ভ্যাকসিন নীতি ৩.০ কী?
এই নতুন ভ্যাকসিন নীতি অনুযায়ী এখন থেকে দেশে উৎপাদিত মোট টিকার ৭৫ শতাংশ ক্রয় করে বিনামূল্যে রাজ্যগুলিতে সরবরাহ করবে কেন্দ্র। বাকি ২৫ শতাংশ বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য বরাদ্দ হবে। ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজে লিখিত মূল্যের উপর অতিরিক্ত ১৫০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত নিতে পারবে বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি। ভ্যাকসিন নীতি ৩.০-তে কার্যত এই ঘোষণাই করেছে মোদি সরকার।
advertisement
কীভাবে দফায় দফায় বদল টিকা নীতির?
উল্লেখ্য, এর আগে দু-দফায় ভ্যাকসিন নীতিতে বদল এনেছে মোদি সরকার। তারমধ্যে দ্বিতীয় দফায় বদল আনা হয় গত ১ মে। ১৮ থেকে ৪৪ বছরের সমস্ত নাগরিককে টিকা দিতে রাজ্যের হাতে বড় দায়ভার তুলে দেয় কেন্দ্র। এমনকী সরকারি প্রস্তুতকারকদের থেকে ২৫ শতাংশ টিকা কেনার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বর্তমানে এই নীতিতে বদল এনে সমস্ত টিকাই রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে দিতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।
কী কারণে বদলে গেল নীতি?
সম্প্রতি দেশজুড়ে ভ্যাকসিন বন্টনে বঞ্চনার অভিযোগে কেন্দ্রের উদ্বেগ বাড়ে। বস্তুত টিকাকরণ শুরুর পর থেকেই ভ্যাকসিন বন্টনে বঞ্চনার অভিযোগ উঠতে থাকে একাধিক রাজ্য থেকে। এমনকী টিকার ঘাটতি নিয়েও দেখা দেয় উদ্বেগ। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় দায়িত্বে সম্পূর্ণ টিকাকরণের জন্য গত কয়েক মাস ধরেই জোরালো দাবি তুলছিল বিরোধীরা। সকলকে বিনামূল্য ভ্যাকসিনের দাবিতে আওয়াজ উঠছিল একাধিক গণসংগঠনের তরফেও। দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলাও। এমতাবস্থায় কার্যত চাপের মুখে পড়েই ভ্যাকসিন নীতিতে বদল আনতে বাধ্য হয়েছে মোদি সরকার। এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের।
সুফল মেলেনি গ্লোবাল টেন্ডারেও
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় ভাবে টিকাকরণের জন্য গত ১ জুন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে টিকাকরণে বিকেন্দ্রীকরণের কারণে এর আগেই সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখেও পড়ে কেন্দ্র। এমনকী টিকার ঘাটতি মেটাতে রাজ্যগুলির তরফে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হলেও তাতে বিশেষ সুবিধা হয়নি। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় ভাবে টিকাকরণের জন্য কেন্দ্রকে চিঠি দিতে থাকে একের পর এক রাজ্য। গলা তোলেন কেজরিওয়াল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
টিকা তৈরিতে কত বাজেট বরাদ্দ কেন্দ্রের ?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ৯৫ কোটির উপর প্রাপ্তবয়ষ্ক নাগরিক রয়েছে যারা টিকা নেওয়ার যোগ্য। এদিকে এখনও পর্যন্ত মাত্র ২২ কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন। আর এঁদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ টিকার দুটি ডোজই পেয়েছেন। এদিকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ২০০ কোটি টিকা ডোজ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এর জন্য কেন্দ্রের মোট খরচ হবে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। যদিও চলতি বাজেটে এই খাতে ৩৫ হাজার কোটি বরাদ্দ করা হয়েছিল। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি খরচ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।