কলকাতার সিনেমা জগৎ তখন পরিবর্তন নিয়ে একটু বিভ্রান্ত ছিল। তখন সিনেমা মানেই দর্শক বুঝতেন বাণিজ্যিক কিছু ভাল সিনেমা। তবে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায়ের হাত ধরেই প্রথম বাংলা সিনেমায় আসে বিবর্তন। সহজ, সাধারণের গল্প, এবং নিপুণ মহিমায় ছোট ছোট বিষয়কে প্রাধাণ্য দিয়ে তৈরি করা গল্পে নতুন ফ্লেবার পেল বাঙালি। কিন্তু এই নতুন ধারাকে বাংলায় প্রতিষ্ঠা করতে এই পরিচালক যুগলকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল। শিবপ্রসাদ তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, "কলকাতা শহরের কোনো প্রযোজক বোধয় নেই যাদের কাছে ইচ্ছে নিয়ে যাইনি। তারা পরবর্তীকালে এই নিয়ে আমায় সাধুবাদও জানিয়েছেন, কেউ কেউ আফসোসও করেছেন। সাধুবাদ জানিয়েছেন এই কারণে, যে আমরা আমাদের মৎ পাল্টাইনি বলে।"
advertisement
আরও পড়ুন: রণবীর-দীপিকার বন্ধুত্ব নিয়ে আর কোনও অস্বস্তি নেই: আলিয়া
ইচ্ছের সাফল্যের পথ এপদমই সহজ ছিল না। শুধু প্রজোযকরা ফিরে তাকাননি এমনটা নয়, সেই সময় ছিল আরও বেশ কিছু বাধা। ইচ্ছে মুক্তি পেয়েছিল ১৫ জুলাই। সেদিনই আরও দুটি সিনেমা মুক্তি পায় হলে, ' জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা ' এবং ' হ্যারি পটার '। তবে ইচ্ছের প্রথমদিনটা কেমন ছিল?
পরিচালকের কথায়, ইচ্ছে মুক্তি পাওয়ার কথাই ছিলো না, সিনেমা তৈরি হয়েছিল ২০০৮ সালে তার তিন বছর পর অর্থাৎ ২০১১সালে সেটি মুক্তি পায়। শিবপ্রসাদ আজ গর্বের সঙ্গে বলেন, "নানা কারণে সিনেমাটি আটকে ছিল, ইন্ডাষ্ট্রির ভেতরের মানুষরা জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন এই সিনেমা কোনোদিন মুক্তি পাবে না, ভগবান মুখ তুলে চেয়েছিলেন আর আপনারা ভালোবাসা যুগিয়েছিলেন, সাহস যুগিয়েছিলেন তাই মুক্তি পাওয়ার পর ইচ্ছে ১২৫ দিন চলেছিল। প্রথম সপ্তাহে হল পেয়েছিলাম আমরা মাত্র সাতটি, চতুর্থ সপ্তাহে সেই হল গিয়ে দাঁড়ায় সত্তরটি আর বলাই বাহুল্য কোনো মাল্টিপ্লেক্সে ইচ্ছে জায়গাই পায়নি। ইচ্ছে নিয়ে অনেক গল্প আছে, ইচ্ছে অনেক মীথ ভেঙেছিল, ইচ্ছে সাহস যুগিয়েছিল, ইচ্ছে স্বপ্ন দেখিয়েছিল ওড়ার আর তাই আজও সেই সাহস নিয়ে, আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে সিনেমা বানিয়ে যাচ্ছি।"
আরও পড়ুন: রণবীরের নতুন জীবন দর্শন! আগামী ১৫ বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা কাপুর পুত্রের
ইচ্ছের ১১তম বছরে গিয়েও ইচ্ছের গোটা পরিবারকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি পরিচালক। শ্রীমতি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং শ্রী রাকেশ সিং ছবিটি অবশেষে প্রযোজনা করতে এগিয়ে আসেন। বিশেষ করে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে নিয়ে আবেগে ভাসলেন শিবপ্রসাদ। তিনি বলেন, "নিজে অভিনেত্রী হয়েও অভিনেত্রী কেন্দ্রিক কোনো সিনেমাকে নিবেদক হিসেবে নিবেদন করার সাহস বা ইচ্ছে মনে হয় না এর আগে কেউ দেখিয়েছে।"