লখিন্দরের বাবা একজন প্রান্তিক ক্ষুদ্র কৃষক। ঘোর অভাব অনটনের সংসার। কিন্তু লখিন্দর ছোট থেকেই নিয়মানুবর্তিতা এবং পড়াশোনার প্রতি অনুরাগ থেকেই নিজের চেষ্টায় তৈরি হন তিনি। এমনকি ভাষাও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি লখিন্দরের কাছে। সাঁওতালি ভাষায় সমগ্র রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে এক প্রকার তাক লাগিয়েছেন লখিন্দর। বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও সমগ্র আদিবাসী সম্প্রদায়ের নাম উজ্জ্বল করেছেন লখিন্দর টুডু।
advertisement
আরও পড়ুন: আপনার হাতে মাছের ঝোল খাব, ভিডিওকলে হঠাৎ শাহরুখ! ক্যানসার আক্রান্তের শেষ ইচ্ছাপূরণ
হাঁপানিয়া রামনাথপুর গ্রামে মারাং বুরু চাচো মার্শাল আশ্রম রয়েছে। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা বাবুনাথ টুডু খুব কাছ থেকে দেখেছেন লখিন্দর টুডুকে। তাঁর অধ্যাবসায়, পড়াশোনার প্রতি অনুরাগ ছিল অনবদ্য। আর পাঁচটা ছেলের মতো মনোরঞ্জনের দিকে কোনও রকম টান ছিল না লখিন্দরের। পড়াশোনার মধ্যেই নিমজ্জিত থাকতেন লখিন্দর। দিনে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করে প্রতিকূলতা জয় করে সফলতা ছিনিয়ে এনেছেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছেন বাবুনাথ টুডু।
সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষকের অভাব রয়েছে, নিজে পড়াশোনা করতে করতেও এই অভাবটা যথেষ্ট বুঝতে পেরেছেন লখিন্দর। তাই বড় হয়ে নিজের মাতৃভাষায় শিক্ষকতা করতে চান লখিন্দর টুডু। সাঁওতালি শিশুদের কাছে আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। এই ভাষা যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে সেই কারণেই শিক্ষকতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লখিন্দর।
লখিন্দরের জেদ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং অধ্যাবসায় ও নিয়মানুবর্তিতা তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে মাধ্যমিকের সফলতার শিখরে। গোটা রাজ্যের কাছে বাঁকুড়া জেলার নাম উজ্জ্বল করেছেন তিনি।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী