রঞ্জিতা সিনহা কিন্তু এ নিয়ে একদমই ভাবেননি। বিগত কয়েক বছর ধরে তাঁর উদ্যোগে এই শহরে ঢাক বেজেছে অর্ধনারীশ্বর দুর্গা পুজোর, যেখানে এক অঙ্গে লীন হয়েছেন হরগৌরী, রয়েছেন সন্তানেরাও। বাংলা মুখের এই একচালা প্রতিমা যেমন সৌকর্যময়, তেমনই তার চোখে ঝরে সংগ্রামের ইতিকথা। মহিষ মর্দনের নয়, বরং যে জীবনযাপনের গ্লানি রোজ পায়ে পিষে পথ চলতে হয় এই শহরের রূপান্তরকামীদের, সে কথাই জানান দেয় এই অর্ধনারীশ্বর পুজো।
advertisement
আরও পড়ুন– দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ; রইল এর উৎপত্তি এবং সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
এবার রঞ্জিতার এই পুজোর মুকুটে যোগ হতে চলেছে একটি পালক, এক তথ্যচিত্র নির্মাণ হতে চলেছে শহরের এই বিশেষ পুজো নিয়ে। কলকাতা ড্রিমস-এর প্রযোজনায় এই তথ্যচিত্র পরিচালনা করবেন মুন সাহা এবং অতনু রায়। অতনু জানিয়েছেন যে তাঁর চিত্রনাট্য তৈরির কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে, ঢাকে কাঠি পড়লেই পুজোর মাঝেই শুরু হয়ে যাবে তথ্যচিত্রের শ্যুটিং। যে পুজোকে ঘিরে এই তথ্যচিত্রের রূপরেখা, তার উদযাপনের মাঝেই তথ্যচিত্রটি শ্যুট করা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন- অন্যদের ফেলে দেওয়া আবর্জনা দিয়েই মাসে ৮ লক্ষ টাকা আয় ! সাফল্যের গল্প শোনালেন মারিয়া
তা বলে এটা ভেবে নেওয়া ভুল হবে যে এই তথ্যচিত্র শহরের দুর্গা পুজো ঘিরে যে অসংখ্য ছবি তৈরি হয়েছে, তারই অন্য এক আঙ্গিক উপস্থাপিত করবে দর্শকের দরবারে। বস্তুত এই তথ্যচিত্র একই সঙ্গে পুজো এবং রূপান্তরকামীদের দৈনন্দিন সংগ্রামের কথাও তুলে ধরবে। সে জন্যই এর নামও রাখা হয়েছে ‘অর্ধনারীশ্বর’। ছবিটি দেশ এবং বিদেশের নানা চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠাবেন বলে মনস্থ করেছেন মুন এবং অতনু।
সঙ্গত কারণেই রঞ্জিতা খুশি। জানিয়েছেন কেন তিনি মত দিয়েছেন এই তথ্যচিত্র নির্মাণে। পুজোর ভিড়ে রূপান্তরকামীদের কথা হারিয়ে যায়, বলা হয় বটে সার্বজনীন দুর্গা পুজো, কিন্তু তাঁদের মতো মানুষরা এখনও এখানে ব্রাত্য, তাঁদের জন্য সমাজ নেই, আছে শুধু এই অর্ধনারীশ্বরের বাৎসরিক পূজার সমারোহ, এ কথা সবার জানা দরকার বলেই মনে করেন তিনি।