'বিএইচ' (BH) সিরিজের রেজিস্ট্রেশন শুরু করেছে।
যাঁদের চাকরি মাঝে মাঝেই এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ট্রান্সফার (প্রতিরক্ষা, রেল, অন্যান্য সরকারি কর্মচারী বা বেসরকারি কর্মী) হয়, তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের চালু করা এই সুবিধাতে উপকৃত হবেন। তাঁদের আর গাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য কাগজপত্রের ঝামেলা নিতে হবে না।
এত দিন কী নিয়ম ছিল?
advertisement
বর্তমানে, যখন একজন ব্যক্তি অন্য রাজ্যে যান, স্বাভাবিক ভাবেই তিনি নিজের গাড়ি সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইবেন। এর জন্য তাঁকে প্রথমে বর্তমানে যে রাজ্যে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন আছে সেই রাজ্যের এনওসি পেতে হবে। অন্য রাজ্যে নতুন করে রেজিস্ট্রেশনের জন্য এনওসি পাওয়া বাধ্যতামূলক। এছাড়াও নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করা আবশ্যক। কারণ, ১৯৮৮ সালের মোটর ভেহিকল আইনের ৪৭ ধারা অনুযায়ী একবার রেজিস্ট্রেশনের পর একটি গাড়িকে অন্য রাজ্যে নিয়ে গিয়ে সর্বোচ্চ এক বছর রাখা যায়। এই সময়ের মধ্যে নতুন রাজ্যে আবারও রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে, গাড়ির মালিক আগের রাজ্যে দেওয়া রোড ট্যাক্স ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে, সেটা সংশ্লিষ্ট রাজ্যে যত বছর গাড়িটি ছিল তা বাদ দিয়ে। এর কারণ হল, যখন কেউ নতুন গাড়ি কেনেন ও রেজিস্ট্রেশন করেন, তখন সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার গাড়ির লাইফটাইম (১৫ বছর) ট্যাক্স নিয়ে নেয়। ধরা যাক, কোনও একটি গাড়ি একটি রাজ্য়ে ৫ বছর ছিল, এর পর সেটি অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ওদিকে ওই আগের রাজ্যে ১৫ বছরের ট্যাক্স দেওয়া ছিল, তাই নতুন রাজ্যে আসার পর গাড়ির মালিক ১০ বছরের ট্যাক্স ফেরত চাইতে পারবেন। নতুন রাজ্যে গাড়ি মালিককে এবার নতুন করে ১০ বছরের ট্যাক্স দিতে হবে।
আরও পড়ুন- অবসরের পরেও আয় নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ করুন এনপিএস স্কিমে,জানুন বিশদে
আসলে সরকার অবশেষে বুঝতে পেরেছে যে এই ট্যাক্স ফেরত পাওয়ার নিয়মটি খুবই জটিল। গাড়ির মালিকদের ঝামেলায় পড়তে হয়। এছাড়াও আঞ্চলিক পরিবহন অফিসের আমলাতান্ত্রিক গোলকধাঁধার মধ্যে দিতে যেতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকারগুলি এখনও এমন একটি ব্যবস্থা নিয়ে আসেনি যেখানে রোড ট্যাক্স এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করা যায়।
নতুন ব্যবস্থায় কী থাকছে:
লাল ফিতের ফাঁদে গাড়ির মালিকরা যাতে জড়িয়ে না পড়েন তার জন্য় বিএইচ সিরিজ রেজিস্ট্রেশনের পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অনলাইন করা হবে। আজ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকেই এটি কার্যকর হবে। নিয়ম সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দিয়েছে যে বিএইচ রেজিস্ট্রেশন চিহ্ন থাকা কোনও গাড়িকে অন্য রাজ্যে গিয়ে আবারও রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না।
কারা কারা এই সুবিধা পাবেন?
যে কোনও সরকারি/পিএসইউ কর্মচারী এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। এছাড়াও কমপক্ষে চারটি রাজ্যে বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অফিস আছে এমন বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী বিএইচ নম্বর পাওয়ার যোগ্য। তাঁকে ৬০ নম্বর ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে হবে এবং অনলাইনে বৈধ কাজের জায়গার পরিচয়পত্র বা অন্য প্রমাণ দিতে হবে। রাজ্য সরকার প্রমাণ যাচাই করেই বিএইচ রেজিস্ট্রেশন বরাদ্দ করবে। রেজিস্ট্রেশন নম্বর কম্পিউটার দ্বারা তৈরি করা হবে।
রোড ট্যাক্সের বিষয়টির কী হবে?
বিএইচ সিস্টেমের অধীনে রেজিস্ট্রেশন হওয়া গাড়ির জন্য ১৫ বছরের বদলে ২ বছরের রোড ট্যাক্স দিতে হবে এবং পরে আবারও রিনিউ করতে হবে। এতে করে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর ট্যাক্স ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদনের ঝামেলা থাকবে না। গাড়ির বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হওয়ার পর বার্ষিক ভাবে ট্যাক্স ধার্য করা হবে। যা পূর্বে ধার্য করা অর্থের অর্ধেক হবে।
রোড ট্যাক্স কত হবে?
বিএইচ রেজিস্ট্রেশন গাড়ির জন্য গাড়ির দাম ১০ লক্ষ টাকার কম থাকলে ৮ শতাংশ ট্যাক্স নেওয়া হবে। ১০-২০ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে ট্যাক্স হবে ১০ শতাংশ। ২০ লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের যানবাহনের জন্য ১২ শতাংশ হারে ট্যাক্স নেওয়া হবে। তবে ডিজেলচালিত গাড়ির জন্য ২ শতাংশ অতিরিক্ত ও বৈদ্যুতিন গাড়ির জন্য ২ শতাংশ কম ট্যাক্স ধার্য করা হবে। রাজ্য ভেদে ট্যাক্সের হার কম-বেশি হতে পারে।
বিএইচ নম্বর দেখতে কেমন হবে?
একটি সাধারণ বিএইচ নম্বর '21 BH XXXX AA'-র মতো দেখতে হতে পারে। এর মধ্যে প্রথম দু'টি সংখ্যা হল প্রথম রেজিস্ট্রেশনের বছর, BH হল সিরিজের কোড, চারটি সংখ্যা (XXXX) এলোমেলোভাবে কম্পিউটার জেনারেটেড, তার পরে ইংরেজি বর্ণমালার দু'টি অক্ষর।