কারণ শোনা গিয়েছে, যশরাজ ফিল্মস বিভিন্ন সিঙ্গল স্ক্রিনকে ‘নো শো’ নিয়মের প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে ‘পাঠান’ চললে আর কোনও ছবি দেখানো যাবে না। কেউ কেউ সে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, কেউ করেনি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলা ছবি। ক্ষুব্ধ হয়েছেন টলিপাড়ার একাংশ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রযোজক রানা সরকার। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘যেদিন ‘পাঠান’-এর কোনও একটি শো বন্ধ করে সেই শো-তে বাংলা সিনেমা চালানো হবে, সেদিন আমি ‘পাঠান’ দেখব।’ শাহরুখকে যে তাঁর না-পসন্দ, তা একাধিক পোস্টে জানিয়েছেন রানা।
advertisement
কিন্তু পাশাপাশি বহু শিল্পী বলিউড বনাম টলিউডের এই যুদ্ধে নামতেই রাজি নন। যেমন অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। সম্প্রতি ঋদ্ধির একটি পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘পাঠান চলচ্চিত্র হিসেবে কী রকম, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকতে পারে, সেই একই গল্প আরও বেশি অংকের টাকায় বলে চলা, কারও জঘন্য লাগতে পারে, কারও খুব ভালো। কিন্তু পাঠান এই বয়কট মুভমেন্টের গালে একটা বড় চড়। ছবি হিসেবে কেমন সেটা নিয়ে তর্ক থাকুক, থাকবেই। বাণিজ্যিক ছবির ভাষার দিক থেকেও পাঠান এক ঘেয়ে, কিন্তু পাঠান প্রমাণ করল যে কেউ এসে ভারতবর্ষের নাগরিকদের হুকুম করে বলে দেবে না যে তাদের কোন ছবি দেখা উচিত আর কোন ছবি বয়কট করা উচিত। কোনটা সভ্য পোশাক আর কোনটা অসভ্য, কার পদবি কী, কোনটা সৌজন্যবোধ আর কোনটা নয়, গেরুয়া রং পোশাকে ব্যবহৃত হবে না হলুদ।’
বক্তব্য এখানেই শেষ নয়। নিজের পোস্টের তলায় মন্তব্য বাক্সে কৌশিক-পুত্র টলিউডের একাংশকেই কটাক্ষ করেন। তাঁর লেখায়, ‘এখানে বহু বাংলা ছবি অন্য বাংলা ছবিকে হল দিতে চায় না, লোক না হলেও হলে শো ধরে রেখে দিয়েছে বহুবার। দাদাগিরি সব জায়গায় আছে। অন্যের দিকে আঙুল তোলার সময় আমরা ভুলে যাই যে বাকি চারটি আঙুল আমাদের নিজেদের দিকে l আগে বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ রাজনীতি করা বন্ধ করে সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মতো সহানুভূতিশীল হতে শিখুক। পাঠান চললে বাংলার কী, বাঙালির কী বা গুজরাটির কী বা মারাঠির কী, এই ভাবে ভাবা বন্ধ করুন, সিনেমা জিনিসটা কারও নিজের সম্পত্তি নয় যে আমার ভাষার বাইরে কোনও সিনেমা চললে তাতে আমার কোনও লাভ নেই। সিনেমা নিজেই একটা ভাষা। শিল্পে ‘আমরা ওরা’ আমরা তৈরি করি বলেই বহু লোক এই দাদাগিরি করার সুযোগ পায়।’
আরও পড়ুন: টলি বনাম বলি যুদ্ধে নামব না, আগে নিজেদের মধ্যে বিবাদ মিটুক, পাঠান নিয়ে লিখলেন দিলখুশের পরিচালক রাহুল
আরও পড়ুন: 'পাঠান'কে রোখে সাধ্য কার! এবার যা রেকর্ড করলেন কিং খান, কাঁপিয়ে দিল আকাশ-বাতাস
এমনই সময়ে প্রযোজক রানার একটি পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়া। যেখানে তিনি কারও নাম করেননি ঠিকই। কিন্তু দু’টি পোস্টের সময়কাল এবং বক্তব্য পড়ে মনে হতেই পারে, এই পোস্ট ঋদ্ধি বা তাঁর সমমনষ্ক অভিনেতাদের কটাক্ষ করে লেখা।
রানা লিখেছেন, ‘বাংলা সিনেমার যে সমস্ত কর্মীরা বলছেন ভাষা কোনও সমস্যা নয়, সব ভাষার সিনেমা দেখুন, ইত্যাদি বলে নিজেকে মহান প্রমাণ করতে চাইছেন, তারা জেনে রাখুন ‘পাঠান’ সিনেমা বা শাহরুখ খানের সঙ্গে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যেভাবে বাংলা সিনেমাগুলোকে সিনেমা হল থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সকলের সোচ্চারে প্রতিবাদ করা উচিত। যেসব অভিনেতা/অভিনেত্রী ও অন্যরা প্রকাশ্যে হিন্দি সিনেমার পাশে দাঁড়াচ্ছেন এবং বাংলা সিনেমার বঞ্চনার বিরুদ্ধে কথা না বলে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন এতে ভবিষ্যতে আপনাদের পেটেই লাথি পড়তে চলেছে। এরপর প্রযোজক-পরিচালকরা আপনাদের কাজ দেওয়ার প্রশ্নে অবশ্যই এই অসময়ে বাংলা সিনেমার বিরুদ্ধে আপনার ভূমিকা মনে রাখবে। রুজি রোজগারের প্রশ্নে কর্মফল কীভাবে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে তার জন্য অপেক্ষা করুন।’