‘শক্তি রূপেণ’ ওয়েব সিরিজের কাহিনি, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লিখেছেন অম্লান মজুমদার। পরিচালনা করছেন সুরজিৎ (সাহেব) মুখোপাধ্যায়। সৃজনশীল পরিচালনা এবং প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছেন যথাক্রমে রাজদীপ ঘোষ এবং স্কাইপ্যান কমিউনিকেশনস। তবে এই নতুন ওয়েব সিরিজে রয়েছে আরও একটি চমক। কারণ ‘শক্তি রূপেণ’-র জন্য প্রথম বারের জন্য জুটি বাঁধতে চলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায় এবং বাংলা টেলিদুনিয়ার জনপ্রিয় অভিনেতা নবাব রেজওয়ান।
advertisement
সবথেকে বড় কথা হল, দুই তারকারই ওয়েব দুনিয়ার প্রথম কাজ এটি। বাসবদত্তা এবং নবাব রেজওয়ানের পাশাপাশি এই সিরিজে দেখা যাবে অম্লান মজুমদার, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, স্বর্ণকমল, অঙ্কুর রায়, রানা মুখোপাধ্যায়, সৌমেন দত্ত প্রমুখদের। এছাড়া সিনেম্যাটোগ্রাফি এবং শিল্প নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন যথাক্রমে সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জীব চৌধুরী। আর ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন অদ্রিজা বিশ্বাস।
কলকাতা থেকে ঘণ্টা তিনেকের দূরত্বে ছোট্ট গ্রাম সুটিয়া। যা বরুণ বিশ্বাসের গ্রাম নামে পরিচিত। আজ এই গ্রামের কথা সকলেরই জানা। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিন বছর এই গ্রামে নেমে এসেছিল এক অন্ধকার অধ্যায়। কমপক্ষে ২০০টি ধর্ষণের ক্ষত রয়েছে গ্রামে। ‘শক্তি রূপেণ’ সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্র রিষান এবং দময়ন্তী। রিষানের ছোট্ট বুটিক আছে বৈচি গ্রামে। সেখানকারই ডিজাইনার দময়ন্তী। ফুলিয়ার অনাদিবাবুর তাঁত ঘর থেকে কাপড় নিয়ে ফেরার পথেই তাঁরা ভয়ঙ্কর ঘটনার সম্মুখীন হন। ধীরে ধীরে অন্য দিকে বাঁক নেয় ঘটনা। ঘটতে থাকে একের পর এক খুন। আর তৈরি হয় নানা প্রশ্ন। কিন্তু সুটিয়ার কোনও অতীত কি এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। সেই সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে চলতি মাসেই।
কারণ ফেব্রুয়ারিতেই শুরু হবে এই সিরিজের স্ট্রিমিং। পরিচালক সুরজিৎ (সাহেব) মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “প্রায় ২০ বছরেরও বেশি দীর্ঘ পরিচালক জীবনে ছোট পর্দা-বড় পর্দা মিলিয়ে আমি অনেক কাজের সঙ্গেই যুক্ত থেকেছি। কিন্তু অম্লানের লেখা এই গল্পটি পরিচালনা করতে গিয়ে কোথায় যেন নিজের অজান্তেই ব্যক্তিগত ভাবে ভীষণ জড়িয়ে পড়েছি। গল্পটির প্রেক্ষাপট অম্লান যখন আমাকে শোনান, তখনই আমার বুকের ভিতরটা হা-হা করে উঠে। আমাদের মতো পরিচালকদের রাগ এবং দুঃখ প্রকাশের একটাই মাধ্যম। আজ সেই মাধ্যমের সাহায্যেই আপনাদের সামনে আনতে চলেছি সত্য ঘটনা অবলম্বনে শক্তি রূপেণ”।
অম্লান মজুমদার জানান, সুটিয়ায় ১৯৯৯ সথেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত একের পর এক নারকীয় ঘটনা ঘটেছিল। ৪০ দিনে ৭৯টি ধর্ষণের রেকর্ড রয়েছে এই গ্রামে। সেই তথ্য শুনে চমকে গিয়েছিলেন তিনি। অম্লান মজুমদার আরও বলেন, “এই শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে যেখানে আমরা আধুনিকতার ধ্বজা ওড়াই, সেখানে এর একটা প্রতিবাদ দরকার। কলম না কি তরোয়ালের থেকেও ধারালো- তাই তাকেই সঙ্গী করলাম। ধর্ষণের বিরুদ্ধে এক নারীর গর্জে ওঠার কাহিনিই ‘শক্তি রূপেণ’। ২০২১ সালের এনসিআরবি-র বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, আজও ভারতবর্ষে প্রতি ১৬ মিনিট অন্তর একজন নারী ধর্ষিতা হন। এই কাহিনি সেই পাশবিকতার বিরুদ্ধে আমার নীরব প্রতিবাদ। ক্লিকের সঙ্গে এটি আমার পঞ্চম কাজ। এই রকম সত্য ঘটনা অবলম্বনে কাহিনি নির্মাণ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এই ছবিতে ছোট পর্দা ও থিয়েটার জগতের অনেক প্রতিভারও অভিষেক হবে।”