US Study|| করোনার সময়ে বিদেশে কীভাবে পড়াশুনা চালিয়েছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা? শুনুন অভিজ্ঞতা...

Last Updated:

US Study: মহামারী চলাকালীন আমেরিকায় পড়াশোনা করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত চার ভারতীয় শিক্ষার্থী।

#নয়াদিল্লি: দু’বছর আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের গোড়ার দিক থেকে গোটা বিশ্ব জুড়েই তাণ্ডবলীলা চালাতে শুরু করেছিল মারণ করোনা ভাইরাস। সেই সময় অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বিদেশে পাঠরত পড়ুয়াদের। বিশ্বব্যাপী মহামারী চলাকালীন বহু বিশ্ববিদ্যালয় ভার্চুয়াল শিক্ষার পরিবেশে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। আর করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করার কারণে ধীরে ধীরে বদলে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক সফরের প্রয়োজনীয়তা। যদিও পরিস্থিতিকে সর্বোত্তম করতে, ধারাবাহিক ভর্তি নিশ্চিত করতে, পাঠ্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা বজায় রাখতে এবং স্নাতকোত্তর কর্মসংস্থানের জন্য শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধানে সহায়তা করতে একযোগে কাজ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীরা। মহামারী চলাকালীন আমেরিকায় পড়াশোনা করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত চার ভারতীয় শিক্ষার্থী।
কুসুমা নাগরাজা (Kusuma Nagaraja) ভারতে বেশ কয়েক বছর পারিবারিক আইন অ্যাটর্নি হিসাবে কাজ করেছেন এবং মহামারীর কারণে প্রাথমিক ভাবে তাঁর উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। তিনি ২০২১ সালে আইনে স্নাতকোত্তর পাঠের জন্য ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিসে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই সময় ভার্চুয়াল ক্লাস চলার কারণে তিনি বেঙ্গালুরুতে নিজের বাড়িতে বসেই সেই ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কুসুমা বলেন, মহামারীর প্রকোপ চলাকালীন ভারত থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত এবং ভিসার উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তার ফলে ভারতে নিজের বাড়িতে বসেই পড়াশোনা শুরু করতে হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু ক্লাস মিস করেন কুসুমা। তবে অবশ্য ক্লাসের পঠনপাঠন যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের মিস না-হয়ে যায়, তার জন্য সেই ক্লাসগুলি রেকর্ড করা হতো। ফলে প্রথম দিকের ক্লাস মিস হলেও পরে পঠনপাঠনের বিষয়ে জানতে কোনও অসুবিধা হয়নি কুসুমার।
advertisement
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষার জন্য ভিসার ইন্টারভিউতে ডাক পেয়েছেন? রইল কনস্যুলার অফিসারদের পরামর্শ
আবার প্রথম যাদব (Pratham Jadav) ছিলেন মুম্বইয়ের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং সেন্ট অ্যান্ড্রু’স কলেজের ছাত্র। তিনি ২০২০ সালে আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ব্যবসায়িক বিশ্লেষণ বিষয়ে স্নাতকের পাঠ শুরু করেন। প্রয়োজন অনুযায়ী, তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে এবং ভার্চুয়াল ভাবে অর্থাৎ উভয় পদ্ধতিতেই ক্লাস করতে হয়েছিল। প্রথম বলেন, ল্যাব এবং অন্যান্য কিছু ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হত। ওই সময় সেখানে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা এবং মাস্ক পরার মতো কঠোর স্বাস্থ্যবিধি জারি ছিল। অন্য দিকে আবার, ভার্চুয়াল ক্লাসের ক্ষেত্রে মানিয়ে উঠতেই বেশ সময় লেগেছিল তাঁর। কারণ হিসেবে প্রথম বলেন, ওই সময় ভার্চুয়াল ক্লাসের জন্য সহপাঠীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে একটু বেশিই সময় লেগে গিয়েছিল।
advertisement
advertisement
