TRENDING:

Explained | Pollution: মারাত্মক আকার নিয়েছে বায়ু দূষণের মাত্রা, এর জন্যই কি ভাইরাল জ্বরের বাড়বাড়ন্ত

Last Updated:

Explained | Pollution: আমরা যা হিসাব করতে ব্যর্থ হই তা হল বায়ুর গুণগত মান হ্রাস হলে কী মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: দীপাবলির (Diwali 2021) পরে দেশ জুড়েই বাতাসের (Air) গুণগত মানের দারুণ রকমের পতন ঘটেছে। বিশেষ করে দিল্লি-এনসিআর (Delhi-NCR) অঞ্চলে বায়ু দূষণ (Air Pollution) একেবারে 'বিপজ্জনক' স্তরে পৌঁছেছে। বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম ২.৫) স্তরে একটি খাড়া বৃদ্ধি রয়েছে। দীপাবলির পরে এখন নতুন সমস্যা খড় ও ধান গাছের গোড়া পোড়ানো। পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে ধান গাছের গোড়া ও খড় পুড়িয়ে ফেলছেন কৃষকরা। আর সেই কারণে বায়ু দূষণ ক্রমেই ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে। সব চেয়ে করুণ অবস্থা রাজধানী দিল্লিতে। বায়ু দূষণ একটি বাস্তব সমস্যা, যা বিভিন্ন আরও অন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বায়ু দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
advertisement

সাধারণত যে যে সমস্যাগুলি হয় সেগুলি হল-চোখ জ্বলা, চোখে চুলকানি, গলার অ্যালার্জি, মাথাব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট। এছাড়াও নিম্নমানের বায়ুর কারণে ভাইরাল জ্বরের মতো কঠিন সমস্যা হতে পারে, যা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণকে জটিল করে তোলে এবং মানুষকে অতিরিক্ত ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়। বায়ু দূষণের কারণে বিদ্যমান অসুস্থতার উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে, বিশেষ করে যাঁদের হাঁপানি ও ফুসফুসজনিত রোগ রয়েছে। আমরা এই প্রতিবেদনে সেই বিষয়েই আলোচনা করব।

advertisement

ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের মাত্রা কী ভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে?

বাতাসে একাধিক বায়ু দূষণকারী পদার্থ লুকিয়ে আছে। আমরা যা হিসাব করতে ব্যর্থ হই তা হল বায়ুর গুণগত মান হ্রাস হলে কী মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। যদিও এটি প্রধানত দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। এটিও দেখা গগিয়েছে যে বিষ বায়ুর কারণে অসময়ে বাচ্চার জন্ম (Premature Births) হচ্ছে। এছাড়াও বাচ্চার বেড়ে ওঠায় এবং শ্বাসযন্ত্রের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে দূষণ। হিসেব অনুযায়ী, বায়ু দূষণের কারণে অকাল মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে বায়ু দূষণ কোভিড (Covid-19) সম্পর্কিত মৃত্যু ১১ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। যাদের কোমর্বিডিটি (Comorbidities) আছে, তাদের জন্য দূষণ আরও ক্ষতিকর। রোগীর অবস্থা এতটাই খারাপ করে দিতে পারে যে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

advertisement

বায়ু দূষণের কারণে কি ভাইরাল সংক্রমণ আরও খারাপ দিকে যায়?

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই বছর মরসুমি ফ্লু (Flu) এবং ভাইরাল সংক্রমণের (Viral Infections) সংখ্যাও অবিরাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কোভিডের মধ্যে মরসুমি ভাইরাল সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত বেশ চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। ভাইরাল সংক্রমণের এক নম্বর কারণ হল ঋতু পরিবর্তন এবং এক্সপোজারের অভাব বা অনাক্রম্যতা (Immunity)। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন যে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫) এবং অপেক্ষাকৃত পুরু ধূলিকণার (পিএম ১০) মাত্রা বেশি হলে দমবন্ধ পরিবেশ তৈরি হয়। যা আবার মরসুমি সংক্রমণ ডেকে আনে ও রোগের স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত হয়। এই বছর যেমন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এই বছর সর্দি, কাশি, ভাইরাল জ্বর, সোয়াইন ফ্লু (Swine Flu) এবং H1N1 ইনফ্লুয়েঞ্জা কেস বেশি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, যার অন্যতম কারণ বায়ু দূষণ। দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উদ্বিগ্ন অবশ্যই হতে হবে।

advertisement

উদ্বিগ্ন কেন হতে হবে?

যদিও বায়ু দূষণ এবং ভাইরাল অসুস্থতার মধ্যে প্রকৃত যোগসূত্রের বিষয়ে সেই ভাবে কোনও রিপোর্ট নেই। তবে, বছরের পর বছর ধরে এটা দেখা গিয়েছে যে দূষণ কেবল বাতাসকে নোংরা করে না, এতে অক্সিজেনের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। যার কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাল সংক্রমণ, যেমন নিউমোনিয়া (Pneumonia), ব্রঙ্কাইটিস (Bronchitis), কানের সংক্রমণ এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সংক্রমণগুলি প্রায়ই দূষণের ফলে হয়। যেহেতু বায়ুতে দূষিত পদার্থ (নাইট্রোজেন অক্সাইড, ওজোন, সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড) আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের পথ বন্ধ করে দেয় এবং ফুসফুস এবং শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাই শ্বাসকষ্টের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যখন আমরা আরও নোংরা, দূষিত বায়ু শ্বাস নিই, তখন এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। যাতে সহজেই সংক্রমণর কাছে হেরে যায়। এটাও দেখা গিয়েছে যে গুরুতর দূষণকারী পদার্থগুলি ইমিউন সিস্টেমকে ভারসাম্যহীন করে দিতে পারে। বিশেষ করে ফুসফুসের ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। অবশ্যই, কিছু লোকের অন্যদের তুলনায় অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, তবে দূষণের মাত্রার ক্ষুদ্রতম বৃদ্ধিও আমাদের স্বাস্থ্যকে তীব্রভাবে প্রভাবিত করে।

advertisement

আরও পড়ুন- দিনের মধ্যে ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস, আদৌ তরতরিয়ে কমবে ওজন

কী কী উপসর্গ থাকলে সতর্ক হতে হবে?

বাতাসে উচ্চ মাত্রার ধূলিকণা, ধোঁয়াশা এবং দূষণকারী পদার্থ আমাদের শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমকে অনেকাংশে প্রভাবিত করে এবং এমন একজনের জন্য বিষয়গুলিকে জটিল করে তোলে যিনি ইতিমধ্যেই অন্য সমস্যায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট এবং কাশির পাশাপাশি ভাইরাস অসুস্থতার অন্যান্য কয়েকটি উপসর্গ হচ্ছে- চোখে লালচে ভাব, নাকে ও গলায় জ্বালা, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি (হালকা জ্বর), মাথা ব্যথা, বুকে চাপ ধরা, হাইপারসেনসিটিভিটি এবং এলার্জি, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা। যদি কেউ এই উপসর্গগুলির মধ্যে কোনওটির সম্মুখীন হয়, তবে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যেহেতু এই উপসর্গগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি মরসুমি ফ্লু ও অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণ, দু'টোর ক্ষেত্রেই দেখা যায়। তাই রোগ নির্ণয়ে দেরি হলে সমস্যা বাড়তে পারে।

এই সময়ে মাস্ক পরা কতটা কার্যকর?

কোভিড, ফ্লু বা দূষণ, মাস্ক সব ক্ষেত্রেই প্রাথমিক সুরক্ষা দিতে পারে। মাস্ক স্বাস্থ্য রক্ষা করার অন্যতম সেরা উপায়। তবে, সার্জিক্যাল ও কাপড়ের তৈরি মাস্ক ভাইরাস থেকে কিছু স্তরের সুরক্ষা দিতে পারে, তবে তারা দূষণ থেকে রক্ষা করতে কম কার্যকর। তাই চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন N95 মাস্ক ব্যবহার করার। বিশেষ করে যখন দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে, তখন বাইরে বের হলে এই মাস্ক অবশ্যই পরা উচিত। মাস্ক এমন ভাবে পরতে হবে যাতে নাক এবং মুখ সম্পূর্ণরূপে ঢেকে থাকে।

আরও পড়ুন- প্রজেক্ট ১৫বি কী ? এই প্রকল্পে কী ভাবে ভারতীয় নৌবাহিনী আরও শক্তিশালী হবে, জানুন

অন্য কোন কোন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

বায়ু দূষণ সবচেয়ে ক্ষতিকর হতে পারে ছোট বাচ্চা, বয়স্কদের জন্য এবং যাদের রোগ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে, অন্য গুরুতর অসুস্থতা রয়েছে। দূষণ এমন জিনিস, যেখানে বাড়ির ভিতরে থাকা আর না থাকার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই, তবে সময় বিশেষে বাতাসের মধ্যে ধূলিকণার পরিমাণ ওঠা-নামা করে। যেমন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবচেয়ে কম দূষিত সময়। ভোরবেলা বেশ ধোঁয়াটে এবং ফুসফুসের জন্য খারাপ হতে পারে। এছাড়াও বাড়ির ঘরের ভেতরের ভেন্ট, স্যাঁতসেঁতে জায়গাগুলো পরিষ্কার করতে হবে মাঝেমাঝেই। বায়ু বিশুদ্ধকারী গাছ, ডিভাইজ লাগানো যেতে পারে। বাড়ির বাইরে জল ছিটিয়ে দিতে পারলে ধুলো উড়বে না। তাছাড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা হল, সময় মতো বার্ষিক ফ্লু টিকা এবং অন্যান্য টিকা নিতে হবে।

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Explained | Pollution: মারাত্মক আকার নিয়েছে বায়ু দূষণের মাত্রা, এর জন্যই কি ভাইরাল জ্বরের বাড়বাড়ন্ত
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল