এটি এমন একটি বিবরণী যাতে চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষা, দক্ষতা ও অন্য সমস্ত দিকের উল্লেখ থাকে। এই পঞ্জী এক নজরে দেখেই চাকরিদাতা বুঝতে পারেন যে, এই প্রার্থীকে তাঁদের কাজে লাগবে কি না।
একটি রেজিউমেকে সম্পূর্ণ ও যথোপযুক্ত করে তুলতে কী কী করা দরকার?
১. সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রকল্পের উল্লেখ করতে হবে। উল্লেখ করতে হবে তাদের কী প্রভাব পড়তে পারে- তা-ও। অতিরিক্ত ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।
advertisement
২. নিজের দক্ষতার বিবরণ এবং তা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে। অবশ্যই সমস্যা সমাধানে নিজের দক্ষতার কথা উল্লেখ করতে হবে।
৩. সব সময় মনে রাখতে হবে কোনও মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া চলবে না। এবে চাকরির জন্য মনোনীত হলেও পরে বেজায় সমস্যায় পড়তে হবে।
মনে রাখতে হবে, রেজিউমে-ই হল এক মাত্র সিঁড়ি। নিয়োগকর্তাই পারেন রেজিউমেটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যেতে। ফলে একটি কার্যকর এবং প্রভাব বিস্তারকারী রেজিউমে তৈরি করতে হবে আর সেখানে নিজের যোগ্যতার কথা তুলে ধরতে হবে নির্দিষ্ট তথ্যের উল্লেখ করে।
ইন্টারভিউ (Interview) প্রক্রিয়ায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে একটি যথোপযুক্ত রেজিউমে। বিভিন্ন নিয়োগকারী সংস্থার উপর চালানো সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, খুব ভাল ভাবে লেখা একটি রেজিউমে হাতে পেলে তাঁরা প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলতে চান দ্বিগুণ বা তিনগুণ উৎসাহে।
কেন?
কারণ একটি সুসংবদ্ধ রেজিউমের দিকে তাকালেই বোঝা যায় প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা কতখানি হতে পারে।
কয়েকটি ঘটনা থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করে বোঝা যেতে পারে—
২০১৯ সালে বেঙ্গালুরুর একদল নিয়োগকর্তার সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। এঁরাই দণ্ডমুণ্ডের কর্তা- তাঁরাই স্থির করেন কে চাকরিটি পাবে, কে পাবে না! দেখা গিয়েছিল একটি মাত্র কাগজ বা এক পাতার পিডিএফ ওই সংস্থার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিচ্ছে।
হ্যাঁ, অবশ্যই ওই সংস্থার ভবিষ্যৎ। কারণ, যাঁদের নির্বাচন করা হবে তাঁরাই তো পার্থক্যটা তৈরি করে দেবেন। সমীক্ষা চালানোর সময় নিয়োগকর্তাদের একাংশ বলেন, একজন চাকরিপ্রার্থী তাঁর কাজের দায়িত্ব, গুরুত্বটা কতখানি বুঝতে পারছেন তা প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন রেজিউমেতে।
কিন্তু একটি কাগজে লেখা কয়েকটি শব্দে মাত্র কয়েক মিনিট চোখ বুলিয়ে কী করে বুঝে নেওয়া সম্ভব কে পারবে, কে পারবে না?
এ প্রশ্নের উত্তরে বেঙ্গালুরুর নিয়োগকর্তারা প্রায় কেউই কোনও জটিল উত্তর দেননি। বরং প্রায় সকলেই একই রকম ভাবে বলেছিলেন দু’টি শব্দ— Structure এবং Organisation। অর্থাৎ, কী ভাবে রেজিউমে লেখা হয়েছে, তার কাঠামো এবং সংগঠন।
১. চিন্তাধারার স্বচ্ছতা রেজিউমেতে প্রকাশ পেয়েছে এমন প্রার্থীকে সাক্ষাৎকারগ্রহণকারী বা নিয়োগকর্তা ৪৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন।
২. নিখুঁত একটি রেজিউমে চাকরিপ্রার্থীর তুরুপের তাস। যা তাঁর আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে। ফলে প্রায় ৭১ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চাকরিটা তিনি নিজের ঝুলিতে ভরে ফেলেন।
৩. প্রশংসাসূচক তথ্য: ধরা যাক কোনও প্রার্থী ম্যানেজার পদের জন্য আবেদন করেছেন। তা হলে তাঁর রেজিউমেতে অবশ্যই কোনও না কোনও তথ্য এমন থাকতে হবে যা তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাকে প্রতিফলিত করে। যেমন, তিনি কলেজ ক্লাবের ম্যানেজার হিসেবে ছিলেন বা কোনও ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন বা সমতুল কোনও বিষয় যাতে তাঁর ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা প্রকাশ পায়।
কারণ, এ ধরণের উল্লেখে এটা প্রমাণ হয় যে ওই প্রার্থীর নেতৃত্বদানের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে, তা যতই অপেশাদার হোক না কেন! এ ধরনের উল্লেখের ফলে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ বাড়ে। তবে এর মানে এই নয় যে, এমন অভিজ্ঞতা না থাকলে কারও প্রার্থীপদ বাতিল হয়ে যাবে!