ঠিক এই একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন শিবনা ​​সাক্সেনা (Shivna Saxena)-ও। প্রাথমিক ভাবে ভার্চুয়াল ক্লাসে অভ্যস্ত হওয়ার বিষয়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে হয়েছিল তাঁরও। ২০২১ সালে সেন্ট্রাল ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে পাবলিক হেলথ বিষয়ে স্নাতক প্রোগ্রাম শুরু করেছিলেন শিবনা৷ তিনি বলেন, “ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন। কিন্তু সমস্ত প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং জুমের মতো দারুণ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পড়াশোনার প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল।” শিবনার আরও বক্তব্য, “জুমের ব্রেক-আউট রুমের সাহায্য নিয়ে অধ্যাপকেরা বিভিন্ন আলোচনা এবং পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আমাদের পড়াতেন, যার ফলে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। এছাড়া পড়ার সময় কোনও কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে, ই-মেলের মাধ্যমে আমরা অধ্যাপকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতাম। আর অধ্যাপকেরাও সময় মতো সেই জায়গাগুলো সুন্দর ও সহজ ভাবে বুঝিয়ে দিতেন।”
advertisement
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে পৌঁছে ভারতীয় পড়ুয়ারা কী মাথায় রাখবে? জানুন...
২০২০ সালে অর্থাৎ যে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহামারীর জেরে লকডাউন জারি করা হয়, সেই সময় সাউথ ফ্লরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষ এবং আণবিক জীববিজ্ঞানে স্নাতকের পাঠ নিচ্ছিলেন সোনাল সুজান (Sonal Sussane)। তিনি জানান, তাঁদের পাঠ্যক্রমের ক্লাসগুলি যাতে নির্ধারিত সময়ে হয় এবং শিক্ষার্থীরা যাতে এই নতুন ভার্চুয়াল শিক্ষার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এই বিষয়ে অনেক পরিকল্পনা বানাতে হয়েছিল। সোনালের কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের শেখার অভিজ্ঞতাকে আরও ভালো করার জন্য নানা উদ্ভাবনী উপায় নিয়ে এসেছিল। উদাহরণস্বরূপ, জেনেটিক্স ল্যাবে শিক্ষার্থীরা অনলাইন সিম্যুলেশন করেছেন। আবার জৈব রসায়ন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা হয়েছিল একটি খেলার মাধ্যমে। যেখানে একটি অ্যাপে গেম খেলতে হয়েছিল আমাদের। সেই গেম-এর মধ্যেই লুকিয়ে ছিল আসল বিষয়। আসলে ওই গেমের মাধ্যমে আমাদের ভিন্ন ভিন্ন অণু গড়ার জন্য বন্ড তৈরি করতে এবং ভাঙতে হত।“
advertisement
মহামারীর কালে মনঃসংযোগ ঠিক রাখার জন্য আরও কিছু বিষয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন এই ছাত্রছাত্রীরা। কুসুমা বলেন, বাড়িতে পড়শোনায় মন দিতে এবং আরও ভালো ভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কিছু মজাদার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হয়েছিল। যেমন- যোগব্যায়াম তো সেই সময়ের সঙ্গী ছিলই। এর পাশাপাশি রান্নাবান্না এবং বেকিংয়ের মতো টুকিটাকি কাজেও নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলাম। শুধু তা-ই নয়, সহপাঠীদের সঙ্গে বন্ধুত্বও গড়ে উঠতে বিশেষ সময় লাগেনি। কারণ তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ভার্চুয়াল ইভেন্টেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যেখানে তাঁরা একসঙ্গে গেম খেলতেন, কারিওকি গাইতেন এবং বিভিন্ন মিট ও শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানেও ভার্চুয়াল ভাবে উপস্থিত থাকতেন।
advertisement
স্বাস্থ্যের সামাজিক, মানসিক, শারীরিক, পরিবেশগত দিকগুলি কীভাবে জীবনের মানের উপর ছাপ ফেলে, তা বোঝার জন্য শিবনাও তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাব এবং বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ইভেন্টে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করতেন। আবার সোনালের গল্পটা একটু অন্য রকম। ওই ভয়ানক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী এবং তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পড়াশোনার বাইরে একটি ফুড ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সোনাল। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “সেই টালমাটাল পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি খুইয়েছিলেন। ফলে তাঁরা বাড়ি ভাড়া পর্যন্ত দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন। এমনকী দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেও অক্ষম ছিলেন তাঁরা। তাই এই ধরনের মানুষকে সাহায্য করার জন্যই মূলত এই ফুড ব্যাঙ্কের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷” ওই সময় সোনালরা প্রায় দুশোরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে সাহায্য করেছিলেন।
বাংলা খবর/ খবর/চাকরি ও শিক্ষা/
US Study|| করোনার সময়ে বিদেশে কীভাবে পড়াশুনা চালিয়েছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা? শুনুন অভিজ্ঞতা...
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement