১)প্রশ্ন- ভাইরাল ফিভার হওয়ার প্রধান কারণ কী?
উত্তর- ভাইরাস দুধরণের ডিএনএ ভাইরাস, আরএনএ ভাইরাস ৷ আরএনএ ভাইরাস জ্বলীয় বাষ্পপূর্ণ আবহাওয়ায় খুব অনায়াসে হাওয়ায় ভেসে বেড়াতে পারে৷ ভেসে বেড়ানোর সময় তার শরীরের কোনও প্রাণের অস্তিত্ব থাকে না৷ তবে মানুষের শরীরে বিশেষ করে শ্বাস প্রশ্বাসের যে স্থানগুলি রয়েছে, নক-গলা ফুসফুস এতে ঢুকে দ্রুত বংশবিস্তার করে এই ভাইরাস৷ তখনই শরীরে একধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় যা থেকে প্রথম জ্বর আসে (Fever)৷ যা ভাইরাল ফিভার৷
advertisement
২)প্রশ্ন- বৃষ্টিতে ভিজলেও কি এরম জ্বর হতে পারে? যদি হয়, তাহলে বৃষ্টিতে ভেজার পর কী করতে হবে?
উত্তর- বৃষ্টিতে ভিজলে হঠাৎ করে শরীরের তাপমাত্রার তারতম্য তৈরি হয়৷ এতে শরীরে ইমিউনিটি কমে যায়৷ এটা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের জন্য আদর্শ৷ ফলে ইনফেকশন (Infection) বা ঠান্ডা গেলে যেতে পারে তাড়াতাড়ি৷ বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরে গরম জলে স্নান করা বা গা মুছে নিতে পারলে ভাল৷ গরম চা-কফি বা দুধ খেলে উপকার হবে৷
৩)প্রশ্ন- টেস্ট না করিয়ে, সাধারণভাবে কি বোঝা সম্ভব যে এই জ্বরের সঙ্গে করোনার কোনও সম্পর্ক নেই?
উত্তর- করোনা এবং সাধারণ জ্বরের উপসর্গ (Symptoms of Viral Fever) একই রকম, জ্বর-গা-হাত ব্যথা, দুর্বলতা৷ তবে করোনায় এর সঙ্গে দু-তিনটে বাড়তি উপসর্গ রয়েছে যা অন্য ক্ষেত্রে থাকে না৷ করোনায় স্বাদ-গন্ধ চলে যায়, দ্রুত শ্বাস কষ্ট হওয়ার সম্ভবনাও থাকে৷ তবে এগুলি জ্বরের দু-তিনদিনের মধ্যে হয়৷ তখন তো করোনা টেস্ট (test) করতেই হবে৷ অন্যদিকে সাধারণ জ্বরও যদি দু-তিন দিন হয়ে যায়, তাহলেও করোনা টেস্ট করা বাধ্যতামূলক৷
৪)প্রশ্ন- অধিকাংশ সময় দেখা যায় বাড়ির একজনের ভাইরাল ফিভার হলে অন্যদেরও হয়৷ খুবই ছোঁয়াচে এই জ্বর৷ কী করলে অন্যদের নাও হতে পারে?
উত্তর- বায়ু বাহিত হয় এই জ্বর, তাই একজনের হলে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি৷ উপসর্গের আগের ভাব বা ইনকিউবেশন পিরিয়ডে (Incubation period) ভাইরাস বংশবৃদ্ধি করে৷ সেই সময় কোনও উপসর্গ থাকে না৷ তখনই ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ৷ একমাত্র উপায় বাড়িতে মাস্ক পরে থাকা বা দূরত্ব বজায় রাখা৷ তবে অভাবে আটকানো খুব মুশকিল৷ তবে চেষ্টা করা যেতে পারে৷
৫)প্রশ্ন- জ্বর হলেই কি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে?
উত্তর- ১৫থেকে ৬০ বছর বসয়ি, যাদের অন্য অসুখ যেমন সুগার, প্রেশার, থায়রয়েড নেই, তারা তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন৷ তারপর পরিস্থিতি বুঝে ডাক্তারের (Contact Doctor in Viral fever) সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন৷ তবে যারা ৫ বছরের নিচে বা ৬০ বছরের বেশি, তাদের জ্বর হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ শুরু করে দিতে হবে৷
৬)প্রশ্ন- ভাইরাল ফিভারের মূল উপসর্গ কী?
উত্তর- শ্বাস প্রশ্বাস সংক্রান্ত এই অসুখের মূল উপসর্গ সর্দি-কাশি-জ্বর, গলা ব্যথা,গা-হাত-পা ব্যথা৷ ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া মত অসুখে শরীরে ব্যথা হয়, এতে সর্দা-কাশি হয় না৷ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ভাইরাল ফিভারে ডায়রিয়া, বমি ভাবও লক্ষ্য করা যায়৷
৭)প্রশ্ন- ঘরোয়া কোনও টোটকা রয়েছে এর থেকে মুক্তি পেতে?
উত্তর- হাঁচি-কাশি হলে শরীরে অস্বস্তি (Home remedy for Viral Fever) কাজ করে৷ ফলে মুখে গোলমরিচ-আদা রাখলে ভাল লাগবে৷ নাকে নরমাল স্যালাইন ড্রপ, স্টিম ভেপার, গার্গেল করলে ভাইরাল লোড কমে যায়৷ শরীরে আরাম হয়, রোগ ছড়ানোর প্রবণতাও কমে৷
৮)প্রশ্ন- চিকিৎসা কীভাবে?
উত্তর- অ্যান্টি ভাইরাল ড্রাগস দিয়ে চিকিৎসা (Viral Fever Treatment) হয়৷ সাধারণত সর্দি-কাশি-জ্বরের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহার করা হয় না৷ ইনফ্লুএঞ্জার ক্ষেত্রে ট্যামি ফ্লু নামক ওষুধ ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়া সাধারণ অ্যান্টি অ্যালার্জি দিয়ে চিকিৎসা হয়৷ জ্বরের ক্ষেত্রে প্যারাসিটমল, গার্গেলের জন্য কিছু মাউথ ওয়াশ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বিও ব্যবহার করা হয় ৷ তবে এই সব ওষুধই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শুরু করা উচিৎ৷