উচ্চ মাধ্যমিকের পর উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতায় তার বাবার কাছে চলে যায় শুভ্রজ্যোতি। এই প্রসঙ্গে শুভ্রজ্যোতি জানিয়েছে, “দীনবন্ধু এন্ড্রিউস কলেজ থেকে আমি আমার গ্রাজুয়েশন করেছি। তারপর ভাগ্যবশত আমি নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছিলাম। সেখানে আমি আমার মাস্টার্স করেছি। তারপর নেট,গেট এসব পাওয়ার পরে আইআইটি গুয়াহাটিতে যাই এবং সেখানে ডক্টর শ্যাম প্রসাদ বিশ্বাসের অধীনে আমার ডক্টরের রিসার্চ কমপ্লিট করি। সেই সময় আমি ভারতেও প্রাইম মিনিস্টার রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়েছিলাম।এখন জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসর নবুহিরো ইয়ানায় এর অধীনে পোস্ট ডক্টর করার সুযোগ এসেছে। আমি এটা পেয়েছি ঠিক আছে কিন্তু আমি অতটাও খুশি নই। আরও বড় কিছু করতে হবে আমাকে।”
advertisement
শুভ্রজ্যোতির বাবা কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। মা গৃহবধূ।পরিবারে সদস্য বলতে বাবা ,মা এবং ঠাকুমা, দাদু। ছেলেবেলা থেকে তার দাদু তাকে পড়াশোনায় সাহায্য করেছে বলেও জানিয়েছে সে। পরিবারের সহযোগিতায়, নিজস্ব মেধা এবং অধ্যাবসায় বাড়ির চাষের কাজ সামলেও আজ সফলতার সিঁড়িতে পা রাখতে পেরেছে কাটোয়ার রায়রপাড়া গ্রামের এই ছেলেটা। ছেলের জন্য গর্বে চোখে জল শুভ্রোজ্যোতির মায়ের। কান্না ধরা গলায় তিনি জানান, “পড়াশোনার পাশাপাশি আমার ছেলে মাঠে ধান তোলার কাজ থেকে শুরু করে মাথায় করে তিল, সর্ষেও বয়ে এনেছে। আমার ছেলে বিদেশ যাচ্ছে এতে আমি অনেক খুশি হয়েছি। ও আরও বড় হোক এই কামনা করব।”
শুভ্রজ্যোতির কথায়, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাও করত সে। বর্তমান সময়ের অভিভাবকদেরও সেই বার্তাই দিতে চেয়েছে ডা. শুভ্রোজ্যোতি ঘোষ। শুভ্রজ্যোতির কথায়, জীবনে বড় হতে গেলে সবটাই প্রয়োজন। পাশাপাশি সে আরও জানিয়েছে, বহু গুণী মানুষের সান্নিধ্য তাকে এই জায়গায় আসতে সাহায্য করেছে। প্রসঙ্গত, জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সে যে গবেষণার কাজে যাচ্ছে তার জন্য গোটা বিশ্বের মোট ১১ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে পূর্ব বর্ধমানের শুভ্রজ্যোতি একজন। শুভ্রজ্যোতি জানিয়েছে, এনার্জি ক্রাইসিস সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্যই সেখানে যাচ্ছে সে। তবে জাপান ছাড়াও, আমেরিকা, চায়নার মতো দেশ থেকেও তার কাছে সুযোগ এসেছিল। আপাতত, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করে ভবিষ্যতে আরও বড় লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে চায় কাটোয়ার রায়েরপাড়া গ্রামের শুভ্রজ্যোতি ঘোষ।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী