উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শিশুদের সংক্রমণ
আবার বাড়ছে করোনা সংক্রমণ এবং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। নয়ডা এবং গাজিয়াবাদে নতুন করে করোনা আক্রান্তের খবর শিরোনামে আসতে শুরু করেছে। আর সবথেকে বড় কথা হল, এবার নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। কারণ গত দুই দিনে নয়ডা এবং গাজিয়াবাদে প্রায় ২১টি শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। নতুন করে স্কুলগুলিতে আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে। ফলে স্কুল ও বিভিন্ন ক্লাস বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
advertisement
করোনার চতুর্থ ঢেউ?
আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে পূর্ব স্মৃতি। আর ভারতবাসীর মনে ঠিক এক বছর আগের স্মৃতি এখনও তাজা। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ালেও তৃতীয় এবং চতুর্থ ঢেউয়ের কথা আগাম বলেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। চলতি বছরের শুরুতেই ওমিক্রনের দাপটে ভারতে আছড়ে পড়েছিল কোভিডের তৃতীয় ঢেউ। ওমিক্রনের দাপট ততটা গুরুতর না-হলেও জুনে চতুর্থ ঢেউয়ের আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কি এটাই করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের ইঙ্গিত?
আরও পড়ুন : নতুন বছরে নিজেকে শান্ত করুন, জেনে নিন মাথা গরম না করার সহজ উপায়!
শিশুদের টিকাকণের প্রয়োজনীয়তা
আর এই কারণেই শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। যাদের বয়স ১২ বছরের ঊর্ধ্বে, বর্তমানে তাদের ভ্যাকসিন দিচ্ছে সরকার। গত বছর জানুয়ারি মাস থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের ভ্যাকসিনেশন দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল আমাদের দেশের সরকার। তবে তার এক বছর পর অর্থাৎ চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এর পর ঘোষণা করা হয়েছিল যে, ১৬ মার্চ থেকে কোভিড ভ্যাকসিন পাবে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীরাও।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ঘোষণা
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল যে, ১২ বছর অথবা তার বেশি বয়সীদের জন্য ক্যাডিলা হেলথকেয়ারের তৈরি জাইকোভ-ডি কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (DCGI)। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে যে, ভারত বায়োটেক ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের উপর কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালিয়েছে। আর অন্তর্বর্তী নিরাপত্তা এবং ইমিউনোজেনিসিটি ডেটাও জমা দিয়েছে।
মন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII) ২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের উপর কোভোভ্যাক্সের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালিয়েছে। আবার বায়োলজিক্যাল-ই ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের (Explained | Vaccine For Children) উপর ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালিয়েছে। এই সব ট্রায়াল চালানো হলেও অবশ্য মাত্র দুটো ভ্যাকসিনই ১২ বছর বা তার বেশি বয়সীদের উপর ব্যবহারের ছাড়পত্র পেয়েছে। তাই দেখে নেওয়া যাক, ভারতে কোন কোন ভ্যাকসিন নিতে পারবে শিশুরা। শুধু তা-ই নয়, দেশের বাইরের অন্যান্য অংশে কোথায় কোন ভ্যাকসিন কত বয়সের ছেলেমেয়েরা পাবে, সেই বিষয়েও বিশদে আলোচনা করা যাক।
আরও পড়ুন : বর্ষবরণের উৎসবে মাতোয়ারা বাংলা ও বাঙালি! পয়লা বৈশাখের চেনা ছবি রাজ্যজুড়ে! দেখুন...
ভারত:
১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন এবং ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের জন্য বায়োলজিক্যাল ই-এর কোর্বেভ্যাক্স ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
আমেরিকা:
১৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে যাদের বয়স, শুধুমাত্র তাদেরই এখন ভ্যাকসিন দেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বর্তমানে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিনই অনুমোদিত হয়েছে। আর বাচ্চাদের এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিতে হবে বলে খবর।
ব্রিটেন:
৫ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিনের (Explained | Vaccine For Children) দুটি ডোজ দেওয়ার বিষয়ে ছাড়পত্র দিয়েছে ব্রিটেন। বলা হয়েছে, পাঁচ বছর বয়স হয়ে গেলেই শিশুরা প্রথম ডোজ পেয়ে যাবে। আর প্রথম ডোজের ১২ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবে শিশুরা। তাছাড়াও ফাইজার/বায়োএনটেক ভ্যাকসিনের দুটো ডোজই শিশুদের উপর প্রয়োগ করা যাবে বলে ছাড়পত্র দিয়েছে ব্রিটেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন:
ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৬ থেকে ১১ বছর বয়সীদের উপর মডার্নার স্পাইকভ্যাক্স ভ্যাকসিন প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ইউরোপীয় মেডিসিনস এজেন্সি বা EMA। যদিও প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২ বছর বা তার বেশি বয়সীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে বলে আগেই অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
কানাডা:
বাচ্চাদের জন্য দুটো ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে কানাডা। তার মধ্যে রয়েছে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন এবং ৬ থেকে ১১ বছর বয়সীদের জন্য মডার্নার স্পাইকভ্যাক্স ভ্যাকসিন।
ফ্রান্স:
ফ্রান্সও ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড ভ্যাকসিন শিশুদের উপর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে। এই ভ্যাকসিন পাবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী সব শিশুই।
