইএসএফের দলীয় পতাকারও ভালো চাহিদা লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের পতাকার চাহিদা সবথেকে বেশি।
এই কারখানাটি অবস্থিত হাওড়ার জগাছার উনসানিতে। পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে বাংলার রাজনৈতিক উত্তাপ ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে তা রাজ্যবাসী ইতিমধ্যেই ভালোভাবে টের পেয়েছে। তবে লড়াই শুধু সেখানে থেমে নেই, রাজু হালদারদের কারখানাতেও চলছে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে এক লড়াই। তবে এখানে কোনও মারামারি নেই। বরং এটা যত দ্রুত সম্ভব বিভিন্ন এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়ার লক্ষ্য পূরণের লড়াই বা দৌড়।
রাকেশ মাইতি