গত তিন মাস ধরে তিনি বাড়ি যান না। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও এক ছেলে। হাসপাতালে থেকে খানিকটা দূরে একটি গেস্টহাউসেই রয়েছেন এই চিকিৎসক। মাঝেমধ্যে বাড়ি যান কিন্তু দূর থেকেই বাবা-মার সঙ্গে কথা বলে চলে আসেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে করতে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
advertisement
বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক দিন ভর্তি থাকার পর সুস্থ হয়ে জুন মাসের শেষ দিকে আবার হাসপাতালে কাজে যোগ দেন। নিজে করোনাকে জয় করেছেন। আর তাই সুস্থ হয়েই অন্যান্য রোগীদের পরিষেবা দিতে পুরোদমে আবার করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমে গিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই চিকিৎসক রাজশ্রী রায় জানাচ্ছিলেন " এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রোগীদের চিকিৎসা করাটাই আমাদের একমাত্র কর্তব্য। ঠিকই আমি নিজে করোনা তে আক্রান্ত হয়ে ছিলাম। তারপর হাসপাতালের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই আমি আবার এই কাজেই যোগ দিয়েছি।"
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সরা। চিকিৎসকদের কুর্নিশ জানাতে বুধবার ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটি ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয় এ দিন বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স স্বাস্থ্যকর্মীদের শুভেচ্ছা জানাতে গেছেন পুলিশকর্মীরা। এমনকি চিকিৎসকরা বিভিন্ন সিগন্যালে দাঁড়ালে সেখানেও কলকাতা পুলিশের তরফে শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে। কলকাতা তথা রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন চিকিৎসকরাই-করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। রোগীদের সুস্থ করে ফিরিয়ে আনছেন এই চিকিৎসকরাই। তার মধ্যেই সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে করতে নিজেই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তবুও থেমে যাননি। সুস্থ হয়ে আবার করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করে আনতে বদ্ধপরিকর বেসরকারি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক ডাঃ রাজর্ষি রায়।
এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সল্টলেকের এই বেসরকারি হাসপাতাল হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার পরপরই দিনরাত এক করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন এই চিকিৎসক। এ প্রসঙ্গে ডাঃ রাজর্ষি রায় বলেন " এখনও পর্যন্ত করোনার কোন প্রতিষেধক বেরোয়নি। কিন্তু আমাদের লড়াই অত সহজে থামাতে পারবে না এই করোনা।" ডক্টরস ডে-তে ডাঃ রাজর্ষি রায়ের মতো বাকি চিকিৎসক, করোনা যোদ্ধাদের আমাদের কুর্নিশ ৷
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়