TRENDING:

Madhyamik 2022 : কোভিডে প্রিয়জনকে হারানোর দুঃখ নিয়েই বসতে হচ্ছে মাধ্যমিকে? মন শক্ত করার উপায় বললেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

Last Updated:

Madhyamik 2022 : মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষার আগে ভয়ে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে হাত পা? পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের উদ্বেগ দূর করার উপায় বললেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুব্রত সাহা৷ নিউজ18 বাংলার হয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন অর্পিতা রায়চৌধুরী

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
দু’ বছর অনলাইনে পড়াশোনার পর জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা অফলাইনে৷ এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার (Madhyamik 2022 ) ঠিক আগে পরীক্ষার্থীদের ভয় কাটিয়ে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে কী বলবেন?
Neuropsychiatric Subrata Saha
Neuropsychiatric Subrata Saha
advertisement

দেখুন, এ ক্ষেত্রে কিন্তু ইনস্ট্যান্ট রেমিডি বা তৎক্ষণাৎ উপশম বলে কিছু হয় না৷ রাতারাতি ভয় কমিয়ে দেওয়া, তাও আবার ওষুধ ছাড়া কার্যত অসম্ভব৷ তবে কিছু উপায় অবশ্য আছে৷ আমরা যেটা করতে পারি, সেটা হল রিল্যাক্সেশন টেকনিক৷ সেখানে আমরা ক্রমান্বয়ে মাসল কনট্র্যাকশন ও মাসল রিল্যাক্সেশন করতে পারি৷ এর ফলে উদ্বেগজনিত যে যে সমস্যা আমাদের দেহে দেখা যায়, সেগুলি কমে যায়৷ আমরা রিল্যাক্সেশন করতে পারি৷ এছাড়া বলব, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম প্রয়োজন৷ রাতে ৬ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে৷ নজর দিন খাবারেও৷ প্রাতরাশে সবথেকে বেশি খাবার, তার পর দুপুরে একটু হাল্কা এবং রাতে সবথেকে কম খান৷ আর শুধু বইয়ের মধ্যে মুখ গুঁজে থাকা নয়৷ যে কাজে রিল্যাক্সেশন পাওয়া যায় সেগুলি করতেই হবে৷

advertisement

মানে নিজের শখ বা পছন্দের কাজ  তো?

সে তো নিশ্চয়ই৷ সেইসঙ্গে বাড়িতে বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলা, দাদা দিদি যারা বিগত কয়েক বছরে মাধ্যমিক দিয়েছে, তাদের সঙ্গে পরীক্ষার অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা-এ সবও করলে মন হাল্কা থাকবে৷ তাহলে ভীতি অনেকটা কেটে যাবে৷ বাড়িতে পোষ্য থাকলে, তার সঙ্গে খেলা করো৷ তাহলেও উদ্বেগ কম হবে৷

advertisement

এ বছরের অনেক পরীক্ষার্থীই গত দু’ বছরে প্রিয়জনকে হারিয়েছে৷ সেই শোক যাতে পরীক্ষার ফলে প্রভাব না ফেলে, তার জন্য কী করণীয়?

প্রিয়জনকে হারালে আমাদের যে শোকজনিত আচরণ হয়, তাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় গ্রিফ রিঅ্যাকশন৷ এই পর্ব সাধারণত স্থায়ী হয় চার সপ্তাহ৷ যাদের চার সপ্তাহের বেশি এই পর্ব থেকে যায়, তাকে আমরা প্যাথোলজিক্যাল গ্রিফ বলি৷ সেটা কিন্তু আমরা রোগ হিসেবে গণ্য করি৷ স্বজন হারানোর বেদনা তো থাকবেই৷ কিন্তু সেই বেদনা যদি কারওর স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত করে, তাহলে আমরা তাকে রোগ হিসেবে ধরব৷ এবং সেক্ষেত্রে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৷ ইতিমধ্যেই সেটা নিয়ে থাকলে খুব ভাল৷ যদি না নেওয়া হয়, তাহলে আমাদের অন্যভাবে ভাবতে হবে৷ যে প্রিয়জনকে হারিয়েছ, মনে করো তোমার মাধ্যমিকের রেজাল্ট তাকে উৎসর্গ করবে৷ তোমার পরীক্ষার ফলাফল প্রয়াত প্রিয়জনদের উদ্দেশে নিবেদন৷ এ ভাবে ভাবলে কিন্তু মনের ভিতর থেকেই ভাল ফল করার ইচ্ছে আসবে৷

advertisement

আরও পড়ুন : মরশুমি রোগ থেকে দূরে থেকে মাধ্যমিক দিতে কেমন হবে পরীক্ষার্থীর ডায়েট? জানালেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ

বাবা মায়ের ভূমিকাও একটু বলুন৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়, বাবা মা তাঁদের জীবনের অপূর্ণ সাধ সন্তানদের ভিতরে পূর্ণ করতে চান৷ ফলে একটা প্রত্যাশা থাকে৷ অথবা, কেউ হয়তো ভাবলেন যে আগের ব্যাচও তো অনলাইনে ক্লাস করেছে, কিন্তু তাদের অফলাইন পরীক্ষা দিতে হয়নি৷ অথচ আমার সন্তানকে দিতে হচ্ছে৷ তার প্রস্তুতি আশানুরূপ হল না-এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্তি আসবে কী করে?

advertisement

প্রথমেই প্রস্তুতির কথা বলি৷ ফার্স্ট বয় বা ফার্স্ট গার্লেরও কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন মনে হয় প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ৷ তার পর পরীক্ষার হলে বসে কিন্তু তার হাতের কলম তরতরিয়ে এগিয়ে চলে৷ আর প্রত্যাশিত রেজাল্ট? যে প্রথম স্থান পেয়েছে, তারও মনে হয় আরও কিছু নম্বর পেতাম আমি৷ সেক্ষেত্রে ভাবুন, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার ফলাফলে প্রত্যাশা কিছু বাকি থাকলে ক্ষতি নেই৷ কারণ তাহলে বরং মোটিভেশন থাকবে৷ জীবনের পরবর্তী বড় পরীক্ষাগুলির জন্য৷ আর অনলাইন-অফলাইন পরীক্ষা নিয়ে ভেবে লাভ নেই৷ কারণ জীবনের লম্বা দৌড়ে কিন্তু অফলাইন পরীক্ষাই বেশি গুরুত্ব পাবে৷ তাই এভাবে ভাবুন যে অফলাইন পরীক্ষা অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ৷

আর জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় ফল আশানুরূপ না হলে আত্মতুষ্টিরও জায়গা থাকে না বোধহয়৷

একদমই তাই৷ সন্তানকে বোঝান যে মাধ্যমিক জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা৷ কিন্তু এর থেকে আরও বড় পরীক্ষা, আরও কঠিন বাধা আসবে তোমার জীবনে৷ সেগুলিও পার হতে হবে একে একে৷ তোমাকে আরও অনেক এগিয়ে যেতে হবে৷

আরও পড়ুন : ‘অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ না করে মনোনিবেশ করো বর্তমানেই’, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বললেন মনোবিদ শ্রীময়ী তরফদার

এত সব কিছুর পরও পরীক্ষা নিয়ে একটা ভীতি থেকেই যায়৷ মনে হতে থাকে, কিছুই পারব না লিখতে৷ এই দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে উঠব কী করে?

এখানে স্বাভাবিকতা ও অস্বাভাবিকতা দুই-ই আছে৷ পরীক্ষাভীতি বা এক্সামফোবিয়া অল্পবিস্তর সকলের থাকে৷ এই উদ্বেগ স্বাভাবিক৷ কিন্তু ভয় কাটিয়ে যখন সে লিখতে শুরু করে, তখন সেটা আর অস্বাভাবিক থাকে না৷ সেটাকে আমরা বলব নর্ম্যাল অ্যাংজাইটি বা পারফরম্যান্স অ্যাংজাইটি৷ এই টুকু না থাকলে কিন্তু প্রস্তুতির মোটিভেশন আসবে না৷

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
হাতে ডিম নিয়েই ৩৩১বার ঘুসি! গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম বারাসতের দেবজ্যোতির
আরও দেখুন

কিন্তু অ্যাংজাইটি বাড়াবাড়ি হয়ে গেলে তার জেরে হয়তো বাড়ি থেকে পরীক্ষা দিতে গেলামই না৷ সেটা অস্বাভাবিক৷ এই প্রবণতা কিন্তু মাধ্যমিকের আগে হঠাৎ করে আসবে না৷ তার আগে স্কুলজীবনেও এই প্রবণতা দেখা দেবে৷ সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে৷ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ দিয়ে হয়তো উদ্বেগ সাময়িকভাবে কাটল৷ কিন্তু সেই উদ্বেগ আবার ফিরে আসতে পারে৷ তাই এই অস্বাভাবিক পরীক্ষাভীতির দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা সঠিক সময়ে হওয়া প্রয়োজন৷ উদ্বেগ থাকুক পারফরম্যান্স অ্যাংজাইটির জোয়ার হয়েই৷ তাতে মঙ্গল৷ কিন্তু সেই জোয়ার ছাপিয়ে বাঁধভাঙা বন্যা হলেই বিপদ৷ তাই বাবা মায়েরা সন্তানের উদ্বেগের দিকে খেয়াল রাখুন স্কুলজীবনের শুরু থেকেই৷ যাতে বড় পরীক্ষার আগে আচমকা বিপদের মুখোমুখি হতে না হয়৷

বাংলা খবর/ খবর/চাকরি ও শিক্ষা/
Madhyamik 2022 : কোভিডে প্রিয়জনকে হারানোর দুঃখ নিয়েই বসতে হচ্ছে মাধ্যমিকে? মন শক্ত করার উপায় বললেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল