৯০ বছরের অসুস্থ বাবাকে ঢাকায় রেখে কলকাতা আসতে হয়েছে চঞ্চলকে। সেরিব্রাল অ্যাটাকে হাসপাতালে ভর্তি রাধাগোবিন্দ চৌধুরী। বাবার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে কলকাতায় নিজের ছবিমুক্তির সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি অভিনেতা। ঢাকায় ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরদিন ফের কলকাতায় আসতে হয় তাঁকে।
প্রথমত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, দ্বিতীয়ত তাঁরই ছবি 'হাওয়া' কলকাতায় মুক্তি। কোন দিক ছেড়ে কোন দিকে যাবেন তিনি? এই কঠিন সময়ে চঞ্চলের পরিবার কী বলছে? নিউজ18 বাংলাকে চঞ্চল বললেন, "এটা তো ভবিতব্য, বাস্তবতা। কিন্তু খারাপ তো লাগে। বাবা অসুস্থ। ওখানে রেখে এসেছি। কিন্তু যে কাজটার জন্য এসেছি, এটা তো একটা সম্মানের। আর পরিবারই বলেছে, তুমি যাও, আমরা তো আছি।"
advertisement
আরও পড়ুন: সৃজিতের ছবিতে চঞ্চল? কবে থেকে শুরু প্রস্তুতি? উত্তর সৃজিতের, বিশেষ তথ্য রাজেরও
এর আগে ফেসবুকে তাঁর লেখায় স্মৃতিচারণার ছোঁয়া পেয়েছিলেন ভক্তরা। বাবাকে নিয়ে তিনি লিখেছিলেন, 'বাড়ির উঠোনেই স্কুল, বাবা সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। যে কারণে স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল ঘর, বই পত্র…সব কিছুকেই পৈত্রিক সম্পত্তি ভাবতাম। ছোট বেলায় যতটা ভালো ছাত্র ছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি দূরন্ত ছিলাম। যদিও রোল নম্বর সব সময়ই এক/দুই/তিনের মধ্যেই থাকত। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই একনামে চিনত, এখনও চেনে। যে কোনও জায়গায় গেলে বাবার ছেলে হিসেবেই বেশি সমাদর পেতাম। কয়েক বছর আগ পর্যন্তও দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই এলাকায় সবাই পরিচিত হতাম।'
আরও পড়ুন: চোখের জলে বুক ভেসে যায়, আমিও ভাল নেই, গুরুতর অসুস্থ বাবাকে নিয়ে কলম ধরলেন চঞ্চল
কিন্তু এখন চঞ্চল চৌধুরী দুই বাংলার উচ্চপ্রশংসিত অভিনেতাদের মধ্যে একজন। সময় বদলেছে। ঘটনাটাও উল্টে গিয়েছে। এখন পরিস্থিতি কীরকম? জানা গেল চঞ্চলের লেখায়।
তিনি লিখলেন, 'বাবাকে একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ''ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি, এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে, তোমার কেমন লাগে?'' বাবা কোনও উত্তর না দিয়ে আমার দিকে শুধু ভেজা চোখে কিছু ক্ষণ তাকিয়ে ছিল। তাঁর সেই গর্বিত মুখটা দেখে, আমার চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সকল সফলতায় বাবা মায়ের যে কী শান্তি, কী আনন্দ… তা আমি দেখেছি। কয়েকটা দিন হলো, বাবা হাসপাতালের বিছানায় অচেতন। চোখের জলে আমাদের বুক ভেসে যায়, আর প্রার্থনা করি, আমার বাবা সুস্থ হয়ে উঠুক। বাবা মাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনও সন্তানই ভাল থাকতে পারে না। আমিও ভাল নেই……।'