জিডি ২৭৩ সল্টলেক সেক্টর ৩ । প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিকানা। গেটে অলিম্পিকের লোগো। বাড়ির বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যেত এই বাড়ি কোনও অলিম্পিয়ানের। শুক্রবার সেখানেই করোনা আতঙ্ক কে উপেক্ষা করে উপস্থিত হয়েছিলেন ময়দান কাঁপানো একাধিক ফুটবলার। উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাবের কর্তারা। করোনা আতঙ্কের জেরে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ দুই প্রধান ও রেলের তাঁবুতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সল্টলেকের বাড়িতেই সবাই শেষ শ্রদ্ধা জানান। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। মরদে মাল্যদান করার পর তিনি বলেন," ফুটবলার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম একে অপরের পরিপূরক। তাঁর মৃত্যুতে একটা যুগের অবসান হলো।" কিছুটা দূরে এক জায়গায় বসে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাত্ররা স্মৃতিচারণ করছিলেন অতীতের দিনগুলো। অন্যতম প্রিয় ছাত্র সুভাষ ভৌমিক বলেন," জীবনে ফুটবলার হিসেবে যা কিছু পেয়েছি একমাত্র প্রদীপ স্যারের জন্য। ময়দানে আমার ডাকনাম ভোম্বল। সেই নামকরণও প্রদীপ ব্যানার্জি করেছিলেন।" হাত দিয়ে দূরে সেই সময় দাঁড়িয়ে চোখের জল আটকাতে পারছিলেন না শ্যাম থাপা। কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান অস্ত্র ছিল ভোকাল টনিক। ম্যাচ শুরুর আগে কীভাবে ফুটপাতে তাতাতেন দেন প্রদীপ স্যার, সেই কথাগুলি ঘুরেফিরে আলোচনা করছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য্য, সুরজিৎ সেনগুপ্ত ,বিদেশ বসুরা।
advertisement
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। হাসপাতাল থেকে শ্মশান পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও সুজিত বসু। বাড়ি থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা মহাশ্মশানে। সেখানে গান স্যালুট এর মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে টুইট করে শ্রদ্ধা জানান সচিন, সৌরভ থেকে বলিউড অভিনেতা অজয় দেবগন। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান কর্তাদের মতে করোনা আতঙ্কের জেরে রাজকীয় শেষ বিদায় জানানো সম্ভব হলো না পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে অনেক মানুষ এসেছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। পরে দুই প্রধানে আলাদা করে স্মরণ সভা করা হবে। আজ থেকে ১৭ বছর আগে ২০০৩ সালের ২০ মার্চ প্রয়াত হয়েছিলেন ফুটবলার কৃষানু দে। সেই প্রিয় ছাত্রের মৃত্যুর তারিখেই চলে গুরু প্রদীপ স্যার।
ERON ROY BURMAN