যেদিন থেকে দেশ জোড়া লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, সেই থেকে রাস্তায় গাড়ি নেই বললেই চলে। বন্ধ দেশের কলকারখানা। তাই দূষণ এক্কেবারে নেই বললেই চলে। স্বাভাবিকভাবে প্রকৃতি অনকেটাই যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে। নদীর জল শুদ্ধ হয়েছে। বন্যপ্রাণী মনের সুখে জীবন যাপন করছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তো শহরের রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে ময়ুর, হরিণ। প্রকৃতি যেন নিজের মতো করে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে এই কয়েকদিনে। কলকাতা শহর তো বটেই, দেশের প্রায় সমস্ত শহরের ক’দিনের মধ্যে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। মনে করা হচ্ছিল, এই লকডাউন চলার পরে, যখন এসব উঠে যাবে। আবার স্বাভাবিক নিয়মে ফিরে আসবে দেশ, তখন বুঝি মানুষ প্রকৃতির প্রতি একটু দায়িত্বশীল হবে। যাতে আর সেই দূষণের মাত্রা ফিরে না আসে। কিন্তু তা ঘটছে না। মানুষই তা ঘটাচ্ছেন না। একথা ফের প্রমাণিত হয়ে গেল ৫ এপ্রিল রাতের ঘটনায়।
advertisement
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, বারান্দায়, ব্যালকনিতে, বা ঘরের দরজার সামনে প্রদীপ, টর্চ, নিদেনপক্ষে মোবাইলের আলো জ্বেলে দাঁড়াতে। কিন্তু অতি উৎসাহী মানুষ যা করে বসলেন, তাতে তিরষ্কার করা ছাড়া উপায় নেই। অনেকেই মনে করেছেন, এ যেন অকাল দীপাবলি। তাই বাড়ির ছাদে উঠে দেদার বাজি ফাটিয়েছেন। মশাল নিয়ে ঘুরেছেন কেউ। কেউ আবার ন্যাড়াপোড়ার মতো পাতা জোগাড় করে বিশাল আগুন জ্বালিয়েছেন। তাঁর ফল যাওয়ার তাই হয়েছে।
দিল্লিতে ৪ এপ্রিল দূষণের মাত্রা ছিল ৪১, ৬ এপ্রিল সেটা বেড়ে হয়েছে ১২৪, কলকাতায় রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় ৪ এপ্রিল দূষণের মাত্রা ছিল ৮৮, ৬ এপ্রিল সেটা হয়েছে ১০৬। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে ৪ এপ্রিল দূষণের মাত্র ছিল ১২২, ৬ এপ্রিল সেই দূষণের মাত্র পৌঁছয় ২১৪–এ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে একদিন মানুষের কিছু ভ্রান্ত কাজের জন্য এই অবস্থায় পৌঁছেছে, সেটা জলের মতোই পরিস্কার।