ইজরায়েলে আটকে মেদিনীপুরের কৃতি গবেষক অনিরুদ্ধ। গবেষকের জন্য দুশ্চিন্তায় বাবা-মা থেকে পরিবারের সকলে। কীভাবে দিন কাটছে, মুহুর্মুহু ধেয়ে আসা বোমা-গুলির বিরুদ্ধে কীভাবে থাকছেন, কী খাচ্ছে তাঁদের প্রিয় ছেলে, তা নিয়ে চিন্তায় সকলে।
যুদ্ধক্ষেত্র ইজরায়েলে আটকে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীর যুবক অনিরুদ্ধ বেরা। বছর ২৭-র অনিরুদ্ধ ইসরায়েলের বিখ্যাত তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন। সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের তেল আভিভ শহরের একটি আবাসনে কার্যত দুশ্চিন্তার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন শালবনীর ভাউদি গ্রামের এই মেধাবী ছাত্র। বাড়িতেও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন তাঁর বাবা-মা।
advertisement
আরও পড়ুন: দিল্লির এইমসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অসুস্থ সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে, অবস্থা সঙ্কটজনক!
প্রত্যন্ত গ্রামে এলাকা থেকে ইজরায়েলে গিয়ে পড়াশোনা। নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা করছে জঙ্গলমহল শালবনির এই যুবক। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেখানেই দিন কাটাতে হচ্ছে তাকে। সংবাদপত্র কিংবা টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখে উদ্বেগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বাড়িতে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিরুদ্ধ বাবা-মা’র একমাত্র সন্তান। ২০২২ সালের শেষের দিক থেকে তেল আভিভে রয়েছেন। তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যানসার বায়োফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। এদিকে, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে উৎকণ্ঠিত বাবা-মা। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে দিন কাটছে অনিরুদ্ধর? অনিরুদ্ধ তরফে জানা গিয়েছে, “আমরা সেন্ট্রাল তেল আভিভের একটি আবাসনে ভাড়া থাকি। তবে, প্রত্যেকের সিঙ্গেল রুম। নিজেরাই রান্না করি। কিন্তু, গত শুক্রবার থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। দোকানপাট সকালের দিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে খোলা হচ্ছে। সারাদিনে অন্তত তিন-চারবার সাইরেন বাজছে। এমন পরিস্থিতিতে তো রান্না করে খাওয়া সম্ভব নয়, তাই বিভিন্ন শুকনো খাবার মজুদ করে রেখেছি। তাই দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছি।”
আরও পড়ুন: NIRF র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের সেরার সেরা মেডিক্যাল কলেজ কোনগুলো? তালিকায় বাংলার কোন কলেজ? রইল পুরো তালিকা
প্রসঙ্গত, উচ্চ মাধ্যমিকের পর প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে অনিরুদ্ধ ভর্তি হন ভুবনেশ্বরের NISER-এ। জীবন বিজ্ঞানের উপর ৫ বছরের ইন্টিগ্রেটেড কোর্স করেন অনিরুদ্ধ। তারপর তিনি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে গবেষণার জন্য পাড়ি দেন ইসরায়েলে। ইসরায়েলের বিখ্যাত তেল আভিভ ইউনিভার্সিটি-তে ক্যানসার বায়োফিজিক্স-এর উপর গবেষণা করছেন অনিরুদ্ধ। গবেষণা শেষ হতে আরও ২ বছর। এদিকে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে উৎকণ্ঠিত বাবা-মা।
অনিরুদ্ধর বাবা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অসীম বেরা জানিয়েছেন , “দুশ্চিন্তা তো আছেই। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে কিছু করারও তো নেই। যতক্ষণ না ভারত সরকার ওদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছে ততক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।” শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ জানিয়েছেন, “আমরাও তাই চাইছি। অসীমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি।” সামাজিক মাধ্যম মারফত যোগাযোগ করা হচ্ছে অনিরুদ্ধর সঙ্গে। পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছে পরিবার থেকে সকলে। দ্রুত তাঁদের ছেলে বাড়ি ফিরে আসুক চাইছেন সবাই।
রঞ্জন চন্দ