এদিন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৩৩২ জন মহিলা এবং ৬৪৩ জন পুরুষ-সহ মোট ৯৭৫ অফার লেটার বন্টন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, নিয়োগ সম্পর্কিত বিষয়ে অনেক কথা হয়েছে এবং অনেকেই প্রশ্ন উত্থাপন করেন। কিন্তু এই সরকার সবকিছু সময়মতো কাজ করে। সেইজন্য যারা এখানে অফার নিতে এসেছেন তাদের জন্য আজ একটি স্মরণীয় দিন। যারা এই অফারের জন্য এখানে এসেছেন তারা সকলেই প্রতিভাবান। আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। কেউ বলতে পারবে না যে কোনও তৃতীয় ব্যক্তির জন্য আপনারা এই চাকরি পেয়েছেন। এই সরকার যোগ্যতার ভিত্তিতে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে চাকরি প্রদান করছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পূর্ণমের পুনর্জন্ম! পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ, ভারতে ফিরলেন হগলির জওয়ান, কেমন আছেন তিনি?
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বিভিন্ন দফতরগুলিতে পরিকাঠামো এবং উন্নয়ন সম্পর্কিত ৩৬৮.২১ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ডাই-ইন-হারনেস-সহ ১৭,৫৫৪ জন চাকরি পেয়েছেন এবং কর্মসংস্থানও তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ২.১ লক্ষ উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। আমরা আরও যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে গুণমানসম্পন্ন শিক্ষক গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিয়েছি। শুধু ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ৪,৪৯৯ জন সরকারি চাকরির অফার পেয়েছেন। আমরা মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য ৩৩% সংরক্ষণ চালু করেছি।
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার ত্রিপুরা পুলিশের জন্য আরও ৯১৬ জন কনস্টেবল এবং আরও ২১৮ জন সাব ইন্সপেক্টর নিয়োগ করার উদ্যোগ নিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এইসব পদে নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনসাধারণকে নিরাপত্তা প্রদান আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। এজন্য ধীরে ধীরে পুলিশ কর্মীদের ঘাটতি নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। খুব শীঘ্রই স্পেশ্যাল একজিকিউটিভের ফল ঘোষণা করা হবে। আমাদের অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ বাহিনীকে ক্ষমতা ও ফ্রি হ্যান্ড দিতে হবে, যাতে তারা আরও ভালভাবে কাজ করতে পারে।
অপারেশন সিঁদুর পরিচালনার জন্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ফ্রি হ্যান্ড দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রতিফলন হিসেবে আমরা দেখেছি যে তারা কীভাবে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান সংঘটিত করেছে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার কখনই তথ্য ছাড়া কথা বলে না। রাজ্যে ২০২৩ সালের তুলনায় সামগ্রিক অপরাধের হার ২০২৪ সালে ১৯.৪% হ্রাস পেয়েছে। শুধু গত চার মাসে সামগ্রিক অপরাধের হার ১০% হ্রাস পেয়েছে। আমরা মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ রুখতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি এবং এজন্য রাজ্যের প্রতিটি থানায় ওমেন হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে।
২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ১৩% হ্রাস পেয়েছে এবং ২০২৫ সালে এখনও অবধি ৪০% হ্রাস পেয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মাদকদ্রব্য বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় ১০৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। আর মাদকদ্রব্য ধ্বংসের পরিমাণ ১৩২% বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন বক্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়া অপব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যেও হুশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে অপপ্রচার বা নেতিবাচক পোস্ট কিংবা কারও বাড়বাড়ন্ত কোনও অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে জেলে পুরে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মানুষের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নিয়ে কাজ করতে ত্রিপুরা পুলিশকে পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা।