কঠোর পরিশ্রম হল সাফল্যের চাবি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন দেবদত্তা। আর শনিবার সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রাসের মেইন পরীক্ষায় ফলাফল সামনে আসতেই জ্বলজ্বল করে উঠল তাঁর নাম। রাজ্যের মধ্যে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেলেন কাটোয়ার দেবদত্তা মাঝি। এর আগে জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেইন পরীক্ষার প্রথম পর্যায়ে ফলাফলে দেশের মধ্যে পনের তম স্থান পেলেও রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছিল কাটোয়ার ডিডিসি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী দেবদত্তা মাঝি। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় দেবদত্তার পার্সেন্টাইল ছিল ৯৯.০২১ শতাংশ, এবার একবারে লক্ষ্যে স্থির ছিল সে ফলে ১০০-তে ১০০ স্কোর করেছে বাংলার এই কৃতী ছাত্রী।
advertisement
সর্বভারতীয় পরীক্ষায় দেশের ২৫ জন পরীক্ষার্থী ১০০ পার্সেন্টাইল পেয়েছে। এদের মধ্যে আমাদের রাজ্যে আরও এক কৃতী ছাত্রের নাম রয়েছে। অর্চিষ্মান নন্দী, জয়েন্ট এন্ট্রান্সে সেও ১০০ পার্সেন্টাইল নম্বর পেয়েছে। দেবদত্তা মাঝি পরিবারের সঙ্গে বীরভূমের বোলপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছে বলে জানিয়েছেন তাঁর মা শেলি দাঁ।
২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম স্থান পাওয়া দেবদত্তার লক্ষ্য আইআইটি-তে পড়াশোনা করা। দেবদত্তা এই সাফল্যের জন্য মা শেলী দাঁ এবং শিক্ষকদের কৃতিত্ব দিয়েছিলেন।
দেবদত্তা এবার দ্বাদশ শ্রেণীর চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছেন। জয়েন্ট এন্ট্রাসের প্রস্তুতি নিতে দেবদত্তা মাধ্যমিকের পর থেকে পাঠ্যবই ছাড়াও নিয়মিত অনলাইনে পড়াশোনা করেছে। দেবদত্তা পড়াশোনা ছাড়া আর কিছুই বোঝে না বলে জানান মা শেলী দাঁ।
পেশায় স্কুল শিক্ষিকা শেলী দাঁ জানিয়েছিলেন, মেয়ের ইচ্ছা বেঙ্গালুরু আই আই এস সি কিংবা আই আই টি তে পড়াশোনা করা। সর্বভারতীয় পরীক্ষায় কাটোয়ার সঙ্গে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করল দেবদত্তা মাঝি।
আরও পড়ুন: সাগরে আবারও বাজ পড়ে মৃত্যু, সতর্ক প্রশাসন
শুধু কাটোয়াই নয়, সাফল্যের শীর্ষে খড়্গপুরের কৃতী আরও এক কৃতী ছাত্র। সর্বভারতীয় জয়েন্টে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম খড়্গপুরের অর্চিস্মান নন্দী। খড়্গপুরের চাঙ্গুয়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের বারবেটিয়ার বাসিন্দা অর্চিস্মান। বাবা একটি ওষুধ সংস্থার আধিকারিক। মা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী। গত জানুয়ারিতে জয়েন্টের প্রথম দফার পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে অঙ্কুরহাটির কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অর্চিস্মানদের গাড়ি। সেই মানসিক পরিস্থিতিতেও পরীক্ষা দিয়ে প্রায় ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, আশানুরূপ ফল না হওয়ায় ফের চলতি মাসেই দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা দেন। এ বার সারা ভারতে ২৪ জন পড়ুয়ার তালিকায় রয়েছেন অর্চিস্মান।
আরও পড়ুন: তৈরি হোক শান্তি কমিটি, মুর্শিদাবাদকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর চেষ্টা, একসাথে চলার বার্তা
তাঁদের সকলেই ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ২ জন। সেখানে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন অর্চিস্মান। খড়্গপুরের এই কৃতী আইসিএসই -তেও ৯৯ শতাংশ পেয়ে সর্বভারতীয় স্তরে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিল। এ বার জয়েন্টে রাজ্য প্রথম হওয়ায় খুশি বাবা মিঠুন নন্দী ও মা অনিন্দিতা নন্দী। আগামীতে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে আইআইটি খড়্গপুরে পড়তে চান অর্চিস্মান। এই বিষয়ে প্রস্তুতিও চলছে বলে জানান তিনি।
রণদেব মুখোপাধ্যায় এবং শঙ্কর রাই