Madhyamik 2022 : ‘অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ না করে মনোনিবেশ করো বর্তমানেই’, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বললেন মনোবিদ শ্রীময়ী তরফদার

Last Updated:

Madhyamik2022: হাজির মাধ্যমিকের মাস৷ এ বার পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে টানা দু’ বছর বাড়ি থেকে অনলাইনে ক্লাস করার পর৷ তাদের ভীতি কাটানোর উপায় বললেন অধ্যাপিকা তথা মনোবিদ শ্রীময়ী তরফদার৷ নিউজ18-এর হয়ে তাঁর সঙ্গে কথা অর্পিতা রায়চৌধুরী

Psychologist Sreemoyee Tarafder
Psychologist Sreemoyee Tarafder
দু’ বছর ধরে অনলাইনে পঠনপাঠনের পর আচমকা অফলাইনে পরীক্ষা-এই ধাক্কাটা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা মানসিকভাবে কী করে সামলাবে?
আমরা নিউ নর্মালে ছিলাম এই দু’ বছর৷ সেখান থেকে আবার ফিরছি পুরনো ছবি, অর্থাৎ নর্মালে৷ আমাদের মনে রাখতে হবে এই ছবিটা কিন্তু আগেও ছিল৷ আমরা জানতাম একদিন আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব৷ মাঝে দু’ বছর ওলটপালট হয়ে গিয়েছে কোভিডের জন্য৷ কিন্তু আবার পুরনো চেনা ছবিতে ফেরার জন্য ভয় কাটিয়ে উঠতে হবে৷
advertisement
কীভাবে ভয় কাটাবে ছাত্রছাত্রীরা?
advertisement
একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে চারপাশের পরিবেশ অনুযায়ী আমাদের নিজেদেরকে পাল্টাতে হবে৷ পরিবেশ কিন্তু আমাদের সুবিধে অসুবিধে অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন করবে না৷ এটাই আদি অনন্তকাল ধরে হয়ে এসেছে৷ পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া বা অভিযোজিত করাই কিন্তু টিকে থাকার প্রাথমিক শর্ত৷ মানবসভ্যতার ইতিহাস সে কথাই বলে৷ পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে বিলুপ্ত হয়ে যেতে হবে৷
advertisement
অনলাইন ক্লাসের পরে অফলাইন পরীক্ষায় বসার আগে কি পড়ুয়ারা বা অভিভাবকরা আসছেন ভীতি কাটাতে?
সে তো আসছেনই৷ এছাড়া পরিচিত মহলেও দু’ ধরনের ছবি দেখতে পাচ্ছি৷ একদল পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক খুশি যে মাধ্যমিক হচ্ছে এবং অফলাইনে হচ্ছে৷ কারণ পড়ুয়ারা মনে করছে, পরীক্ষা দিলে তারা ভাল ফল করবে৷ পরীক্ষা না দিলে অ্যাভারেজ মার্কিংয়ের ভয় পাচ্ছে তারা৷ আশঙ্কা করছে, রেজাল্ট খারাপ হয়ে যাওয়ার৷ আবার অন্য একটি দলের কিন্তু অফলাইন পরীক্ষা নিয়ে অনুযোগ৷ তাদের বক্তব্য, আগের ব্যাচ যদি অনলাইন ক্লাসের পর পরীক্ষা না দেয়, তবে আমাদেরই বা দিতে হবে কেন? আসলে এ বার তো আগের মতো প্রিটেস্ট, টেস্ট সেভাবে অফলাইনে হয়নি, তাই একটা আশঙ্কা বা ভয় কাজ করছে-যে আমি পারব তো?
advertisement
এখন মনোবিজ্ঞানে দু’টি জিনিস বহুচর্চিত৷ সেটা হল ‘মাইন্ডফুলনেস’ এবং ‘গ্রাউন্ডিং’৷ ‘মাইন্ডফুলনেস’-এর অর্থ হল বর্তমানে মনোনিবেশ করা৷ মনে রাখতে হবে অতীতে ফিরে গিয়ে একটা মুহূর্তও পরিবর্তন করা যাবে না৷ আর ভবিষ্যৎ যে কতটা পরিবর্তনশীল এবং পূ্র্বাভাস দেওয়ার বাইরে, সেটা তো কোভিড চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গিয়েছে৷ তাই মন  দিতে হবে বর্তমানে, যেটা আমাদের হাতে আছে৷ তার জন্য দরকার গ্রাউন্ডিং টেকনিক৷ অর্থাৎ প্রতি মুহূর্তকে পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগানো৷ এই টেকনিকগুলির পাশাপাশি কিছু ব্রিদিং এক্সারসাইজ এবং প্রাণায়ামের মতো যোগচর্চাগুলি সাহায্য করবে অতীত ও ভবিষ্যৎ থেকে চিন্তা সরিয়ে বর্তমান মুহূর্তগুলির সঙ্গে সংযোগস্থাপন করতে৷
advertisement
অর্থাৎ অতীত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে না ভেবে বর্তমানেই পা রাখতে হবে?
