দীপাবলির সময় থেকেই শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বায়ু দূষণের মাত্রা। পরিসংখ্যান বলছে দূষণের গ্রাফ চড়চড় করে বাড়তে শুরু করে শীতকাল এসে পড়লেই। বাঙালির নতুন বছর আসা পর্যন্ত সেই দূষণের রেশ বজায় থাকে। মাঝ এপ্রিল পর্যন্ত চলতে থাকা সেই দূষণ একেবারে কমে এল গত পাঁচ দিনের হিসেবে।
বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধুলিকণা'র মাত্রা কমতে শুরু করায় খুশি পরিবেশবিদরা। শহরের দূষণ যেখানে সবচেয়ে বেশি থাকে, সেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে শুক্রবার বায়ুদূষণের মাত্রা গড় হিসেবে ছিল ১০২ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার ছিল ৯১ আর রবিবার তা কমে দাঁড়ায় ৮০ মাইক্রোগ্রাম। ঠিক পাশেই ফোর্ট উইলিয়াম। সেখানে শুক্রবার ছিল ১৪৫ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার কমে দাঁড়ায় ১৩১ মাইক্রোগ্রাম আর রবিবার এক ধাক্কায় তা কমে আসে মাত্র ৫৫ মাইক্রোগ্রামে।
advertisement
দক্ষিণের অন্যতম দূষিত জায়গার তকমা পাওয়া রবীন্দ্র সরোবর। সেখানে শুক্রবার দূষণ ছিল ১১৭ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার তা হয়ে যায় ৯৪ মাইক্রোগ্রাম আর রবিবার তা কমে হয় ৫৭ মাইক্রোগ্রাম। দক্ষিণের অন্যতম দূষিত জায়গা বালিগঞ্জ। শুক্রবার সেখানে দূষণ ছিল ১২০ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার তা হয় ৯৮ মাইক্রোগ্রাম আর রবিবার তা কমে হয় ৫৯ মাইক্রোগ্রাম। দক্ষিণের অন্যতম দূষিত জায়গা যাদবপুরের দূষণের চেহারা শুক্রবার ছিল ১২৩ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার তা হয়ে যায় ৯৯ মাইক্রোগ্রাম আর রবিবার তা কমে হয় ৪৭ মাইক্রোগ্রামে।
সল্টলেক এলাকার দূষণ শুক্রবার ছিল ৮৮ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার তা বেড়ে হয়েছিল ৯৮ মাইক্রোগ্রাম আর রবিবার হল ৬৬ মাইক্রোগ্রাম। উত্তরের সবচেয়ে দূষিত এলাকা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। শুক্রবার সেখানে দূষণ ছিল ১২৩ মাইক্রোগ্রাম। শনিবার ছিল ১২৪ মাইক্রোগ্রাম আর রবিবার তা কমে হয় ৭০ মাইক্রোগ্রাম। সোমবার সকাল থেকেও গড় দূষণ মাত্রা কোথাও ৮০ মাইক্রোগ্রাম পেরোয়নি। ফলে করোনার জেরে ক্রমশ কমছে শহরের দূষণ চিত্র। কিন্তু এক ধাক্কায় দূষণ কমল কি করে? পরিবেশবিদ দের ব্যখ্যা রাস্তায় গাড়ি চলাচল ভীষণ রকম কমে গিয়েছে। রবিবার জনতা কার্ফু-র জন্য গাড়ি চলাচল করেনি। ফলে ডিজেল থেকে দূষণ ছড়ানোর কোনও আশঙ্কা নেই। অন্যদিকে রাস্তায় লোক বেরোচ্ছে কম। বেশিরভাগ অফিস হয়ে গিয়েছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম ৷ ফলে রাস্তার খাবারের দোকানের উনুন জ্বলছে কম। তা থেকেও দূষণ ছড়াচ্ছে কম।
এরই মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার কারণে দূষণ মাত্রা কমতে শুরু করে দিয়েছে।করোনার সংক্রমণের ভয়ে রাস্তায় লোক কম বেরোতেই সবুজ হল শহর। পরিবেশবিদদের বক্তব্য আগামী ৯ দিন শহর এই অক্সিজেন পেলে অনেক রোগ ঠেকানো সম্ভব হবে।
Abir Ghoshal