সেই দিন কলেজের ছাত্র শুভজিত পাল থেকে আরম্ভ করে সবারই সন্দেহ হয়, খুব তাড়াহুড়ো কেন করছিলেন ওই যুগ্ম কমিশনার! ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন ওই আইএএস। এমনকী ছাত্র সংসদের এক ছাত্রকে মারধরও করেন দেবাঞ্জন। সেদিনও ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কারো মোবাইলে কোনও মেসেজ আসেনি। কলেজ ছাত্রী শ্রেয়া দাসের করোনা হয়েছিল ৯ মে। তাঁকেও দেবাঞ্জন ভ্যাকসিন দিয়ে দেন। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয়, তাঁকে-সহ মোট ৬ জন ছাত্রছাত্রীকে স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল ওই দিন। এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, কারও কারও পাঁচদিন ধরে ঘুম ঘুম পাচ্ছে, শরীরে কিছুটা ব্যথা রয়েছে।
advertisement
সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্ত শুরু হতেই জানা গিয়েছে, ওই ভ্যাকসিন আদতে করোনার কোনও ভ্যাকসিন নয়। nkacin 500mg নামে একটি অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন। এই ইনজেকশনের লেভেলের উপরে কোথাও কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড বা স্পুটনিক লিখে নকল লেবেল সেঁটে দিত দেবাঞ্জন। এই ইনজেকশন দিতে গিয়ে কারও কাছ থেকে টাকা নেয়নি দেবাঞ্জন। ওর ভুয়ো কর্পোরেশনের অফিসে ২০ জন চাকরি করতেন। তাঁদেরকে মাসে মোট তিন থেকে চার লক্ষ টাকা বেতন হিসেবে দিত। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, বিপুল পরিমাণে অর্থ প্রতি মাসে কোথা থেকে আসত দেবাঞ্জনের কাছে? ওই অর্থ ছাড়া অফিস ভাড়া থেকে আরম্ভ করে বিভিন্নভাবে দান ধ্যান-- মাস গেলে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ ছিল ওর। এ সবের উৎস নিয়ে তদন্তকারীদের মাথায় হাত পড়েছে। তবে দেবাঞ্জনের কাছের কর্মী সান্তনু মান্নার কথায়, প্রভাবশালীদের কাছেও দেবাঞ্জন মাস্ক-স্যানিটাইজার, পিপিই কিট পাঠাত। তাও আবার ম্যাটাডোর ভর্তি করে। সব কিছুই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পুলিশের দাবি, এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে!
