করোনাকালের সময় কয়েক বছরের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও তিনি কখনই ভেঙে পড়েননি। ওই সময় বাজারে প্রতিমার চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। ক্রেতারা পারিশ্রমিকের দামটাও দিতে চাইনি। কিন্তু কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি সবিতাদেবীকে হার মানাতে পারেনি। তাঁর মনোবল ও ইচ্ছেশক্তি যেমন তাঁকে মৃৎশিল্পী করে তুলেছে তেমনি আজও তিনি এই ব্যবসা জোরকদম করে চলেছেন। সবিতা দেবীর কথায়, তাঁর বয়স যখন ১৬ বছর তখন তাঁর বিবাহ হয় দুর্গাপুরের রঘুনাথপুরের বাসিন্দা শীতল গোস্বামীর সঙ্গে। সেই সময় শীতলবাবু ভিন রাজ্যে কাজ করে সংসার চালাতেন।
advertisement
আর্থিক অনটনের সংসার টানতে হিমসিম খেতে হত তাঁকে। তাই বিয়ের কয়েক বছর পরেই বাড়িতে প্রতিমা গড়ে অর্থ উপার্জনের পথ বেছে নেন শীতলবাবু। সবিতা দেবী প্রতিমা গড়ার কোনও কিছুই জানতেন না। তিনিও তাঁর ইচ্ছেশক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বামীর সঙ্গে মূর্তি ও প্রতিমা গড়ার কাজে করতে শুরু করেন। দু’জনে মিলে একসময় অল্প কিছু প্রতিমা গড়তেন। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে প্রতিমা তৈরীর সংখ্যা বাড়াতে থাকেন সবিতাদেবী। অনেক অনেক সরস্বতী, কালী, বিশ্বকর্মা ও লক্ষ্মী প্রতিমা তৈরি করতে থাকেন। ওই সমস্ত প্রতিমা পুজোর আগে নিজেই বেনাচিতি বাজারে নিয়ে এসে রাস্তার পাশে বিক্রি করেন সবিতাদেবী। লক্ষ্মী লাভের আশায় এবার লক্ষ্মী পূজোয় তিনি ছোটো বড় প্রায় ৪০০টি লক্ষ্মী প্রতিমা গড়েছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সেই প্রতিমা নিয়ে এসে গত দু’দিন ধরে বেনাচিতি বাজারের ট্রাঙ্ক রোড় যাওয়ার রাস্তার পাশে পশরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন। তিনি জানান, এই বছর ৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকার প্রতিমা তিনি বিক্রি করছেন। তবে কতটা মুনাফা লাভ হবে সেই নিয়েও তিনি দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাঁর দাবি, ভিন জেলা থেকে বহু মৃৎশিল্পী ও ব্যবসায়ী লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপুরের বাজারে হাজির হয়েছেন। বাজার কতটা ভাল হবে সেই নিয়েও রয়েছে সংশয়। তবে অনেক বেশি সংখ্যায় ঠাকুর তৈরি করায় লক্ষ্মী পুজোয় ভালই আয় করেন সবিতাদেবী।