ঝাড়খণ্ডে জন্ম এবং বৈবাহিক সূত্রে এ বাংলায় থাকা। বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের অনেক গ্রামে এই মেয়েকে সকলেই চেনেন ‘প্যাড উওমেন’ হিসেবে। বিয়ের পর সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। বর্তমানে তিনি ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএমের প্রার্থী। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সামাজিক বিভিন্ন কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত এই গৃহবধূকেই প্রার্থী করেছে লাল দল। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ জল্পনা শুরু হয়েছে।
advertisement
লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | Lok Sabha Election 2024 West Bengal
আরও পড়ুন: ‘হ্যালো, নরেন্দ্র মোদি বলছি…’, মালদহের পঞ্চায়েত সদস্যার কাছে হঠাৎ ফোন! ঘটল অবিশ্বাস্য ঘটনা
তিনি ঝাড়খণ্ডের কন্যা। তবে বর্তমানে তিনি বাংলার গৃহবধূ। তিনি সোনামণি মুর্মু (টুডু)। তিনিই লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী। সাইকোলজিতে অনার্স পাশ করা এবং স্নাতকোত্তর সোনামণিকে এবারে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছে সিপিএম। তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয় পেয়েছেন। এরপর তার মাথায় বাড়তি দায়িত্ব ও চাপ।
আরও পড়ুন: বাংলা-প্রেমী গোবিন্দা! পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে ‘হিরো নম্বর ওয়ানের’ নিজের আলিশান বাড়ি! কোথায় জানেন?
প্রসঙ্গত, কলেজে পড়ার সময় তিনি যুক্ত থাকতেন নানান সামাজিক কাজে। প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে গ্রামীণ মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা মহিলাদের শারীরিক নানান সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতেন তিনি। তাঁকে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের অনেক গ্রাম ‘প্যাড উওম্যান’ বলে জানে। ইউনিসেফের হয়ে আদিবাসী গ্রামে ঘুরে ঘুরে ঋতুস্রাব নিয়ে কিশোরী থেকে সাধারণ মহিলাদের সচেতন করেছেন তিনি। শিখিয়েছেন স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার। ভেঙেছেন সংকীর্ণতার বেড়াজাল।
ঝাড়ঘণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার কোডিয়া গ্রামে জন্ম সোনামণির। এই গ্রাম পুরুলিয়ার বান্দোয়ান লাগোয়া। স্কুলের পড়াশোনা ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ায়। ঘাটশিলা কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞান (সাইকোলজি) নিয়ে অনার্স। তার পরে জামশেদপুরে স্নাতকোত্তর। কলেজে পড়ার সময় থেকেই তিনি নানান সামাজিক কাজকর্মে যুক্ত ছিলেন। প্রান্তিক আদিবাসী এলাকায় মানুষকে সচেতন করাই ছিল তার লক্ষ্য। তবে বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে।
পঞ্চায়েত ভোটে শ্বশুরবাড়ির এলাকা আসনপানিতেই গ্রাম সংসদে দাঁড়িয়ে সিপিএমের হয়ে জিতেছেন সোনামণি। এখন তিনি পঞ্চায়েত সদস্যা। পঞ্চায়েত থেকে সোজা লোকসভার লড়াইয়ে! উল্লেখ্য, বান্দোয়ান বিধানসভা পড়ে ঝাড়গ্রাম লোকসভার মধ্যে। তবে সোনামণি বলেন, সাধারণ মানুষের কাজ করা, সংসদে গিয়ে এলাকার জন্য উন্নয়ন এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নানান দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার লড়াই। বর্তমানে যারা বেকার যুবক-যুবতীরা কাজ পাচ্ছে না তাদের জন্য কাজ হাসিল করাই তার ভোটে দাঁড়ানোর লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত একসময়ের লালের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল ঝাড়গ্রাম। পালা বদলে হয় সবুজ তারপর ধীরে ধীরে প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়ায় গেরুয়া দল তবে বর্তমানে সোনামণি লাল দলের প্রার্থী। সোনামনির বাড়িতে শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী এবং এক ছেলে রয়েছে। সংসার সামলে তিনি সামলান হোম স্টে। তবে অবশ্য আশাবাদী নেতৃত্বরা। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিনহা বলেন, অত্যন্ত দক্ষ এবং শিক্ষিত সোনামণি। বেশ কয়েক বছর ধরেই সাধারণ মানুষের কাজ করেছেন। জঙ্গলমহলের প্রান্তিক গ্রামে গিয়ে মানুষদের সমস্যার সমাধান করেছেন তিনি। ভোটে জয়লাভ করে মানুষের হয়ে কাজ করবেন তিনি।
রঞ্জন চন্দ