বন্দরের চিকিৎসকদের কাজ কঠিন বলে মানছেন বন্দরের আধিকারিকরা। প্রথমত গত জানুয়ারি মাস থেকে বন্দরে বিভিন্ন দেশের বন্দর থেকে আসা নাবিক ও ক্রু'দের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হয়েছে তাদের। দ্বিতীয়ত, কলকাতা ও হুলদিয়া বন্দরের কর্মী ও সি আই এস এফ জওয়ান সহ ১০৪ জন আক্রান্ত হন। তাদের চিকিৎসা করতে হয়েছে। এছাড়া নানা বয়সের রোগী যারা উপসর্গ নিয়ে আসা যাওয়া করেই চলেছেন কলকাতা বন্দর হাসপাতালে। চিফ মেডিক্যাল অফিসার হওয়ার কারণে তাকে সবটাই দেখতে হয়। যদিও সব কিছুর পরিপ্রেক্ষিতেই ডাক্তার বাবুর উত্তর, "ডাক্তার হয়েছি তো সেই কারণেই। রোগীদের সুস্থ করে বাড়ি ফেরাব বলে।" কোভিড চিকিৎসায় তার নেতৃত্বে হাসপাতাল সাফল্য পেয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮০ জনকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখনও ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদেরকেও সুস্থ করে তিনি বাড়ি পাঠানোর জন্য আপ্রাণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। সপ্তাহে তাকে যেতে হয় সাগরে। এই আবহাওয়ায় কখনও বৃষ্টি, কখনও প্রচন্ড গরমের মধ্যেই তাকে যেতে হয় ক্রু ও নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে।
advertisement
ডাক্তার খেলকার জানাচ্ছেন, "অভ্যাস বদল করতে হয়েছে আমাকে। এখন পিপিই পড়ে রোগী দেখতে হয়। চাইলেই সেই পিপিই খুলে ফেলা যায়না। এর সাথে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। শুধু আমার একার নয় আমার টিম যেন ঠিক থাকে সেটা দেখা আমার কাজ।" হাসি মুখে সেই কাজ করে চলেছেন বন্দরের সিএমও সাহেব। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই লড়তে শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। তবে স্বীকার করে নিচ্ছেন এখন মানসিক চাপ বাড়ছে। যদিও সেই চাপ নিজেকেই কমাতে হবে বলে মত তাদের। কাজের ফাঁকে সায়েন্স ম্যাগাজিনে চোখ, হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজ সামলানো সবটাই তিনি নিরন্তর করে চলেছেন। তবে তার বক্তব্য, "একা বলে কিছু নেই। আমরা এখানে সবাই এক। সবাই লড়াই করছি বলেই হাসিমুখে রোগীরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।" আপাতত তার একটাই লক্ষ্য সবাইকে সুস্থ করা। তবে তিনি চান না চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট কোনও দিন থাকুক। রোগী আর চিকিৎসক সম্পর্ক অটুট থাকুক। বছরের প্রতিটা দিন তাদের হোক। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, "আমাদের লড়াই রোগের সাথে, রোগীর সাথে নয়।"
Abir Ghosal