চলে গেলেন সঙ্গীতের দেবী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। দেশ-বিদেশের শত-কোটি সঙ্গীত অনুরাগী রসিকজনের প্রিয়তমা গায়িকা। নাইটেঙ্গল অফ ইন্ডিয়া, ক্যুইন অফ মিউজিক, দাদা সাহেব ফালকে, ভারতরত্ন, লিজিয়ন অফ অনার- কত নামে, কত সম্মানে বিভূষিত হয়েছেন তিনি। তাঁর সুদীর্ঘ ৭৮ বছরের সঙ্গীত জীবনে। এমন রেকর্ড তাঁর আগেও ছিল না, আর কখনও হবে না। মার্গ সঙ্গীত, গজল, ভজন, লোকসঙ্গীত, আধুনিক হিন্দি, বাংলা, মারাঠি সহ সমস্ত ভারতীয় ও বিদেশি ভাষায় তাঁর গানের ভান্ডার অপরিসীম। বাংলা গানে তাঁকে প্রথম নিয়ে আসেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
advertisement
১৯৫২ সালে বিপ্লবী হেমেন গুপ্ত তৈরি করেন হিন্দী ছায়াছবি- আনন্দমঠ। সুরকার হেমন্ত কুমার। লতা তাদের কথায় রাজি হননি ওই ছবিতে গান গাইতে। অগত্যা হেমন্তবাবু গেলেন লতার কাছে। লতা তাঁকে দেখে বললেন, আপনার নাম শুনেছি। রাজি হয়ে গেলেন গাইতে ‘বন্দেমাতরম’। ২১টি টেকের পরে ওই গান রেকর্ড হল। এখনও পর্যন্ত ওই গানটি প্রায় দেড়শটি বিভিন্ন সুরে তৈরি হয়েছে। কিন্তু লতার বন্দেমাতরম হেমন্ত কুমারের সুরে আজও এক নম্বর। এরপর হেমন্ত মুখোপাধ্যায় লতাকে দিয়ে প্রথম বাংলা গান গাওয়ালেন ১৯৫৬ সালে- ‘ প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’।
আরও পড়ুন: চলে গেলেন সুরসম্রাজ্ঞী, রয়ে গেল সুরেলা-সাম্রাজ্য! শুনুন লতার সেরা গানগুলি...
সলিল চৌধুরী, রবীন চ্যাটার্জি, সুধীন দাসগুপ্ত , এমনকি কিশোর কুমারের সুরেও গান গেয়েছেন লতা। তাঁর বাংলা গানের সংখ্যা ১৮৬। তার মধ্যে অন্তত ১৫০ টি গান আজও সমান জনপ্রিয়। লতার কণ্ঠে হিন্দি সিনেমায় অতীত দিনের যে নায়িকারা লিপ দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম- নিরুপা রাই, ঊষাকিরণ, নার্গিস, কামিনি কৌশল, বৈজয়ন্তীমালা, গীতাবলী, বীণা রাই, নূতন, ওয়াহিদা রেহমান থেকে শুরু করে এ যুগের হেমা, রাখী, রেখা, জয়া, শর্মিলা, জুহি, শ্রীদেবী, মাধুরী, রাণী, কাজল, প্রীতি জিন্টা। যুগ-যুগান্তরকে আর কেউ এইভাবে সমৃদ্ধ করতে পারেননি বিশ্ব সঙ্গীতের জগতে।
আরও পড়ুন: প্রয়াত সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর, ভারতীয় সঙ্গীতজগতে অপূরণীয় ক্ষতি
তিনি অতুলনীয়া। তাই সমস্ত সঙ্গীতপ্রেমী মানুষ আজ শোকাহত, যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আমরা এই মহান আত্মার সদগতি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি। ওম্ শান্তি!