লকডাউন এর প্রথম ৫০ দিনে অনলাইনের মাধ্যমে দেড় লক্ষ ক্লাস নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকারা। শুধু তাই নয় এই অনলাইনে ক্লাস এর মাধ্যমে কুড়ি লক্ষ পড়ুয়া রাজ্যব্যাপী অংশগ্রহণ করেছে। যা অনলাইনে ক্লাসের নিরিখে এ রাজ্য নয় অন্যান্য অনেক রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে পিছনে ফেলে দেবে। রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস শুরু হবার প্রথম দিন থেকেই অধ্যাপকদের জানিয়েছিল অনলাইনে কে কোন বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছেন তা আপলোড করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে। এর পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা কোন কোন ক্লাসে এবং কোন অধ্যাপকদের ক্লাসে অংশগ্রহণ করছে তাও জানাতে বলা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে।সেই তথ্যের নিরিখেই এমনই নজিরবিহীন রিপোর্ট বেরিয়ে এল।
advertisement
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক শুভাশীষ দত্ত জানিয়েছেন " এটা খুব উৎসাহ কর এবং আশাব্যাঞ্জক ব্যাপার। আগামী দিনে অনলাইনে ক্লাস করানোর ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের এবং অধ্যাপক অধ্যাপিকা দের কাছে আরো বেশি করে উৎসাহ দেবে।" উপাচার্য সৈকত মৈত্র জানিয়েছেন " বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রথম থেকেই অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা চলছিল। এই পরিসংখ্যান আগামী দিনে অনলাইনে ক্লাসের পরিধিকে আরো বাড়াতে সাহায্য করবে।"
লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউজিসির পাশাপাশি রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকেও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলা হচ্ছিল। রাজ্যে লকডাউন শুরুর পর থেকে বেশিরভাগ বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে কলেজগুলো অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছিল। কিন্তু এবার দেশের অনেক নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পিছনে ফেলে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেল মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যে লকডাউন এর সময়সীমা পেরিয়ে গেছে ৫০ দিন। আর সেই ৫০ দিনে প্রায় দেড় লক্ষ ক্লাস অনলাইনে নিয়েছে রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি-বেসরকারি কলেজ গুলির প্রায় চার হাজার অধ্যাপক অধ্যাপিকা। এই মুহূর্তে ম্যাকাউট এর অধীনে ১৯৭টি সরকারি-বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে এই দেড়লক্ষ ক্লাসে কুড়ি লক্ষ পড়ুয়া রাজ্যব্যাপী অংশগ্রহণ করেছে।
এবার এই প্রশ্ন আসে এই তথ্য কিভাবে সংগ্রহ করল রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়?বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন অনলাইন ক্লাস শুরু হবার প্রথম দিন থেকেই কোন অধ্যাপক কোন বিষয় ক্লাস নিচ্ছেন তার তথ্য আপলোড করার কথা বলা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে। শুধু তাই নয় ছাত্র-ছাত্রীদের বলা হয়েছিল কোন অধ্যাপকের ক্লাসে তারা অংশগ্রহণ করছে সে বিষয়ে তথ্য আপলোড করতে।তার নিরিখেই এই ডেটা বা তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ারা এই অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যে আগামী দিনে এই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই যেখানে অনলাইনে ক্লাস এর উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিসংখ্যান রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়াদের অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে। তবে গ্রামাঞ্চলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনেক পড়ুয়াই রয়েছেন যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ খুব একটা ভালো নয়। তবে তাদেরও এই পরিসংখ্যান অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণে উৎসাহ দেবে বলেই মত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।