তবে কর্মস্থলে প্রবেশের আগে বেশ কিছু সুরক্ষা ধাপ অতিক্রম করেই অফিসে ঢোকার অনুমতি মিলেছে। যেমন মহাকরণের সামনে তিনটি অস্থায়ী বেসিন বানানো হয়েছে। সেখানে সাবান জল দিয়ে হাত ভাল করে ধুয়ে মহাকরণের ঢোকার মূল গেটের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সরকারি কর্মীদের পুলিসকর্মীরা থার্মাল গানের মাধ্যমে কর্মী আধিকারিকদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার পরই ভেতরে ঢোকার অনুমতি মিলছে।
advertisement
কর্মীরা সংশ্লিষ্ট দফতরের ভেতরও সুরক্ষা বিধি মেনেই কাজ শুরু করেছেন। মুখে মাস্ক এবং হাতে গ্লাভস পরার পাশাপাশি নিজেদের টেবিলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই বসছেন। কোনও প্রয়োজনে যদি কোনও সাক্ষাৎপ্রার্থী আসছেন তাহলে তাঁদেরও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই কথা বলছেন সরকারি কর্মীরা।
দীর্ঘদিন পর ফের পুরনো ছন্দে মহাকরণ। এতদিন পর অফিস এলেন। কেমন লাগছে ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মচারী বললেন,' নিরুপায় হয়ে বাড়িতে ছিলাম। অবশেষে কাজে যোগ দিলাম। সবার সঙ্গে আবার দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছে। তবে আতঙ্কও রয়েছে। দীর্ঘদিনের জমে থাকা কাজ কী করে শেষ করব সেটাই এখন চিন্তা'। করোনা আতঙ্কে বদলেছে মানুষের লাইফ স্টাইল। সেইসঙ্গে বদলেছে সরকারি অফিসগুলোর চেহারাও। যেমন নব মহাকরণ। স্যানিটাইজার , সাবান জল, মাস্ক গ্লাভস। সামাজিক দূরত্বে বসানো চেয়ার-টেবিল। এখানকার কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের মুখে দেখা গেল ফেস শিল্ডও। কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখানেও সেই একই নিয়ম। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা পরীক্ষা করছেন শরীরের তাপমাত্রা। কর্মী আধিকারিক মন্ত্রী থেকে আমলা--- কেউই বাদ যাচ্ছেন না সুরক্ষা বিধি মানার ক্ষেত্রে।
নব মহাকরণের বিভিন্ন দফতর ঘুরেও দেখা গেল টেবিলে টেবিলে ফাইলের পাহাড়। ধুলো জমে থাকা কম্পিউটার, ফাইলপত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে লেগে পড়ছেন কর্মযজ্ঞে। একদিকে আতঙ্কের আবহ আর অন্যদিকে জমে থাকা কাগজ ফাইলের পাহাড়। কর্মী সংখ্যাও সীমিত। কী করে যে জমে থাকা কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন তা ভেবেই এখন চিন্তিত সরকারি দপ্তরের কর্মী থেকে আধিকারিকরা। বিভিন্ন সরকারি দফতরে ঘুরে সোমবার দেখা গেল সরকারি কর্মীদের অনেক চেয়ারই ফাঁকা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অফিসে হাজির হওয়া কর্মীরা বললেন , কলকাতা এবং আশেপাশের যারা মানুষজন তাঁরা মোটামুটি সবাই উপস্থিত হয়েছেন।
তবে ট্রেন কিংবা দূরপাল্লার বাসই যাদের ভরসা তাঁদের পক্ষে কর্মস্থলে এসে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে কলকাতা কিংবা সংলগ্ন এলাকা থেকে এদিন অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হলেও অনেকেই নিজেদের দপ্তরে নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পরে এসে পৌঁছেছেন। সৌজন্যে পরিবহন সমস্যা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাজিরা খাতায় লাল দাগ না পড়ার ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে কর্মস্থলে দেরিতে আসা চাকুরীজীবীরা।