কষ্ট করলেই কেষ্ট মেলে, সদিচ্ছা এবং অধ্যাবসায় থাকলে সবই সম্ভব হয়। কুমার শানু কিংবা নচিকেতার জীবনী তুলে ধরলেই জানতে পারা যাবে প্রচণ্ড পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় করেই সফলতা আসে। সেটাই করে দেখাল বাঁকুড়ার এক বালক। নচিকেতা, কুমার শানু এবং বিনোদ রাঠৌরের মতো শিল্পীদের সঙ্গে ডুয়েট গাওয়ার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে বহু প্রতিভাবান শিল্পীর চোখে। তবে সেই স্বপ্ন সবসময় পূরণ হয় না। নচিকেতা চক্রবর্তীর প্রতিবাদমূলক গানে গলা মেলায় হাজার হাজার মানুষ, তবে একই স্টুডিওতে নচিকেতার পাশে বসে গান রেকর্ড করার অভিজ্ঞতা হওয়া কি সহজ কথা! এমনই এক কাজ করেছে বাঁকুড়ার এক খুদে প্রতিভাবান উঠতি গায়ক।
advertisement
তার গানের মূর্ছনা পৌঁছে গিয়েছে নচিকেতা থেকে শুরু করে কুমার শানু এবং বিনোদ রাঠৌর পর্যন্ত। মন ভরে প্রশংসাও করেছেন এই শিল্পীরা। কে এই বিস্ময় বালক, যার সঙ্গে ডুয়েট গাইলেন নচিকেতা এবং কুমার শানু? বাঁকুড়ার ছেলে প্রত্যয় সৎপতি। গানের গলা শুনলে মন্ত্রমুগ্ধ হতে হয়। বাঁকুড়া ডিএভি স্কুলের ছাত্র প্রত্যয় একই ফ্রেমে গান গেয়েছেন রথী মহারথীদের সঙ্গে। ভারতীয় সঙ্গীত জগতে যে সব শিল্পীর কনসার্টে গান শোনার জন্য দিনরাত লাইন দিয়ে টিকিট কাটেন সাধারণ মানুষ, সেই মাপের শিল্পীদের সঙ্গে ডুয়েট পর্যন্ত গেয়েছে এই কিশোর। ক্রিকেট খেলার ভীষণ ইচ্ছে, তার সঙ্গে সঙ্গীতের প্রতি অগাধ অনুরাগ।
খুব ছোট বয়সেই একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় মিউজিক রিয়্যালিটি শো-তে অংশগ্রহণ করে প্রত্যয়। বর্তমানে নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যানেল তৈরি করে গান গেয়ে চলেছে। এরই মধ্যে প্রত্যয় সান্নিধ্য পেয়েছে নামজাদা শিল্পীদের। শুধু তািই নয়, সেই সব শিল্পীদের ভূয়সী প্রশংসাও কুড়িয়েছে বাঁকুড়ার প্রত্যয়।
কুমার শানু বলেন, “আদি (প্রত্যয়ের ডাকনাম) ভাল গায় আমি শুনেছি। আজ আশা করি ভাল গাইবে আমার সঙ্গে।” বিনোদ রাঠৌরের কথায়, “আমার ছোট ভাই আদি আজ খুব ভাল গান গেয়েছে, খুব সুন্দর গান গেয়েছে।”
আরও পড়ুন: ভাষাদিবসের মাসেই চলে গেলেন ভবানীপ্রসাদ মজুমদার, প্রয়াত ‘বাংলাটা ঠিক আসে না’-র কবি
কিন্তু প্রশংসাই সব নয়, প্রত্যয় সৎপতির মা সোমা সৎপতি বলেন, “এখানেই শেষ নয়। আমি চাই আমার ছেলে যেন আরও উঁচু জায়গায় পৌঁছতে পারে।” ব্যাবসার চাপে নিজের দুই ছেলেকে বেশি সময় দিতে পারেন না এই কথাটা অকপটেই শিকার করলেন প্রত্যয়ের বাবা প্রভাত সৎপতি। আদির গান নিয়ে বেড়ে ওঠার পিছনে তার মা এবং দাদা প্রান্তিক সৎপতির অবদান স্বীকার করলেন প্রভাত সৎপতি।
দাদা হিসেবে ভীষণভাবে পাশে থেকেছেন প্রান্তিক। বয়সের ব্যবধানটা দশ বছর হলেও, দুই ভাইয়ের মধ্যে বন্ধুত্বের কোনও ব্যবধান নেই। নিজের অভিজ্ঞতাগুলিকে কাজে লাগিয়ে তার ছোট ভাইকে সঠিক পথে চালনা করে বাঁকুড়ার নাম উজ্জ্বল করাই মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিকের। তিনি বলেন, “ভাই আমার নিজের সন্তানের মতো। আমি চাই ভবিষ্যতে গান নিয়ে আমার ভাই যাতে বাঁকুড়া এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারে।”
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী