TRENDING:

Explained: অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করতে হাতিয়ার সুরক্ষিত চাল; বিশেষ ধরনের এই চালের সম্বন্ধে জানুন বিশদে!

Last Updated:

Explained: মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট-সহ চালের মান উন্নত করলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন দরিদ্ররাই। সেই সঙ্গে তাদের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে এই ধরনের ভাত থেকেই।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#নয়াদিল্লি : সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা (Union Cabinet) সরকারি কর্মসূচির অধীনে ফর্টিফায়েড চাল বা সুরক্ষিত চাল (Fortified Rice) বিতরণের একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (Food Corporation of India) এবং রাজ্য সংস্থাগুলি সরবরাহ ও বিতরণের জন্য ইতিমধ্যেই ৮৮.৬৫ লক্ষ মেট্রিক টন সুরক্ষিত চাল সংগ্রহ করেছে। গত বছরের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) ২০২৪ সালের মধ্যে রেশন (Prime Minister Narendra Modi) এবং মিড-ডে মিল (Midday Meal Scheme)-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অধীনে বিতরণ করা চালের মান উন্নত করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
সুরক্ষিত চাল পুষ্টিতে ভরপুর
সুরক্ষিত চাল পুষ্টিতে ভরপুর
advertisement

সুরক্ষিত চাল কী?

ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (Food Safety and Standards Authority of India)-র সুরক্ষিত খাদ্য় সামগ্রীর সংজ্ঞা হল, "সুচিন্তিত ভাবে সব রকম সতর্কতা বজায় রেখে একটি খাদ্যে প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট (Micronutrients)-এর পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। যাতে খাদ্যের পুষ্টির গুণমান উন্নত করা যায় এবং স্বাস্থ্যের জন্য ন্যূনতম ঝুঁকি-সহ জনস্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করা যায়।" সাধারণ চালে (Regular Rice) মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যোগ করার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যায়। যেমন- কোটিং (Coating), ডাস্টিং (Dusting) এবং এক্সট্রুশন (Extrusion)। একটি এক্সট্রুডার মেশিন ব্যবহার করে একটি মিশ্রণ থেকে ফর্টিফায়েড চালের দানা (FRKs) উৎপাদন করা হয়। এটি ভারতের জন্য সেরা প্রযুক্তি বলে মনে করা হয়। সুরক্ষিত ধানের দানাগুলিকে সাধারণ চালের সঙ্গে মিশিয়ে ফর্টিফায়েড চাল তৈরি করা হয়।

advertisement

আরও পড়ুন : দোরগোড়ায় পয়লা বৈশাখ, জেনে নিন নববর্ষের 'ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল' ৫ অনবদ্য শাড়ি-স্টাইল!

সুরক্ষিত চাল উৎপাদন করার জন্য এক্সট্রুশন প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে?

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের প্রিমিক্সের সঙ্গে শুকনো চালের গুঁড়ো মেশানো হয় এবং এই মিশ্রণে জল যোগ করা হয়। হিটিং জোন-সহ একটি ট্যুইন-স্ক্রু এক্সট্রুডারের মধ্যে দিয়ে ওই মিশ্রণটিকে পাঠানো হয়, যা চালের মতো আকার-আকৃতির শস্য বা দানা তৈরি করে। এর পর শস্যগুলিকে শুকনো এবং ঠান্ডা করে ব্যবহারের জন্য প্যাকেজ করা হয়। আর এই ফর্টিফায়েড চাল কমপক্ষে ১২ মাস খাওয়ার জন্য উপযুক্ত থাকে।

advertisement

উপভোক্তা, খাদ্য ও পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন মন্ত্রকের (Ministry of Consumer Affairs, Food and Public Distribution) জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, সুরক্ষিত চালের দানার আকার-আকৃতি যতটা সম্ভব সাধারণ চালের মতো হওয়া উচিত। শস্যের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ যথাক্রমে ৫ মিমি এবং ২.২ মিমি হওয়া উচিত।

কিন্তু কেন চালকে প্রথমেই সুরক্ষিত করতে হবে?

আসলে আমাদের দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারী ও শিশুরা অপুষ্টির (Malnutrition) শিকার। এখানেই শেষ নয়, খাদ্য মন্ত্রকের মতে, দেশের বেশির ভাগ মহিলাই রক্তাল্পতায় (Anemia) আক্রান্ত। সেই সঙ্গে অপুষ্টির জেরে বহু শিশুরই শারীরিক বিকাশ ও বৃদ্ধি ঠিক ভাবে হয় না। আর এই অপুষ্টি মোকাবিলায় খাদ্যসামগ্রীর মান উন্নত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলেই বিবেচনা করা হয়। ভাত ভারতের অন্যতম প্রধান খাদ্য, দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ ভাত খান। ভারতে মাথাপিছু চালের ব্যবহার প্রতি মাসে ৬.৮ কেজি। অতএব, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট-সহ চালের মান উন্নত করলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন দরিদ্ররাই। সেই সঙ্গে তাদের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে এই ধরনের ভাত থেকেই।

advertisement

চালের সুরক্ষিতকরণের মান কী কী বিষয়ের উপর নির্ধারণ করা হয়?

মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুসারে, ১০ গ্রাম সুরক্ষিত চালকে ১ কেজি সাধারণ চালের সঙ্গে মেশাতে হবে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-র নিয়ম অনুসারে, ১ কেজি সুরক্ষিত চালে যা যা থাকা বাঞ্ছনীয়- লৌহ (২৮ এমজি - ৪২.৫ এমজি), ফলিক অ্যাসিড (৭৫ - ১২৫ মাইক্রোগ্রাম), ভিটামিন বি-১২ (০.৭৫ - ১.১৫ মাইক্রোগ্রাম)। এছাড়াও চালের সুরক্ষিতকরণের জন্য ব্যবহার করা যায় জিঙ্ক (১০ মিলিগ্রাম - ১৫ মিলিগ্রাম), ভিটামিন-এ (৫০০ - ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম), ভিটামিন বি-১ (১ মিলিগ্রাম - ১.৫ মিলিগ্রাম), ভিটামিন বি-২ (১.২৫ মিলিগ্রাম - ১.৭৫ মিলিগ্রাম), ভিটামিন বি-৩ (১২.৫ এমজি - ২০ এমজি ) এবং ভিটামিন বি-৬ (১.৫ এমজি - ২.৫ এমজি )।

advertisement

আরও পড়ুন :  ‘কাঁচা বাদাম’এর পর নেটদুনিয়া কাঁপাচ্ছে ‘নিম্বু সোডা’! শুধু গান নয়, কেরামতিতেও 'সুপারহিট'! দেখেছেন?

সুরক্ষিত চাল কি আলাদা ভাবে রান্না করতে হবে?

সুরক্ষিত চাল থেকে ভাত রান্না করতে বিশেষ কোনও পদ্ধতির প্রয়োজন হয় না। ভাত রান্নার আগে আমরা যেভাবে সাধারণ চাল ধুয়ে নিই, ঠিক সেভাবেই সুরক্ষিত চালও ধুয়ে এবং পরিষ্কার করে নিতে হবে। রান্নার আগে সুরক্ষিত চালে যে গুণাগুণ এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের মাত্রা ছিল, রান্নার পরেও সেটা বজায় রাখে।

সুরক্ষিত চাল উৎপাদনে জন্য ভারতের ক্ষমতা কত?

গত বছর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সময়, প্রায় ২,৭০০টি চালের কল সুরক্ষিত চাল উৎপাদনের জন্য ব্লেন্ডিং ইউনিট (Blending Units) তৈরি করেছিল। মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৪টি প্রধান রাজ্যের এই ইউনিটগুলিতে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১৩.৬৭ লক্ষ টন ছিল। ২ বছরে সুরক্ষিত চালের উৎপাদন ৭,২৫০ টন থেকে ৬০,০০০ টনে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

সুরক্ষিত চাল উৎপাদনের জন্য একটি বিদ্যমান চাল কলের (Rice Mills) পরিকাঠামো উন্নত করতে হয়। প্রতি ঘণ্টায় ৪-৫ টন সুরক্ষিত চাল উৎপাদনের জন্য একটি চাল কলের পরিকাঠামো উন্নত করতে ১৫-২০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। আয়রন, ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি-১২ দিয়ে প্রতি কেজি সুরক্ষিত চাল তৈরি করতে ৬০ পয়সা খরচ হবে।

সাধারণ চাল ও সুরক্ষিত চালের মধ্যে পার্থক্য করব কী করে?

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লন্ডন এবার পুরুলিয়ায়! ১-২ রকম নয় পাওয়া যাচ্ছে ২৫ রকমের কেক-পেস্ট্রি
আরও দেখুন

বিষয়টি খুবই সহজ। সাধারণত (+F) লোগো-সহ পাটের বস্তায় এই চাল প্যাকিং করা হয়। আর বস্তায় লেখা থাকবে, "আয়রন, ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি-১২-সহ সুরক্ষিত চাল।"

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Explained: অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করতে হাতিয়ার সুরক্ষিত চাল; বিশেষ ধরনের এই চালের সম্বন্ধে জানুন বিশদে!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল