গৌরব শুরুতেই লিখছেন, "'অপরাজিত' দেখে অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু কথাগুলো ঠিক গুছিয়ে উঠতে পারছিলাম না। এই ভাবতে ভাবতে হঠাৎ রিয়্যালাইজ করলাম ছবিটা দেখার পর ৫টা দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে ছবিটা দর্শকের মন জয় করে ফেলেছে। লোকে হইহই করে হল ভরিয়ে ছবিটা দেখছেন। বাংলা ছবির জন্যে দারুণ খবর। ছবি যে আমার দারুণ লেগেছে তা বলাই বাহুল্য। এই ধরণের সুস্থ, সিনসিয়ার ছবি সকলের ভালোলাগারই কথা। তবে ব্যাপারটা শুধু ভালোলাগা-তে আটকে থাকেনি।"
advertisement
"সত্যজিৎ রায়-কে নিয়ে আমার ফ্যাসিনেশন বহুদিনের। ফিল্ম ইনস্টিটিউটে পড়ার সময়ে তা আরও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাঁর লেখা এবং তাঁর ব্যাপারে লেখা প্রায় সমস্ত বই পড়ে ফেলেছি। কয়েকদিন আগে আমার বন্ধু চন্দ্রাশিস রায় (ঘটনাচক্রে এই ছবিতে অপরাজিত রায়ের কণ্ঠস্বর যার) আমাকে একটা বই রেকমেন্ড করে - 'My Years with Apu' by Satyajit Ray। আমি বইটা কিনে পড়ে ফেলি," বলছেন গৌরব।
বইটি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে গৌরব বলছেন, "তাতে একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করা আছে যেটা খানিকটা এরকম- অপু বেশে সুবীর ব্যানার্জী তাঁর দিদিকে খুজতে খুজতে আসছেন। এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে। কিন্তু সুবীরবাবু কিছুতেই এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন না। অনেকবার বলা স্বত্ত্বেও হচ্ছে না। তখন সত্যজিৎবাবু একটা উপায় বার করলেন। ইউনিটের সকলে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে পড়লেন আর ঠিক যখন সুবীরবাবু হেঁটে আসছেন তখন একেকদিক থেকে একেকজন তার নাম ধরে ডাকা শুরু করলেন। উনি তাঁদের দিকে তাকাতেই শট পেয়ে গেলেন।"
আরও পড়ুন- 'পল্লবী সেই রাতে থেকে যেতে বলে'! তার পরে কী হয়েছিল, বললেন ঐন্দ্রিলা
এই ঘটনার পুনর্নিমাণ রয়েছে অনীকের অপরাজিততেও। সেটি দেখার সময়ে আবেগে গলার কাছে যেন কিছু আটকে যাচ্ছিল, এমনই বলেছেন গৌরব। তিনি লিখছেন, "ইন্টরেস্টিং ঘটনা। কিন্তু কোনোভাবেই ইমোশনাল নয়। অথচ… এই দৃশ্য যখন 'অপরাজিত' ছবিতে দেখছি তখন বেশ বুঝতে পারছি একটা 'lump in the throat' তৈরি হচ্ছে। একটা হাততালি দেওয়ার প্রবল ইচ্ছে তৈরি হচ্ছে। এই অনুভূতি ব্যাখ্যা করা খুব কঠিন। আর আমার মতে এখানেই এই ছবির সাকসেস। এতো সুন্দর মেকিং, এতো নিখুঁত কাস্টিং, এতো মেদহীন স্ক্রিপ্ট, এতো সাবলীল অভিনয়, যে অন্তর থেকে নাড়া দিতে বাধ্য।"