স্টার্ট-আপের জন্য কতটা বিপজ্জনক এই পতন?
সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের পতন ইতিমধ্যেই এক বিশাল ঝুঁকির জন্ম দিয়েছে। যার ফলে স্টার্ট-আপগুলিও নিজেদের অর্থ তুলে নেওয়ার কথা ভাবনা-চিন্তা করতে শুরু করেছে। আসলে বন্ধ হওয়ার আগে এসভিবি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬-তম বড় ব্যাঙ্ক। ক্যালিফোর্নিয়া এবং ম্যাসাচুসেটসে এর মোট ১৭টি শাখা ছিল। ব্যাঙ্কের ২০৯ বিলিয়ন ডলার সম্পদ ছিল। আর এর আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭৫.৪ বিলিয়ন ডলার। তবে এখনও এটা স্পষ্ট নয় যে, বন্ধ হওয়ার সময় ব্যাঙ্কের কতটা পরিমাণ আমানত ২৫০০০০ ডলারের ইনস্যুরেন্স লিমিটের থেকে বেশি ছিল। অনুমান করা হয়ছিল যে, ব্যাঙ্কটি সিলিকন ভ্যালিতে অর্ধেকেরও বেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডেড স্টার্ট-আপের সঙ্গে কাজ করবে।
advertisement
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক কার্ডের ভিতরে কী থাকে? কখনও ভেবে দেখেছেন
এসভিবি-র পতনের পর স্টার্ট-আপ কমিউনিটির মধ্যে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। স্টার্ট-আপের প্রতিষ্ঠাতারা এখন নিজেদের তহবিল অ্যাক্সেস করা, বেতনের বাধ্যবাধকতা পূরণ করা এবং অপারেটিং এক্সপেন্সগুলি কভার করার বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত।
ওয়াই কম্বিনেটরের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও গ্যারি ট্যান সিএনবিসি টিভি 18-কে বলেছেন যে, এক হাজারটিরও বেশি ওয়াইসি কোম্পানি প্রভাবিত হয়েছে। এমনকী ওই কোম্পানিগুলি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
আরও পড়ুন: ৩১ মার্চের মধ্যে কাদের Pan-Aadhaar লিঙ্ক না করলেও চলবে? জেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন
এই পতনকে স্টার্ট-আপের জন্য ক্ষতিকর হিসেবেই দেখছেন গ্যারি। তিনি আরও বলেন যে, সরকার যদি শীঘ্রই কোনও একটি পরিকল্পনা নিয়ে না-আসে, তা-হলে এই স্টার্টআপগুলি টিকে থাকতে পারবে না। স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠাতারা নিজেদের আমানত অ্যাক্সেস করতে অক্ষম হওয়ায় ট্যান জানান যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমনকী গোটা বিশ্বে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ ঝুঁকির আওতায় এসে গিয়েছে। এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা, যা সমগ্র অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে।
ChatGPT-প্রস্তুতকারী স্টার্টআপ OpenAi-এর সিইও এবং স্টার্ট-আপ অ্যাক্সিলারেটর ওয়াইকম্বিনেটরের প্রাক্তন সভাপতি স্যাম অল্টম্যান একটি ট্যুইটে বলেছেন যে, বিনিয়োগকারীদের নিজেদের স্টার্ট-আপের জন্য জরুরি নগদ অফার করতে হবে, যা বেতন-সহ ভারসাম্য হ্রাস করতে পারে। তিনি আরও লিখেছেন যে, কোনও ডকুমেন্টেশন বা শর্ত দেওয়া চলবে না, শুধু টাকা পাঠাতে হবে।
ভারতেও কি এর প্রভাব পড়বে?
মার্কিন স্টার্ট-আপগুলির উপর যে-হেতু বিপদের খাঁড়া ঝুলছে, তাই ভারতীয় স্টার্ট-আপ কমিউনিটিতেও বেশ ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছে। ইন্ডিয়া অ্যাঞ্জেল নেটওয়ার্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পদ্মজা রূপারেল মনে করেন যে, পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকা সত্ত্বেও রেগুলেটররা অনেক সময় নিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, এসভিবি একটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও আশ্চর্যজনক ভাবে কেন রেগুলেটররা আগে থেকেই কাজ করেননি। পদ্মজা সম্প্রতি প্রাথমিক পর্যায়ের স্টার্ট-আপগুলির জন্য ১০০০ কোটি টাকার তহবিল চালু করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, এই মুহূর্তে ভারতীয় স্টার্ট-আপগুলিতে এসভিবি-র পতনের প্রভাব নির্ধারণ করা কঠিন। যাই-হোক, এর প্রভাব কমাতে সাহায্য করার জন্য বিনিয়োগকারীরা নিজেদের পোর্টফোলিও কোম্পানি এবং এলপি-র সঙ্গে কাজ করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ভারতীয় কোম্পানিগুলি এই পতনের জেরে প্রভাবিত হতে পারে। তবে ভারত-ভিত্তিক স্টার্ট-আপগুলিতে এই পতনের ব্যাপক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। পদ্মজা রূপারেলের মতে, এর প্রভাবে তাঁর কোম্পানিগুলো এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।