বুধবার থেকে লক ডাউনের মধ্যে বাস চলাচল শুরু হল । কলকাতা, হাওড়া ,ব্যারাকপুর,বারাসত, মিলিয়ে মোট ১৫ টি রুটে বাস চালানোর কথা ঘোষণা করে রাজ্য। বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না।এটা সরকার থেকে বিধি নির্ধারণ করে দিয়েছে । কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ছিল অন্যরকম৷ দেখা গেল আজ সকাল থেকে প্রতিটি বাস ডিপোতে শ'য়ে শ'য়ে বাস যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে। বাস ধরতে বেশির ভাগ যাত্রী কেউ,সাইকেল,মোটর সাইকেল,বা হেঁটে ২০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা পার হয়ে এসেছে ।
advertisement
সকাল ৮টা নাগাদ গড়িয়া ৫ নম্বর ডিপো থেকে হাওড়া গামী প্রথম বাস বেরোয় হাওড়ার দিকে। প্রথমটা ২০ জন যাত্রী নিয়ে গেলেও,তার পরে যত গুলি বাস বেরিয়েছে, গড়িয়া ডিপো থেকেই সেগুলিতে ৩০ জন ৪০ জন যাত্রী জোর করে উঠে পড়ে । কারণ সকাল থেকে ওই ডিপো থেকে পাঁচটি গাড়ি চলার কথা সাধারণ যাত্রীদের জন্য। তাহলে পাঁচটি গাড়ি একশ যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে। সকাল থেকে লাইনে পাঁচশ থেকে ছয়শ যাত্রীর ভিড়। যার জন্য ঠেলা ঠেলি ধাক্কাধাক্কি এসব তো চলছিল।
বাস গুলো ডিপো থেকে ছাড়ার পর সমস্ত দরজা লাগিয়ে হু হু করে ছুটতে থাকে গন্তব্যের দিকে। রাস্তায় অপেক্ষারত মানুষ আর বাসে উঠতে পারেননি। অর্থাৎ সমস্যা সমস্যতেই রয়ে গেল। যারা বাসে জোর করে উঠেছিল, তাদের বক্তব্য অনেকক্ষণ অন্তর বাস যাওয়ার জন্য সাধারণ যাত্রীরা হয়রানিতে পড়ছে। সরকারের উচিত বাসের সংখ্যা বাড়ানো। নইলে একই বাসের মধ্যে গাদাগাদি করে যাবে যাত্রীরা। এতদিন যে আশঙ্কায় লকডাউন চলছিল, সেই আশঙ্কা প্রকট হয়ে দেখা দেবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে গেলে পরিবহন ব্যবস্থা কিছুটা হলেও শ্লথ করতে হবে। বিকল্প ব্যবস্থা না ভেবে এবং জনস্বাস্থ্যের কথা এবং মহামারীর কথা মাথায় না রেখে যদি শহরকে সচল করা হয় ,তাহলে মহামারী আরও ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যাবে কলকাতাতে। চিকিৎসকদের বক্তব্য অনুযায়ী, জুন এবং জুলাই মাসে করোনা সংক্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে।এর আগে চিকিৎসকরা বলছিলেন ,মে মাসে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে, তারপর থেকে আস্তে আস্তে কমবে করোনা সংক্রমণ। ডাক্তাররা এখন সেই সীমানাকে জুন-জুলাইয়ে নিয়ে গেছে। এখনও যদি সামাজিক দূরত্ব না মানে ও মাস্ক ব্যবহার না করে,তাহলে এরাজ্যের কিংবা এই দেশের পরিণতি আরো খারাপের দিকে যাবে বলে ধারণা চিকিৎসকদের।একই বাসে রোগী থেকে আরম্ভ করে সবাই যাচ্ছেন।একই কণ্টিনে খেয়ে যেখানে ৩৮ জন সি আই এস এফ জওয়ান করোনা আক্রান্ত হতে পারে,সেখানে এই ভাবে যাত্রীরা গেলে, কত জন সংক্রামিত হবে! সেই ভেবে কপালে ভাঁজ প্রশাসনের।
Shanku Santra