মাথা ভর্তি কোঁকড়া চুল, পেশিবহুল বিরাট আকারের চেহারার জন্য, দূরদর্শনে মহালয়ার অসুরের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য ডাক আসত অশোকনগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমল চৌধুরীর। দীর্ঘ বছর ধরে কখনও অসুরের ভূমিকায়, কখনও বা যমরাজের অট্টহাস্যতে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন এই অভিনেতা। কিন্তু আজ সে সব অতীত। পুজো আসলেই সোনালি দিনগুলির কথা ভেবে, যেন মন খারাপ হয়ে যায় অমল বাবুর।
advertisement
আরও পড়ুন:
সে সময়, দু’জন টেকনিশিয়ানের নজরে এসে রুপোলি পর্দার যাত্রা শুরু করেছিলেন অমল চৌধুরী। তার সেই চেহারা ও রুপ দেখলে রীতিমতো ভয়ে কাঁপত ছোট শিশুরা। মহালয়ার অনুষ্ঠান ছাড়াও বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যান্য কাজও করেছেন তিনি। প্রথম সারির অভিনেতা-অভিনেত্রী, পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করলেও, আজ সকলের চোখের আড়ালে অমল চৌধুরী। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আর ডাক পান না স্টুডিও পাড়া থেকে। আজ তাঁর দিন কাটছে চরম অভাবে। আগেই গত হয়েছেন দাদা, ছিল অসুস্থ বোন। তিনিও ছেড়ে চলে গেছেন অবিবাহিত অমল বাবুকে। একার সংসারে এখন কোনদিন খেয়ে, কোনদিন না খেয়ে দিন কাটে মহালয়ায় দেখা অমল অসুরের। অভিনয় ভুলে আজ হাতে তুলে নিয়েছেন রং-তুলি।
আরও পড়ুন: গুড় খাবেন নাকি চিনি? কোনটা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল! জানুন চিকিৎসকের মত
হাতেগোনা কয়েকটি আঁকার টিউশনি করেই যা আসে, তা দিয়েই কোনওরকমে চলে দিন গুজরান। পুজো আসলেই অতীতের সেই সময়ের ছবি দেখলে ভারাক্রান্ত হয়ে যায় অমল বাবুর মন। আত্মীয়রাও আজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁর থেকে। মাঝে আবারও টলিপাড়া থেকে এসেছিল ডাক, তবে দুর্ঘটনায় শারীরিক অবস্থার কারণে আর যাওয়া হয়নি বলেও জানালেন অমল চৌধুরী। বয়সের ভারে এখন অনেকটাই হারিয়েছে সেই রূপ। বার্ধক্য থাবা বসিয়েছে জীবনে। তবুও, বড় বড় সেই চোখ ও পাকানো গোঁফ দেখলে চিনতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। অশোকনগরে নাট্য চর্চায় অমল বাবুর অভিনয় সারা ফেলে দিয়েছিল এক সময়।আজ আর মহালয়া অভিনয়ের জন্য ডাক আসে না এই অভিনেতা অসুরের। তাই অসুর সাম্রাজ্য নয়, আজ জীবনের লড়াই চালাতেই যেন হেরে যাচ্ছেন পর্দায় চেনা অভিনেতা অমল চৌধুরী।
Rudra Narayan Roy