বুধবার সকালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তার তিন তলার অফিস। পুরোপুরি ভাবে লক করে দেওয়া হয়েছে তার কাজের ব্লক। এমনকী, ধারে কাছে কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া দেওয়া হচ্ছে না। ওঁর অফিসের পাশেই ছিল PWD-র অফিস। সেই অফিস প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর চলছে স্যানিটাইজেশনের কাজ।
করোনা আক্রান্ত যুবকের মা যে অফিসে কাজ করতেন, সেই অফিসের স্টাফেদের বক্তব্য, "ম্যাডাম তো সোমবার অফিসে এসেছিলেন। আমরা ফাইল পাঠিয়েছিলাম। ওনার পিএ এসেছিল ফাইল নিতে। ফলে আমরা তো টেনশনে আছি।"
advertisement
এই অফিসে যারা কাজ করেন তারা মুলত বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়েই কাজ করেন। কিন্তু তাদের জন্যই যে এমন কিছু অপেক্ষা করা আছে, তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির কথায়, "যা হল তাতে মহাকরণে কাজ করা উচিত কিনা সেটাই বুঝতে পারছিনা আমরা।" ফলে মহাকরণের স্বরাষ্ট্র দফতর ঘিরে ভয় ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বড় লালবাড়ির শিরায় শিরায়। অন্যান্য সময়ের তুলনায় বদলে গিয়েছে মহাকরণ। এখন গেট পেরিয়ে ঢুকতে হচ্ছে স্যানিটাইজার হাতে মেখে। কলকাতা পুলিশের যে সমস্ত ব্যক্তিরা লালবাজারে ডিউটি করছেন, তারাই হাতে হাতে স্যানিটাইজার দিচ্ছেন। বারবার ধরে জিজ্ঞেস করে নেওয়া হচ্ছে, পরিচয়, কোথায় যাবেন? কেন যাবেন? কোনও জ্বর বা কাশি নেই তো। কলকাতা পুলিশের হয়ে যারা ডিউটি করছেন তারাও মাস্ক পড়ে কাজ করছেন।
মহাকরণ থেকে অধিকাংশ অফিস নবান্নে সরে গেলেও, মহাকরণের নিচে এখনও রয়ে গেছে বেশ কিছু খাবার দোকান ও ক্যান্টিন। যদিও সেই দোকান ও ক্যান্টিন আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হল। কবে খোলা হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছুই জানানো হয়নি। মহাকরণে ক্যান্টিন চালান প্রতিম দে। তার দাবি, "প্রচুর লোক খাবারের জন্য আসছে। কিন্তু করোনার জন্য বন্ধ করে দিতে বলেছে। তাই বন্ধ করে রাখতে হল।"
ব্যবসার ক্ষতি হলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নিতে তারা বাধ্য হচ্ছেন। যে সমস্ত দফতর গুলি খুলে রাখা হয়েছে সেগুলিতেও মানুষ ভয়ে ভয়ে আছেন। বুধবার দুপুরে অবশ্য বেশ কিছু বিভাগে মাস্ক বিলি করা হয়েছে। তবে খালি মাস্কে কিছুই হবে না, বলে দাবি স্টাফেদের। বিশেষ করে আধিকারিকের ঘরেই করোনা, তা জানতে পেরে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
Abir Ghoshal