বাড়িতে-বাড়িতে এই কবিতার উচ্চস্বরে আবৃত্তি করছিল ছেলে মেয়েরা। আসলে বিদ্রোহী কবিতা নীরবে পড়ার কবিতা নয়। এই কবিতা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন আমাদের মাথা উঁচু হয়ে যায়। গর্ববোধ হয় নিজের জন্য। অহঙ্কারী সত্তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আমরা যেন আমাদের 'আমি'কে চিনে ফেলি এই কবিতার মধ্য দিয়ে। সেই জন্যই এই কবিতার আবৃত্তিরূপ এত জনপ্রিয় হয়েছিল। কাজী সব্যসাচীর কণ্ঠে এই আবৃত্তির রেকর্ড আবৃত্তি শিল্পের অঙ্গনে প্রথম বাণিজ্যসফল প্রোজেক্ট।
advertisement
কাজী নজরুল ইসলাম এই কবিতাটি অতিপর্ব-সহ ছয় মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দে মুক্তবদ্ধ ছন্দে লিখেছেন। লেখার সময় হাতে তাল দিতে দিতে পেন্সিলে প্রথমে লেখেন। দোয়াতে কলম ডোবাতে গিয়ে হাতের সঙ্গে মাথার তাল রাখতে অসুবিধে হয়। সেই ভেবে পেন্সিলে লেখা। কিন্তু সব্যসাচীর আবৃত্তির মধ্যে সেই ছন্দের প্রয়োগ নেই।
আরও পড়ুন: ছেড়ে গিয়েও ফের রাজের কাছে ফিরলেন পরী, হুমকিও অব্যাহত! ওপার বাংলা তোলপাড়
আজ ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে এই কবিতা আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে এই সময়কে ধরা দরকার ছিল। শোভনসুন্দর বসুর আবৃত্তির মধ্যে তার প্রকাশ লক্ষ করা যাচ্ছে। সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মিউজিক ডিজাইন অতি আধুনিকতার সঙ্গে করা। বিদেশি অর্কেষ্টা ফর্মের মিউজিক।এই কবিতার আবেগ, জ্বলন্ত শব্দের উচ্চারণ, বীরত্ব, শৌর্য প্রকাশ পাচ্ছে এই মিউজকের মাধ্যমে। ছয় মাত্রার তাল বজায় রেখে অতি জমাটি এই আবৃত্তিরূপ দিয়েছেন শোভনসুন্দর।
স্বরের প্রয়োগ, মডিউলেশনের অসাধারন প্রয়োগ রয়েছে এই কবিতার আবৃত্তিতে। তবে এই আবৃত্তির মূলধন হল গতি। নরম মিষ্টি রোম্যান্টিক পংক্তিগুলিতে সুধারস সৃষ্টির আঙ্গিকের অপরূপ ব্যবহার কবিতার রসগ্রহন বাড়িয়ে দিয়েছে। কিছু কিছু পংক্তির কোরাস ব্যবহার বাঙ্ময় করে তুলেছে অনুভবের রসাস্বাদন। আগামীকার ৭ জানুয়ারি প্রকাশ হচ্ছে এই অ্যালবাম রবীন্দ্রসদন মঞ্চে।