ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যায়। উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরের বাসিন্দা ৬২ বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে ভিআইপি রোডের চার্নক হাসপাতাল থেকে কোলকাতা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বৃদ্ধাকে দেখে তার শারীরিক উপসর্গ চিহ্নিত করে করোনা বলে সন্দেহ হওয়ায় তাকে সুপার স্পেশালিটি ব্লকে ভর্তি করার সুপারিশ করেন। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাপে ওই বৃদ্ধাকে ভর্তি করানো হয় মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে। তবে রাতের দিকে তার জ্বর, শ্বাসকষ্ট বেশি শুরু হওয়ায় তাকে স্থানান্তরিত করা হয় সুপার স্পেশালিটি ব্লকেই। সোমবার রাতে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। আতঙ্ক এতটাই গাঢ় ছিল যে, প্রিয়জনের দেহ নিতেও অস্বীকার করে পরিবার। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান যে, বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত ছিলেন। সেজন্য স্বাস্থ্য দফতর যেন মরদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে।
advertisement
জানা গিয়েছে শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ে এই বৃদ্ধাকে সম্প্রতি ভিআইপি রোডে চিনার পার্ক সংলগ্ন চার্ণক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, ওই বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস চলাকালীন বেশ কয়েকজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর রবিবার থেকে গোটা হাসপাতাল ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ওই বৃদ্ধাকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসা হয়।
মঙ্গলবার সকালে পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিই পড়ে হাসপাতাল কর্মীরা বৃদ্ধার দেহ মর্গে নিয়ে গেলে গোটা মেডিকেল কলেজ জুড়ে চূড়ান্ত ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগী,রোগীর আত্মীয়, চিকিৎসক, নার্স,স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মেডিকেল কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন,এই বৃদ্ধার লালা রস সোমবারই পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।মঙ্গলবার দুপুরে সেই রিপোর্টে জানা যায়,পজিটিভ অর্থাৎ মৃত বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত। এরপরই জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার কে তিনজন জুনিয়র ডাক্তার কে কোয়ারান্টিনে রাখা হয়। আর কারা কারা এই মৃত বৃদ্ধার সংস্পর্শে এসেছিলেন তাদেরকে চিহ্নিত করে কোয়ারান্টিন করা হবে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালে এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের পুরুষ এবং মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড। আগামী দুদিন ধরে এই দুটি ওয়ার্ড স্যানিটাইজ বা জীবাণুমুক্ত করা হবে।
AVIJIT CHANDA