টিকা নেওয়ার পর কেন অপেক্ষা করতে বলা হয়?
যারা কোভিডের টিকা নিয়েছে, তারা টিকা দেওয়ার পরে ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের পর্যবেক্ষণ সময় (Observation Period) সম্পর্কে নিশ্চয় সচেতন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নেওয়ার পরে কমপক্ষে ১৫ মিনিটের জন্য টিকা কেন্দ্রে অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন। টিকা নেওয়ার পর কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কি না তা দেখার জন্যই অপেক্ষা করতে বলা হয়। এতে টিকা নেওয়ার ব্যক্তির সুরক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। যাতে কোনওরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে পারেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অ্যালার্জির জন্য আগে থেকেই ওষুধ খেলে তা বন্ধ করা উচিত নয়। এমনকী টিকা নেওয়ার পরও নিয়মিত ওষুধ সেবন করা উচিত। তবে, এটি বুঝতে হবে যে টিকা নেওয়ার কারণে এলার্জি দেখা দিলে তার জন্য টিকা কেন্দ্রে যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: শীতে শুষ্ক চোখের সমস্যায় জেরবার? উপশমের উপায় বলে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
১৫ মিনিটের পর্যবেক্ষণ সময়কাল তুলে দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনে:
ব্রিটেনে প্রথম ওমিক্রন সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুর পর সরকার যতটা সম্ভব টিকা দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। উপরন্তু, জনগণকে অবিলম্বে বুস্টার শট নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, টিকাকরণের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার জন্য সরকার টিকা নেওয়ার পরে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার নিয়ম তুলে দিয়েছে। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সরকারি কর্তারা বলেছে, "টিকা নেওয়ার পরে ১৫ মিনিটের পর্যবেক্ষণ সময়কাল এমন অল্প সংখ্যক লোকের জন্য থাকবে, যারা আগে অ্যানাফিল্যাক্সিস (Anaphylaxis) বা অন্যান্য অ্যালার্জির (Allergic Reactions) শিকার হয়েছেন।" অর্থাৎ টিকা নেওয়ার পরে ১৫ মিনিটের পর্যবেক্ষণ সময়কাল শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যারা গুরুতর প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: এই ৫ লক্ষণ দেখলেই পরামর্শ নিন চিকিৎসকের, ওমিক্রনের উপসর্গ হয় এরকমই!
ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গণ টিকাকরণ গুরুত্বপূর্ণ:
অস্বীকার করার উপায় নেই যে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বর্তমানে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার টিকা। বিশেষত যখন পরপর বেশ কয়েকটি প্রজাতি সামনে আসছে। যদিও টিকা নিলেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হব না, এটা একেবারে ভুল কথা। টিকা নিশ্চিতভাবে সংক্রমণ থেকে গুরুতর অসুস্থতাকে রোধ করে, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তাই টিকা অবশ্যই নিতে হবে। এছাড়াও, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের জন্য বুস্টার এখনই চালু করতে হবে। আমাদের দেশে বুস্টার দেওয়ার কথা চলছে। তবে বুস্টার ডোজ যে ওমিক্রনের থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত নেই।
করানার ওমিক্রন প্রজাতি প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) সনাক্ত করা হয়েছিল এবং এখন ভারত সহ বেশ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ভারতেও কমপক্ষে ৮০ জনের শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়েছে। ডেল্টা প্রজাতির (Delta Variant) কারণে ভারতে দ্বিতীয় ঢেউ এসেছিল। তবে, নতুন এই প্রজাতিটির স্পাইক প্রোটিনে (Spike Protein) আরও মিউটেশন রয়েছে, স্পাইক প্রোটিনেই ৩০টি মিউটেশন ঘটেছে। করোনাভাইরাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই স্পাইক প্রোটিন। এর সাহায্যেই মানবকোষে প্রবেশ করে ভাইরাস। যা এটিকে কিছুটা বেশি সংক্রমণযোগ্য করে তোলে। তবে, ওমিক্রনে আক্রান্তদের সকলেরই এখনও পর্যন্ত হালকা উপসর্গ দেখা গিয়েছে।