২০ বছরেরে অয়নের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর অধ্যবসায় এবং এক গভীর মানবিক উপলব্ধি। প্রথমে পদার্থবিদ্যা নিয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ইচ্ছা থাকলেও, মায়ের দীর্ঘ অসুস্থতাই তার জীবনের লক্ষ্যকে বদলে দেয়। মা অনিতা মিত্র ঘোষ দীর্ঘ তিন বছর ধরে ক্রনিক কিডনি অসুখে ভুগছেন। দুটি কিডনি প্রায় বিকল, শারীরিকভাবেও অত্যন্ত দুর্বল। তবু ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত মা, ধরে রাখতে পারলেন না চোখের জল।
advertisement
অয়ন জানান, মায়ের অসুস্থতাই বুঝিয়েছে ডাক্তারদের কতটা প্রয়োজন। একজন চিকিৎসকই মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারেন। সেই গুরুত্ব থেকেই তার জীবনের লক্ষ্য এখন চিকিৎসক হওয়া। কৃতি এই ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় ২০১৫ সালে, হাটথুবা স্কুল থেকেই পড়াশোনার শুরু। পরবর্তীতে চৈতন্য কলেজে ভর্তি হলেও তা ছেড়ে নিটের জন্য পড়াশোনা শুরু করেন। প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলেছে প্রস্তুতি। বাবা অঞ্জন কুমার মিত্র, গুমা দাতারি জুনিয়র বেসিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। অয়নের স্বপ্ন কলকাতার শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল কলেজ বা ভুবনেশ্বর এআইএমএস-এ ভর্তি হয়ে এমবিবিএস সম্পূর্ণ করা। ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য ক্যানসার চিকিৎসক হওয়া।
অয়নের কথায়, এই মারণ রোগে এখনও অনেকেরই চিকিৎসা ঠিকভাবে হয় না। ভবিষ্যতে সে চায়, দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে। ছাত্রের এমন সাফল্যের খবর শোনার পরই তার বাড়িতে আসেন বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই এবং মিষ্টি উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানান অয়নকে। অয়নের মতো ছাত্রই প্রমাণ করে, প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক লক্ষ্য ও অধ্যবসায় থাকলে সাফল্য শুধু সময়ের অপেক্ষা। মায়ের সুস্থতার জন্যই যে একদিন হাজারও রোগীর আশার আলো হয়ে উঠবে এই হাবড়ার তরুণ, এমনই আশা মায়ের।
Rudra Narayan Roy