সেই চিন্তাভাবনার জন্যই দরকার মাইন্ডফুলনেস ও গ্রাউন্ডিং৷ হিন্দু ও বৌদ্ধদর্শনের প্রাচীন এই চিন্তাধারা এখন পাশ্চাত্য ঘরানাতেও খুব জনপ্রিয় ও আলোচিত৷
আরও একটা সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷ বাবা মা ভয় পাচ্ছেন বাইরে এত ক্ষণ থাকলে বাচ্চার কোভিড হয়ে যাবে৷ এই ফিয়ার অব গোয়িং আউট কী করে কাটানো যায়?
advertisement
একে তো বাচ্চাদের টিকা নেওয়া হয়নি৷ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদেরও সকলের টিকা দেওয়া হয়নি৷ বাচ্চারা বেশি ক্ষণ মাস্কও পরে থাকতে পারবে না৷ তাই বাবা মায়েদের এই আতঙ্ক অমূলকও নয়৷ সেই উৎকণ্ঠার ছায়া পড়ছে বাচ্চাদের উপরও৷ এই ভয় বা উৎকণ্ঠা তো অমূলক নয়৷ তাই উড়িয়ে দেওয়াও যাবে না৷
advertisement
মাথায় রাখতে হবে অতিমারির সাম্প্রতিক ও সার্বিক ছবি৷ পরিসংখ্যান বলছে, এখন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কম৷ আর একটা স্বস্তির কথা হল, বাচ্চাদের কোভিড হয়ে থাকলেও তার তীব্রতা কম ছিল৷ বাড়াবাড়ি হয়নি৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোভিড হলেও তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে গিয়েছে৷ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, এই অসুখে বাচ্চাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি৷ সেটাই অভিভাবকদের বলভরসার জায়গা৷ সে সবের নির্ভর করে মনের জোর বাড়াতে হবে৷ ভয়টাও যেমন অমূলক নয়, আবার বিপরীত যুক্তিও সত্যি৷ বরং বাইরে গেলে বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে৷ স্কুলে গেলে নিয়মানুবর্তিতা থাকবে জীবনে৷
কোভিড থাকুক, বা না থাকুক, পরীক্ষা নিয়ে সাধারণ একটা ভীতি কিন্তু বরাবরই কাজ করে৷ প্রাক কোভিড যুগেও সেই পরীক্ষাতঙ্ক ছিল৷
আমরা তো জানতামই পুজোর পর থেকে পরীক্ষাভীতি বা এক্সামফোবিয়ার ঘটনা আমাদের কাছে আসবে৷ এবং আসতও৷ এটা দেখেছি যাঁরা মেধাবী, প্রচুর পরিশ্রম করেছে, তারাই পরীক্ষা নিয়ে বেশি ভয় পাচ্ছে৷ প্রত্যাশাপূরণের চাপ-সহ একাধিক কারণ আছে এর পিছনে৷ এই ভয় কাটাতে প্রস্ততি তো ঠিকমতো নিতেই হবে৷ সিলেবাস ভাগ করে নির্দিষ্ট সময় ধরে প্রচুর অনুশীলন দরকার৷ মানসিক প্রস্তুতি হিসেবে এখানেও ‘মাইন্ডফুলনেস’ ও ‘গ্রাউন্ডিং’ খুব কার্যকরী৷ বাবা মা শিক্ষক শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে সমাধান না হলে মনোবিদের সাহায্য নিতে হবে৷ এই সমস্যায় ডায়াফ্র্যাগম্যাটিক ব্রিদিং খুবই কার্যকর৷ অর্থাৎ পেট ফুলিয়ে প্রচুর বাতাস নিয়ে প্রশ্বাস গ্রহণ করতে হবে এবং পেট চুপসে অনেকটা সময় নিয়ে নিঃশ্বাস বার করে দিতে হবে৷ আসলে আমরা একইসঙ্গে উদ্বিগ্ন ও উৎফুল্ল থাকতে পারি না৷
আরও পড়ুন : অভিনেতা থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট, ছোটদের প্রিয় প্যাডিংটন ভালুকের কণ্ঠস্বর জেলেনস্কি-ই
তা হলে পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতেও এই চর্চাগুলি অভ্যাস করাই যায়?
নিশ্চয়ই৷ এখন ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও পাওয়া যায়৷ যেখানে ব্রিদিং টেকনিক, মেডিটেশন, প্রাণায়াম-সহ যোগচর্চা শেখানো হয়েছে৷ সে সব অভ্যাস করলে নিজের মনের উপর নিয়ন্ত্রণ আসবে৷ তখন মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে হবে না৷
বাংলা খবর/ খবর/চাকরি ও শিক্ষা/
Madhyamik 2022 : ‘অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ না করে মনোনিবেশ করো বর্তমানেই’, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বললেন মনোবিদ শ্রীময়ী তরফদার
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement