আইনি নির্দেশাবলী মেনে চলা:
আইনি অবস্থা বা লিগ্যাল স্টেটাস বজায় রাখার মূল বিষয়গুলির মধ্যে একটি হল পড়াশোনার সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমে নথিভুক্ত হওয়া এবং ডিগ্রি সম্পূর্ণ করা। ফ্লরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর গ্লোবাল এনগেজমেন্টের সহযোগী পরিচালক ক্রিস্টেন হেগেন (Kristen Hagen-এর মতে, পড়ুয়ারা যখন নিজেদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী উপদেষ্টার আগাম অনুমতি না-লাভ করেই সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন, তখন তাঁরা তাঁদের আইনি অবস্থা বজায় রাখতে ব্যর্থ হন। আর সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়ে ক্লাসে নিজের নাম নথিভুক্ত করতেই হবে। অথবা আইনি অবস্থান বজায় রাখার জন্য ক্লাসে নিজের নাম নথিভুক্ত না-করার ক্ষেত্রে কিন্তু আগাম অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে। তবে শুধুমাত্র বার্ষিক ছুটির ক্ষেত্রেই ছাড় রয়েছে। সিবিপি অ্যাটাশে অফিসের মতে, “একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী স্বাভাবিক ভাবেই নিজের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, ভাষা, পরিবার এবং বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকেন। ফলে নতুন পরিবেশেের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকী তা কখনও কখনও কঠিনও হয়ে ওঠে। তাই পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হলে শিক্ষার্থী পাঠ্যক্রমের বোঝা কমানোর জন্য আবেদন জানাতে পারেন।
advertisement
আরও পড়ুন: করোনার সময়ে বিদেশে কীভাবে পড়াশুনা চালিয়েছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা? শুনুন অভিজ্ঞতা...
তবে এ ক্ষেত্রেও কিন্তু নিজের আন্তর্জাতিক ছাত্র উপদেষ্টার অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে।” শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফল খুব খারাপ হলে সেটাও তাঁর আইনি অবস্থা বা লিগ্যাল স্টেটাসের উপর প্রভাব ফেলে। এই প্রসঙ্গে হেগেন বলেছেন, “একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় খুব কম নম্বর পেলে তাঁকে পাঠ্যক্রম থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া না-ও হতে পারে। ফলে সেক্ষেত্রে তিনি হারাবেন তাঁর লিগ্যাল স্টেটাস।” F-1 ভিসায় থাকা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা এবং ছুটির দিন আরও বেশি কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। যদি একজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ২০ ঘন্টার বেশি সময় ধরে কাজ করেন বা তাঁদের আন্তর্জাতিক ছাত্র উপদেষ্টার কাছ থেকে পূর্বানুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করেন, তাহলে তাঁরা গুরুতর ভাবে তাঁদের আইনি অবস্থা লঙ্ঘন করবেন। সিবিপি অফিসের মতে, “এক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে জরিমানা-সহ ভিসা বাতিল করার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অপসারণও করা হতে পারে। নিয়ম লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে, যে শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়া হবে, তিনি পরবর্তী সময়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় প্রবেশ করতে পারবেন না।“
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষার জন্য ভিসার ইন্টারভিউতে ডাক পেয়েছেন? রইল কনস্যুলার অফিসারদের পরামর্শ
আমেরিকায় থাকার সময়সীমা বৃদ্ধি:
পড়াশোনা শেষ করার পর, F-1 ভিসায় থাকা শিক্ষার্থীরা ৬০ দিনের জন্য এবং J-1 ও M-1 ভিসায় থাকা শিক্ষার্থীরা ৩০ দিনের জন্য বৈধ ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারেন। F-1 ভিসায় থাকা শিক্ষার্থীরা স্নাতকের পর ঐচ্ছিক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের (OPT) জন্য আবেদনও করতে পারেন। OPT-এর জন্য আবেদন করার সময়, শিক্ষার্থীদের সময়মতো নিজেদের আবেদন জমা দিতে হবে। হেগেন বলেছেন, “USCIS-কে ৬০ দিনের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ার আগে আবেদনটি গ্রহণ করতে হবে৷ OPT ছাড়া অথবা OPT-এর পরেও, শিক্ষার্থীরা অন্য ডিগ্রীর জন্য নথিভুক্ত করে বা চাকরির জন্য আবেদন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের লিগ্যাল স্টেটাস বজায় রাখতে সক্ষম হতে পারেন।
সাপোর্ট সিস্টেম:
সিবিপি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, “কিছু পরিস্থিতিতে একজন শিক্ষার্থীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর থাকার মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়। সাধারণত অন্য স্কুলে স্থানান্তর, শিক্ষার স্তরে পরিবর্তন – যেমন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন বা F-1 থেকে পরিবর্তনের জন্য আবেদন করার জন্য মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি পাওয়া যেতে পারে।“ একটি মার্কিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লিগ্যাল স্টেটাস বা আইনি অবস্থা বজায় রাখার মূল উপাদান হল নিজের আন্তর্জাতিক ছাত্র উপদেষ্টার পরামর্শ নিয়ে কাজ করা। হেগেন বলেছেন, “একজন উপদেষ্টা I-20 ইস্যু করতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, এই উপদেষ্টারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে তাঁদের F-1 নন-ইমিগ্রেন্ট স্টেটাসের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ বিধিবিধান সম্পর্কেও অবহিত করতে পারেন। এমনকী F-1 স্টেটাসের সুবিধা কীভাবে নিতে হয়, সেই বিষয়েও শিক্ষার্থীদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাঁরা।”