বেশ কয়েকবার এই বানরের দলকে ছেড়েও দিয়েছিল বন - বাদারে ৷ তবে মানুষের সাথে বসবাসে অভ্যস্ত বন্য প্রাণগুলিও খুইয়েছে তাদের স্বাভাবিক কাজ কর্ম ৷ একদিকে নতুন করে পরিবেশে ঘুরে ঘুরে নিজেদের খাদ্য যোগানের ক্ষমতাও হারিয়েছে, ফলে মনিব ছেড়ে দিলেও তার আর ফিরেতে পারেনি জঙ্গলে | ফলে মনিবদের আঁকড়ে ধরেই চলছে জীবন যুদ্ধ|
advertisement
হাওড়ার ইস্ট ওয়েস্ট বাই পাশের ধরে বসবাস করে বেশ কয়েকটি পরিবার যাদের পেশাই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে খেলা দেখানো | মূলত এই মানুষজনদের পোশাকি নাম মাদারি | বেশ কিছু বছর আগেও এদের কাছে থাকতো ভাল্লুকের মতো হিংস্র প্রাণী | সেই হিংস্র প্রাণীদের নিজেদের বশে নিয়ে এসে খেলা দেখানোই ছিল জীবন জীবিকা | বেশ কিছু পশুপ্রেমী সংস্থার তরফে মামলা করায় বন্ধ হয়েছে সেই কাজ৷
তবে বংশ পরম্পরায় দীর্ঘ দিন ধরে বানরের দলেরাও এদের পরিবারের সদস্য হয়ে পড়েছে, ফলে বানরের দলকে ছাড়তে চাইলেও বার বার ফিরে আসে তারা, টিকিয়া পাড়া রিফক সফিকরা চাইলেও এদেরকে দূরে সরাতে পারে না | স্বাভাবিক সময় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঘুরে ঘুরে মানুষের মনোরঞ্জন করে দিনে ৩০০-৫০০ টাকা উপার্জন, তাই দিয়েই পরিবার সামলে বানরের দলের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খাদ্য যোগান সবই করতে হয় রফিক সফোকি বা সিদ্দিকদের |
দীর্ঘ লক ডাউনে দুবেলা কোনও রকমে খাবার জুটলেও তাদের পোষ্যদের জন্য কিছু বিশেষ খাদ্য যোগান বন্ধ হয়েছে, বাধ্য হয়েই পথে নামতে যেচে রফিকদের, রাস্তায় ডুগডুগি বাজিয়ে খেলা দেখানো বন্ধ তাই দোকান বাড়ি ঘুরে ঘুরে ভিক্ষার পথ খুঁজতে হয়েছে তাদের | পোষ্যদের প্রিয় খাবার ফলের দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের প্রিয় খাওয়ারের দিকে করুণ চোখে তাকালেও মনিবদের কাছে আবদার করতে পারে না তারা ৷ তাই পথ চলতি মানুষরা মাঝে মাঝে এগিয়ে দেয় ফল ঠিক তখনি মাথায় দুহাত তুলে সেলাম করে মাদারিদের ঘরের কাজল শাহরুখরা |
Debashis Chakraborty