১৯ ও ২০ শতকে ভারতে একাধিকবার কলেরা থাবা বসায়। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় কয়েক লক্ষ মানুষ। সেসয় ক্ষমতায় ব্রিটিশ সরকার। মহামারি নিয়ে প্রাথমিকভাবে তেমন উৎসাহ না দেখালেও পরিস্থিতি ক্রমে ভয়াল হয়ে ওঠে। অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ করতেই হয়।
১৮৯৬-এর সেপ্টেম্বর। মুম্বইতে শুরু হল প্লেগ। সপ্তাহে প্রায় দু’হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছিল। মুম্বই থেকে অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ে কলেরা। ১৮৯৭-এ Epidemic Disease Act তৈরি করে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল অনুযায়ী, মহামারি ঠেকানোর একমাত্র রাস্তা, ভিড় কমানো। সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ রাখা হয় ট্রেন, ক্যারাভ্যান।১৮৯৬ সেপ্টেম্বরে মুম্বইয়ে প্রথম প্লেগ ধরা পড়ে ৷ তখন সপ্তাহে প্রায় ২০০০ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটত ৷ মুম্বই থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে কলেরা ৷ ১৮৯৭ সালে তৈরি হয় Epidemic Disease Act ৷
advertisement
২০ মার্চ ১৮৯৭। এলাহাবাদে এক সরকারি প্রস্তাব আনা হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, শ্রমিকদের জন্য এক মাসের সবেতন ছুটি দেওয়া হবে। সরকারিভাবে লকডাউন শব্দ ব্যবহার না করলেও, ব্যবস্থাটা এমনই। পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যা মোকাবিলায় তাঁদের বাড়ি থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে বিকল্প কাজের ব্যবস্থাও করা হয়।
শুধু ব্রিটিশ শাসকই নয়। কলেরার সংক্রমণ ঠেকাতে এই বিশেষ ছুটিই বেছে নেন হায়দরাবাদের নিজাম। ১৯১৫-য় হায়দরাবাদে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ট্রেন ও ক্যারাভান। সেকেন্দরাবাদ স্টেশনে আটকে দেওয়া হয় যাত্রীদের। পরীক্ষা করে পাঠান হ্য় কনটেইনমেন্ট সেন্টারে। যান বাহনে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। এমনকী যাতায়াতের উপরেও বেশ কিছু বিধি আনা হয়। নিয়ন্ত্রণ করা হয় জাহাজ চলাচলের উপরেও। তৈরি হয় বিশেষ কনটেনমেন্ট জোন, যা্র ব্যবহারিক নাম ছিল করডন স্যানিটেরজ। আজকের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের সঙ্গে যার বিশেষ তফাৎ নেই। প্রতিটি এলাকা ঘিরে থাকত পুলিশ, বা সেনা। যাতায়াতেও নিয়ন্ত্রণ ছিল। পুলিশের বিশেষ অনুমতি ছাড়া এলাকায় ঢোকা নিষেধ ছিল। তার পোশাকি নাম, প্লেগ পাসপোর্ট। করোনা মোকাবিলায় আজ বিশ্বজুড়ে সেই পথকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। নামে বদল ঘটলেও, পদ্ধতিতে যে বদল ঘটেনি, তা স্পষ্ট।
