এক সময়ে বয়স বাড়লেই হার্ট অ্যাটাকে ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়ত। কিন্তু ২১ শতকে সব কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। কম বয়সিদের মধ্যেও বেড়েছে হৃদরোগের ঝুঁকি। ভারতে ৫০ বছরের মধ্যে যাঁদের বয়স তাঁদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়েছে। ২০০৫ সালে ভাসকুলার হেলথ জার্নালে গবেষক মীনাক্ষী শর্মা ও নির্মল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি রিপোর্ট বেরিয়েছিল। তাতে বলা হয়, ৩৫ থেকে ৪৫ এর মধ্যে যাঁদের বয়স তাঁদের মধ্যে করোনারি আর্টারি ডিজিজ-এর প্রবণতা বাড়ছে। যার জেরে স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ বছর আগেই তাঁদের মৃত্যু হচ্ছে।
advertisement
কিন্তু কেন ভারতীয়দের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে?
কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, পরিবারে কারও হৃদরোগের সমস্যা থাকলে ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া অনিয়মিত জীবনযাপন এই অসুখের একটা বড় কারণ। বহু ভারতীয় পরিবারের মধ্যেই এমন কিছু শারীরিক সমস্যা থাকে যা পরবর্তীতে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পেটে মেদ জমা, হাই ফাস্টিং ব্লাড সুগার অথবা ডায়াবেটিস হলে, অথবা শরীরে ট্রাইগ্লিসারিনের মাত্রা বেড়ে গেলে এবং গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকলে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
বহু ভারতীয় কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগেন। কারণ তাঁদের মধ্যে গুড কোলেস্টেরল বা হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন গ্রহণ করার প্রবণতা কম থাকে। লিপিড প্রোপোরশনে হঠাৎ পরিবর্তন থেকেও ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া অনিয়মিত লাইফস্টাইল, অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অধিক পরিমাণে এনার্জি ড্রিঙ্ক, অ্যালকোহল পান করা এবং তামাক নিলেও বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি। এছাড়া ঠিক মতো ঘুম না হলেও ঝুঁকি বাড়ে।
সমস্যা এড়াতে কী করণীয়?
চিকিৎসকরা বলছেন, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সিদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা উচিত। বয়স ৪০ পেরোলেই প্রতি বছরই একবার এই টেস্ট করানো উচিত। এছাড়া জীবনযাপন যাতে ঠিক থাকে সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। সঠিক সময়ে ঘুম, সঠিক ডায়েট মেনে চলা, শরীরচর্চা করা এগুলি মেনে চলা প্রয়োজন। হার্টের অবস্থা কেমন তা-ও বছরে একবার দেখে নেওয়া দরকার পরীক্ষার মাধ্যমে।
আরও পড়ুন- মাঝরাতে গলা শুকোচ্ছে বার বার! শরীরে গোপনে মারণ রোগ বাসা বাঁধছে না তো
প্রতিদিনের ডায়েটে যাতে চিনি ও নুনের পরিমাণ এবং বিভিন্ন রকমের ফ্যাটের পরিমাণ ঠিক থাকে সেদিকে নজর দিতে বলছেন চিকিৎসকরা। অতিরিক্ত চিনি ও ফ্যাট ওবেসিটি বাড়ায় এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। আর অতিরিক্ত নুন বাড়ায় হাইপারটেনশন যা স্ট্রেস বাড়ায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।